আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সেসবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন ‘প্রতিদিনের চিঠি’ বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন।
চিঠিঃ আমার ভাইয়ের বয়স ১৮। সে ইদানীং খুব অশান্তি করছে ঘরে,একটা না একটা জিনিস চেয়ে বসবে,সেটা যত দামী হোক না কেন, তাকে কিনে দিতে হবে, নাহলে বলতেছে, ফাসি দিতে চাচ্ছে, ব্লেড দিয়ে হাত কেটে রক্ত বের করে, গালিগালাজ করে, কোনো রকম কিছুই বলে তাকে বুঝানো যায় না।
আর ছোট থেকে এক রোখা ছিলো,এমন করতো,কিন্তু এখন সীমার বাইরে করে, ২৪ ঘন্টার হয়তো ৪/৫ ঘন্টা সে ঘুমায় আর সবসময় মোবাইল এ গেইম খেলে আর ইমোশনাল গল্প শুনে,কারো রাগারাগিতে সে ভয় পায়না।
এটার কি কোনো ট্রিটমেন্ট আছে,ওর আচরণ মারাত্মক রূপ নিচ্ছে। ফ্যামিলির বাকী লোকেরা খুব কান্নাকাটি করতেছে, ওর আচরণে।
পরামর্শঃ ধন্যবাদ প্রশ্নটি করার জন্য। এটা অবশই একটা ডিভাইস এডিকশন বা মোবাইল এডিকশন। আমরা এটাকে বলি আচরণগত এডিকশন। এই এডিকশনের অর্থই হলো যে সে শুধু এই কাজের মধ্যে মনোযোগী থাকবে। বাইরের কোন কাজের ক্ষেত্রে মনোযোগী হতে পারবেনা। এবং এখান থেকে যখনি সে দূরে থাকবে, সে আস্তে আস্তে মেজাজ খারাপ করবে, মনোযোগ ধরে রাখতে পারবে না, বিরক্ত হবে, ঘুমের সমস্যা হবে, খাওয়ার সমস্যা হবে। এটা এখনি কন্ট্রোল করার সময়। এই ডিভাইস এডিকশন এখনি কন্ট্রোল না করলে পরবর্তিতে কন্ত্রোল করা সহজ হবেনা, আরো অনেক বেশি কঠিন হবে। সেক্ষেত্রে কাছাকাছি যদি কোন মানসিক ডাক্তার থাকে তাহলে তাকে সরাসরি দেখাতে হবে। এ অবস্থায় যদি চলতে থাকে তাহলে এটি মারাত্নক রূপ নিতে পারে। তখন দেখা যাবে যে সে সব কিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে নিবে, খাওয়া বন্ধ করে দিবে, আত্নহত্যার মত বিষয় গুলো সামনে চলে আসবে। সতরাং দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব একজন মানসিক ডাক্তারের সাথে দেখা করুন।
ঘুম, খাওয়া কোনকিছুতেই তার কিন্তু কোন কন্ট্রোল নেই। এটা এক দিনে হয় নাই। বিকল্প আনন্দ হিসেবে ও যা করত সেগুলাতে তার মনোযোগ আছে কি না সেটাও একটু চিন্তা করে দেখতে পারেন। আর এ সব মিলিয়ে তখন তার চিকিৎসা হবে।
দ্রুত ব্যবস্থা করা, কোন অবস্থায় আছে সেটা বুঝা, ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া, চিকিৎসার জন্য রাজি করানো এবং এই অভ্যাস বাদ দিয়ে আগের মজার কি কি অভ্যাস সে করতো সেগুলাতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। ধন্যবাদ।
পরামর্শ দিয়েছেন:
প্রফেসর ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
অধ্যাপক – মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
সেকশন মেম্বার – মাস মিডিয়া এন্ড মেন্টাল হেলথ সেকশন অব ‘ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন’।
কোঅর্ডিনেটর – সাইকিয়াট্রিক সেক্স ক্লিনিক (পিএসসি), মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
সাবেক মেন্টাল স্কিল কনসাল্টেন্ট – বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রিকেট টিম।
সম্পাদক – মনের খবর।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে