একজন শিশু যার শারীরিক বিকাশে নানা ধরণের জটিলতা রয়েছে এমন একজন শিশুর বাবা মা হিসেবে আমি ‘লউরার গল্প’ দ্বারা খানিকটা নড়েচড়ে উঠলাম। লউরা হচ্ছে সেই মা যার ১০ বছরের ছেলে বাঁচতে চায় না, সে মনে করে তাকে সাহায্য করার মত কেউ নেই। লউরা প্রতিদিন তার ছেলেকে বুঝায় বেঁচে থাকার মূল্য অনেক বেশি, জীবনের মূল্য অনেক বেশি। একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি বিভিন্ন ধরণের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে যাচ্ছি।
কেন আমরা শিশু কিশোরদের একটি প্রমাণ ভিত্তিক এবং ন্যায়সঙ্গত মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে ব্যর্থ হই? আমরা শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং পরামর্শ দাতাদের আকৃষ্ট করি না অথবা নিয়োগ দেই না। আমরা শুধুমাত্র বহুমুখী এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়ার পর বহুদলীয় সদস্যদের নিয়োগ দেই। এই দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়ার কারণ তাদের কোন না কোন দিক দিয়ে ব্যর্থ ঘোষণা করা আর যদি কেউ এই দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়াতে টিকে যায় তবে তাকে সঠিকভাবে উচ্চপদ দেওয়া হয় না। যখন তাদের দলের অন্য সদস্যদের সাথে ভাল সম্পর্কের তৈরি হয় এবং শিশুদের সাথে এবং তাদের পরিবারের সাথে ভাল সম্পর্ক হয়ে উঠে, তাদের বিশ্বাস অর্জন করে নেয় তখন ও তাদের সঠিক পদ দেওয়া হয় না।
আমরা একজন প্রশিক্ষিত প্রশাসনিক মানসিক স্বাস্থ্য সেবা কর্মীর ভূমিকা মূল্যায়ন করতে পারি না। প্রায়ই দেখা সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের বাবা মায়ের জন্য এই কর্মীরাই একমাত্র ভরসার ব্যক্তি হয়ে উঠে। সত্য কথা হচ্ছে আমাদের সকল মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত হাসপাতাল সুবিধা বা বিশেষজ্ঞ সুবিধা কোনটাই নেই।
একজন বাবা মা হিসেবে আমি কোন সাহায্য করতে পারি না কিন্তু যদি এমন কোন সেবা থাকত যা লওরার ছেলেকে সাহায্য করতে পারবে। স্কুল এইজ ডিজেবিলিটি টিম তাকে সাহায্য করতে পারে অথবা কমিউনিটি স্পিচ এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব এন্ড অকুপেশনাল থেরাপি সার্ভিস এর সেবা পেতে পারে। অথবা ন্যাশনাল এডুকেশনাল সাইকোলজিকাল সার্ভিসের সেবা পেতে পারে।
এমনটা কি হতে পারে যে তাকে সাহায্য করার জন্য বিশেষজ্ঞদের একটি দল থাকতে পারে যারা শারীরিক উন্নয়নের জটিলতা নিয়ে কাজ করবে। যদি সে কোন বিশেষ সেবা পেতে পারে।
আমরা আমাদের শিশুদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করতে পারি না। যাদের শারীরিক বিকাশে জটিলতা আছে তাদের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা নেই। আমরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা প্রদানে ব্যর্থ। আর এই ব্যর্থতা তাদের মধ্যে আরও বড় ধরণের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যার সৃষ্টি করে। এবং তাদের শারীরিক বিকাশে আরও বড় ধরণের জটিলতা সৃষ্টি করে।
আমাদের শিশুরাই আগামী দিনের প্রাপ্তবয়স্ক। আমাদের জন্য ভাল সেটাই হবে যদি আমরা এখনই তাদের সাহায্য করি, তাদের যে কোন সমস্যায় তাদের পাশে থাকি। তা না হলে ভবিষ্যতে আমাদের ভুক্তভোগী হতে হবে।
তথ্যসূত্র-
(https://www.irishtimes.com/opinion/letters/mental-health-services-for-children-1.3136760)
কাজী কামরুন নাহার, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম