প্রায় সবসময় একাই থাকতে হয়

সমস্যা: আমি উমর ফারুক। আমার বয়স ২০ বছর। আমার মধ্যে হতাশা কাজ করে অনেক। পরিবারে লোকজন কম, এই জন্য প্রায় সবসময় একাই থাকতে হয়। শুধু ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা হয় যে কী করবো, কী না করবো। বন্ধুবান্ধবও অনেক কম আছে। জীবনটা অনেক কঠিন লাগে। বিয়ে করতে মন চায়, কিন্তু এখনও ছাত্র, এইজন্য করতে পারি না। খুবই হতাশ লাগে। লেখাপড়ায়ও একদম মন নাই। ১ ঘন্টার বেশি বই পড়তে পারি না। মনের মধ্যে ভয় অনেক। এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে কী কী করতে হবে, একটু দয়া করে পরামর্শ দিলে ভালো হতো।
পরামর্শ: ধন্যবাদ আপনাকে আপনার প্রশ্নের জন্য।
আপনার বক্তব্য থেকে এটা অনুমান করা যায় আপনি নিজেকে একা মনে করেন, বন্ধুবান্ধব তৈরি করা আপনার জন্য একটু কঠিন। এই পরিস্থিতিতে জীবন ও জগৎ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা মনে আসা, নিজেকে অসহায় ভাবা এবং এইসব থেকে হতাশা ও দুশ্চিন্তায় আক্রান্ত হওয়া খুবই সম্ভব। আর হতাশা বা দুশ্চিন্তা বেশি থাকলে মন দিয়ে কোনো কাজ করা কঠিন হয়ে যায়।
এখন আপনাকে এই সমস্যার মূল জায়গাতেই পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সেজন্য সবচেয়ে ভালো হয়, আপনি যদি নিকটস্থ কারো কাছ থেকে সাইকোথেরাপি নেন। এক্ষেত্রে যিনি সাইকোথেরাপি দিবেন, তিনি আপনার সাথে বিস্তারিত কথা বলে, আপনার জীবনযাপনের ধরন, জীবনের সমস্যাবলি, আপনার ব্যক্তিত্বের ধরন অনুসারে কি করতে হবে তা ঠিক করে দিবেন।
আর আপাতত আপনি একাকিত্ব ঘুচানোর জন্য সামাজিক মেলামেশা বৃদ্ধি করতে পারেন, অথবা, যাদের সাথে মিশতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তাদের সাথে আরো ঘনিষ্ঠতা বাড়ান, সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বাড়ান। এগুলোতে অভ্যস্ত হতে বা সফল হতে সময় লাগবে, বিভিন্ন অসুবিধাও আসতে পারে। সেসব থেকে উত্তরণ পেতে নিজের চেষ্টাই প্রধান অস্ত্র। তবে সাইকোথেরাপি এক্ষেত্রে আপনার জন্য বড় একটা সহায়ক মাধ্যম হতে পারে। ধন্যবাদ।

Previous articleবিকেএসপিতে ডোপিং বিরোধী শিক্ষামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত
Next articleনিয়মভঙ্গকারী শিশুরাই কেন পরবর্তী জীবনে ধনী হয়
ডা. পঞ্চানন আচার্য্য
ডা. পঞ্চানন আচার্য্য। স্থায়ী ঠিকানা চট্টগ্রাম। তবে, কলেজ শিক্ষক মায়ের চাকুরিসূত্রে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কেটেছে শৈশব। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবং উচ্চ-মাধ্যমিক চট্টগ্রাম কলেজ থেকে। সিলেট এম. এ. জি. ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস পাসের পর সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেন। মেডিক্যালে পড়ার সময় থেকেই মনোরোগ নিয়ে পড়ার প্রতি আগ্রহ। তাই, ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্ধারিত সময়ের চাকুরি শেষে ভর্তি হন মনোরোগবিদ্যায় এম.ডি(রেসিডেন্সি) কোর্সে। বর্তমানে তিনি একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। বংশপরম্পরায় প্রাপ্ত শিক্ষকতার ধারা বজায় রেখে চিকিৎসক ও শিক্ষক হওয়াটাই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। বই, সঙ্গীত আর লেখালেখিতেই কাটে অবসর সময়ের বেশির ভাগ। স্বপ্ন দেখেন - মেধা ও মননশীলতার চর্চায় অগ্রগামী একটা বাংলাদেশের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here