জাপানে আত্মহত্যার হার আরও বেড়েছে!

আত্মহত্যা জাপানে একটি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। গত বছর জাপানে ২৫০০০ এর অধিক মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। সম্প্রতি এই অবস্থার আরো অবনতি ঘটছে। তরুণ থেকে শুরু করে বয়স্করা পর্যন্ত নিজের হাতে হত্যা করছে নিজেকে। কেন আত্মহত্যার এই প্রবণতা ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের মধ্যে? টোকিওর টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিশেষজ্ঞ Wataru Nishida এর কারণ হিসেবে বলেন,”বিচ্ছিন্নতা এবং মানসিক হতাশার ফলে লোকজন আত্মহত্যার দিকে ঝুকে পড়ছে।” তিনি আরো বলেন যে এখন অধিকাংশ বৃদ্ধ ব্যক্তিরা চার দেয়ালের ভিতর কেবল বই পড়েই কাটায়। কাজ হিসেবে এদের কিছুই থাকে না। সন্তানরা তাদের নিজ নিজ কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকে। ফলে তারা প্রতিনিয়ত অবহেলিত হয়ে থাকেন। অনেকে আবার আত্মহত্যাকে একটি সম্মানজনক কাজ মনে করে থাকে। Mr. Nishida বলেন,”জাপানে খ্রীস্টধর্মের অনুশীলনের প্রচলন কম বলে কেউ আত্মহত্যাকে পাপ হিসেবে মনে করে না। তাই দায়িত্বমুক্তির একটি পথ হিসেবে আত্মহত্যা করে থাকে।” জাপানের সেচ্ছাসেবক Ken Joseph এবিষয়ে একমত প্রকাশ করে তার ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন,”যেসকল মানুষ আর্থিক সংকটে ভোগে তারা একসময় আত্মহত্যার পথকে বেছে নেয়।”
তার মতে জাপানের লাইফ ইন্সিওরেন্সগুলোর তাদের ইন্সিওরেন্সে আত্মহত্যার ব্যাপারে আরো কঠোর হওয়া উচিৎ। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন জাপানে যে পরিমাণ আত্মহত্যার ঘটনার কথা প্রকাশিত হয় বাস্তব সংখ্যাটা তার চেয়ে অনেক বেশি। তাদের মতে, এই আত্মহত্যার অন্যতম কারণ হলো আর্থিক চাপ। এই আর্থিক ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে অনেক তরুণ আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। কেননা আত্মহত্যার ঝুকিতে রয়েছে জাপানের তরুণেরাও। প্রাপ্ত প্রমাণগুলোতে দেখা যায়, আত্মহত্যাকারী এ তরুণরা হতাশায় ভূগতে থাকে দীর্ঘদিন ধরে এবং তারা কারো কাছে সাহায্য লাভ করা তো দূরের কথা সাহায্য চাইতেও পারে না। এই সমস্যা প্রথম বাড়তে শুরু করে ১৯৯৮ সালে এশিয়ার আর্থিক সংকট যখন প্রথম শুরু হয়। এরপর যখন ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপি আর্থিক সংকট আবার শুরু হয় এই সমস্যা তখন পুনরায় বাড়তে থাকে। একসময় জাপানের লোকেরা আজীবন চাকুরীক্ষেত্রে নিরাপত্তা ভোগ করতো। কিন্তু বর্তমানে অনেক বয়স্করা চাকুরীক্ষেত্রে নিরাপত্তা ভোগ করলেও ৪০ ভাগ তরুণ স্থায়ী চাকুরীর অভাবে ভুগছেন।  Mr. Nishida আরো বলেন যে তরুণরা তাদের রাগ ও অভিমান প্রকাশ করার কোনো উপায় পায় না। অনেকে তাদের রাগ ও অভিমান আত্মহত্যা দ্বারা প্রকাশ করে।
তথ্যসুত্র:বিবিসি
http://www.bbc.com/news/world-33362387
আবদুল্লাহ আল মামুন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেখবর.কম

Previous articleমূলত আমি এইসব তিক্ত অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়েই পৃথিবীর কদর্যতাকে জেনেছি
Next articleকখন মানসিক রোগের ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here