সমস্যা:
আমি মিনহাজ উদ্দিন, বয়স ২৮। আমি বিবিএ পাস করেছি কিন্তু এমবিএ করতে পারিনি বাইপোলার ডিজঅর্ডারের জন্য। আমি ২০১১ এবং ২০১৪তে হসপিটালে ছিলাম। বর্তমানে আমার সমস্যা হচ্ছে আমি মানুষের মাঝে চলতে পারি না, অস্বস্তি লাগে। মসজিদে মানুষের মধ্যে নামাজ পড়তে অস্বস্তি লাগে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির কোনো উপায় আছে কি? বর্তমানে আমি মেডিকেশনে আছি। আমার অগোছালো লেখার জন্য দুঃখিত।
মিনহাজ উদ্দিন, মহাখালি
পরামর্শ:
লেখাতো অগোছালো নয়, ভালোই হয়েছে। তবে, আরো কিছু বিষয় জানার ছিল। যেমন, তুমি এখন অন্য কিছু কর কিনা। কি কি ওষুধ খাও। তুমি কিংবা তোমার পরিবারের মানুষজন রোগটির বিষয়ে কতটুকু জানে!
সত্যি বলতে কি বাইপোলার ডিজঅর্ডার খানিকটা জটিল রোগ হলেও সঠিক চিকিৎসা এবং সঠিক তথ্য জানা থাকলে এই রোগ নিয়ে সম্পূর্ন ভালো থাকা যায়। সময় মতো সঠিক কাজটি করতে পারলে, পাশের মানুষটি পর্য়ন্ত এই রোগ বিষয়ে টের পায় না।
তুমি নিষ্চয়ই জান, বাইপোলারের দুটি দিক থাকে। একটি ম্যনিক, যখন অনেক কথা বলে, ঘুম-খাওয়া কমে যায়, ঘুরতে ইচ্ছে হয়, টাকা খরচ করতে ইচ্ছে হয়, নিজেকে অনেক বড় মনে হয় এবং আরো কিছু বিষয় হয়। অন্যদিকে থাকে বিষণ্নতা, যখন মন খারাপ থাকে, ভয় লাগে, কোনোকিছু করতে মন চায় না। তুমি মনে হয়, বর্তমানে বিষণ্নতার দিকে আছ। তোমার জন্য প্রথম কথা হচ্ছে, চিকিৎসা বাদ দিবে না। অবশ্যই চিকিৎসা চালিয়ে যাবে। বাইপোলারের প্রধান এবং একমাত্র চিকিৎসাই হচ্ছে ওষুধ। সুতুরাং যে যাই বলুক, ওষুধের বিষয়ে সজাগ থাকবে। বাইপোলারে ওষুধ মূলত: দুটি কাজ করে। ম্যনিক বা বিষণ্নতাকে কমায়, অন্যদিকে মুড বা সমস্যা যাতে না বাড়ে সেদিকেও কাজ করে।
কখন বিষণ্নতা চলে আসছে, কখন ম্যনিক অবস্থা চলে আসছে এসব ভালোভাবে খেয়াল রাখতে পারলে এই রোগের চিকিৎসা অনেকখানি সহজ হয়ে যায়। নিজে নিজে অনেক সময় এটা নাও বোঝা যেতে পারে। তাই, তোমার কাছের কোনো মানুষ যেমন; মা-বাবা কিংবা ভাইবোনকে এই রোগ সম্বন্ধে বিশেষ ভাবে বলে রাখতে হবে। দরকারে তাদেরকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবে সঠিকভাবে বিষয়গুলি বোঝে নিবার জন্য।
আশাকরি তুমি বুঝতে পেরেছ। দরকারে, যেকোনো সময় মনেরখবরের সাথে যোগাযোগ রাখবে। তোমার সমস্যা দূর হবে সেই কামনা করছি।
পরামর্শ দিচ্ছেন,
ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
দৃষ্টি আকর্ষণ- মনেরখবর.কম এর প্রশ্ন-উত্তর বিভাগে, মানসিক স্বাস্থ্য, যৌন স্বাস্থ্য, মাদকাসক্তি সহ মন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আপনার কোনো জানার থাকলে বা প্রশ্ন থাকলে বা বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দরকার হলে question@www.monerkhabor.com এই ইমেলের মাধ্যমে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন।