সমস্যা: আমার নাম সোমা। আমি অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী। আমি নিজেকে উপস্থাপন করতে পারি না। এমন অনেক বিষয় আছে, যেটা আমি খুব ভালোভাবে জানি কিন্তু কারো সামনে গেলে সেটা ঠিকভাবে গুছিয়ে বলতে পারি না। লেখাপড়ার ক্ষেত্রে শিক্ষক প্রশ্ন করলে আমার বুক ধড়ফড় করা শুরু হয়ে যায়, মনে হয় আমার ওপর আমার নিয়ন্ত্রণ নেই। কী বলছি সেটাও আমার নিয়ন্ত্রণে থাকে না। পরিস্থিতি পার হয়ে যাওয়ার পর আবার ঠিক হয়ে যায়। মঞ্চে উঠলেও একই অবস্থা হয়। এসব কারণে সব সময় আমি নিজেকে গুটিয়ে রাখি। কীভাবে আমি আমার সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারব জানালে উপকৃত হব।
পরামর্শ: আপনার এই সমস্যাটিকে আমরা বলি সোশ্যাল ফোবিয়া। এটা সাধারণত যারা একা একা থাকে, বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা কম করে, চুপচাপ থাকে তাদের মধ্যে বেশি হয়ে থাকে। যখন সে ওই পরিবেশ-পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে যায়, যেমন- কোনো শিক্ষক পড়া ধরলে, কোনো অনষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গেলে তখন তা র বুক ধড়ফড় করে, মুখ শুকিয়ে যায়, কী বলবে বলতে পারে না, কথা আটকে যায়। এটাই হলো সোশ্যাল ফোবিয়া। এটা অনেকের ছোটবেলা থেকেও হতে পারে। কিন্তু প্রথম দিকে সেটা বুঝতে পারে না। পরে খন কলেজে, ইউনিভার্সিটিতে পড়ে তখন প্রেজেন্টেশন দিতে হয়, কথা বলতে হয়, গ্রুপ ডিসকাশন করতে হয়, তখন সে তার নিজের সমস্যাটা বুঝতে পারে। কিন্তু শুরুটা হয়েছে অনেক আগে থেকে। চিকিৎসা করলে এটা ভালো হয়। এর চিকিৎসা দুই ধরনের- একটি হলো সাইকোলজিক্যাল আর একটি হলো ফার্মালজিক্যাল। ফার্মালজিক্যাল চিকিৎসায় শুধু এনজিওলাইটিক ওষুধ দেয়া হয়। পাশাপাশি বিহেভিয়ার থেরাপি দেয়া হয়। বিহেভিয়ার থেরাপিটা হলো কোন পরিবেশে হচ্ছে, যেমন নতুন পরিবেশ- ৫-৭ জন লোক মিলিত হচ্ছে, সেখানে কথা বলতে হবে। কিংবা কাউকে বোঝাতে বিষয় নিয়ে আলোচনা করলেন কিংবা কয়েকজন মিলে গ্রুপ ডিসকাশন করলেন, আলাপ-আলোচনা করলেন- এভাবে আস্তে আস্তে আপনার যে জড়তা বা ভয় সেটা কাটাতে হবে। কিন্তু এটা একদিনে সম্ভব নয়। এটা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে। তবে চেষ্টা করলে ভালো হওয়া যাবে।