১৯৫৭ সালে পাবনার তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ হোসেন গাঙ্গুলী শহরের শীতলাই হাউসের জমিদার বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত করেন পাবনা মানসিক হাসপাতাল। ১৯৫৯ সালে সেটি পদ্মা নদীর তীরে হেমায়েতপুরে সুবিশাল পরিসরে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই ৮১.২৫ একর জমির উপর চলছে দেশের প্রথম এবং সর্ববৃহৎ এই মানসিক হাসপাতালটির কার্যক্রম। যেখানে অন্তবিভাগে ৫০০ শয্যার পাশাপাশি বর্হিবিভাগ থেকে প্রতিদিন সেবা নিচ্ছেন অসংখ্য রোগী।
তবে এখানে স্বাস্থ্য সেবা শুধু খাবার আর ওষুধের মধ্যই সীমাবদ্ধ নয়। এই হাসপাতালের অন্তবিভাগে ১৮ টি ওয়ার্ডের ৫০০ শয্যার রোগীদের জন্য খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ আর দৈনন্দিন বিনোদনের জন্য গান শোনা ও টেলিভিশন দেখারও ব্যবস্থা রয়েছ।
পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তন্ময় প্রকাশ বিশ্বাস জানান, এই হাসপাতালে বৃত্তি ও বিনোদনমূলক চিকিৎসা বিভাগ রয়েছে। শরীরচর্চা, প্রশিক্ষণ, ইনডোর-আউটডোর খেলাধুলা, সঙ্গীত, বিনোদনমূলক সিনেমা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখা বা এতে অংশ নেওয়া বৃত্তি ও বিনোদনমূলক চিকিৎসার মধ্যে পড়ে।
হাসপাতালের সহকারী রেজিস্টার ডা. ওয়ালিউল হাসনাত সজীব জানান, রোগীদের জন্য নিয়মিত শরীর চর্চা ও খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। মহিলা রোগীদের জন্য রয়েছে খেলার ঘর। যেখানে ক্যারাম ও লুডু খেলার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও পুরুষ রোগীদের জন্য বিশেষ দিবসে খেলাধুলার বিশেষ আয়োজন করা হয়।
রোগীদের প্রতিটি কক্ষে সাউন্ড সিস্টেম রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা গান শুনতে পারেন। এছাড়া টেলিভিশনের রোগীরা পছন্দমত অনুষ্ঠান দেখতে পারেন বলে জানান তিনি।
রোগীদের জন্য এই হাসপাতালে একটি অডিটোরিয়ামও রয়েছে। যেখানে বিভিন্ন সময়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
খেলাধুলা ও বিনোদনের পাশাপাশি এই হাসপাতালের একটি বিশেষ দিক হল দরিদ্র রোগীদের পুর্নবাসনের লক্ষ্যে এখানে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। যেখানে রোগীদেরকে দর্জি কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
পাবনা মানসিক হাসপাতালে রোগীদের উন্নয়নে খেলাধুলা, বিনোদন ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আরো বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।