অতিবৃষ্টি, প্লাবন, প্রবল ঘূর্ণিঝড়, এ’সব প্রাকৃতিক বিপর্যয় তো আছেই৷ এবং তাদের প্রভাব শুধু মানুষের বাসস্থানের উপরেই পড়বে না, মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও পড়বে৷ অস্ট্রেলিয়ায় গবেষকরা সেই সিদ্ধান্তেই পৌঁছেছেন৷
রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রেন অ্যান্ড মাইন্ড ইনস্টিটিউট৷ সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে গবেষকরা দেখেছেন, জলবায়ু সংক্রান্ত চরম ঘটনাবলি জনস্বাস্থ্যের পক্ষে আন্তরিক ঝুঁকি সৃষ্টি করে, মানসিক স্বাস্থ্যও তার মধ্যে পড়ে৷ অপরদিকে আবার তা থেকে অর্থনীতি এবং বৃহত্তর সমাজের ক্ষতিও কম নয়৷
বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়নের ফল অস্ট্রেলিয়া মহাদেশেও দেখা দিয়েছে৷ সাম্প্রতিক কয়েক বছরে অস্ট্রেলিয়া এক চরম খরার প্রকোপে পড়েছে, অস্ট্রেলীয়রা যার নাম দিয়েছে ‘‘দ্য বিগ ড্রাই”৷ সেই সঙ্গে রয়েছে অরণ্যে দাবানল এবং খরার উল্টো পিঠ হিসেবে বন্যা৷ সব মিলিয়ে এই সব ঘটনা বহু মানুষের জীবন নিয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি করেছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্ধিত এই সব প্রাকৃতিক ঘটনাবলি বহু জনপদ, খামার এবং ব্যবসায় ধ্বংস করেছে৷ কিন্তু তাদের মানসিক ফল যাচাই করার কোনো প্রচেষ্টা এযাবৎ করা হয়নি৷
অপরদিকে পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, চরম প্রাকৃতিক ঘটনাবলির পর অস্ট্রেলিয়ায় মাদকগ্রহণ এবং মদ্যপান বাড়ে, সহিংসতা, বিবাহ বিচ্ছেদ এবং আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ে৷ শহরতলি এবং গ্রামাঞ্চলে তার প্রভাব পড়ে আরো বেশি৷ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আগে দুশ্চিন্তা, এবং পরে দুঃস্বপ্ন থেকে শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ভোগে৷ যদিও গবেষণার বিষয়বস্তু হল অস্ট্রেলিয়া, গবেষকরা মন্তব্য করেছেন যে, দরিদ্র দেশগুলিতে বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার ক্ষমতা আরো কম হওয়ার ফলে সেখানে মানসিক স্বাস্থ্যগত ফলশ্রুতি আরো বেশি হবে৷
সব মিলিয়ে গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু-সংক্রান্ত ঘটনাবলি থেকে মানসিক স্বাস্থ্য জনিত সমস্যা – যেমন অবসাদ, দুঃশ্চিন্তা এমনকি আত্মহত্যার প্রবণতা – দেখা দেবার সম্ভাবনা প্রবল৷
সূত্রঃ ডয়চে ভেলে