গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি) আয়োজিত রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক ২য় জাতীয় বৈজ্ঞানিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ‘মনের যত্নে, সবাই একসাথে’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে গোল টেবিল বৈঠক, ওয়ার্কশপ, র্যাফেল ড্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। বৈঠকে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, অভিনেতা, সাংবাদিক, সংগীত শিল্পী, লেখক ,কবি ও বিশিষ্টজনরা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস এর সভাপতি ব্রি. জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সম্মানিত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিয়া। আরও উপস্থিত ছিলেন নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজ্যাবিলিটি প্রটেকশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোলাম রব্বানী, সার্ক সাইকিয়াট্রি ফেডারেশনের সভাপতি ও ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. গৌতম সাহা, ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রি এসোসিয়েশনের ট্রেজারার ও বিএপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এর সাবেক পরিচালক ও কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল, বিএসএমএমইউ এর মনোরোগ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও মনের খবর সম্পাদক অধ্যাপক ডা. সালাহ্ উদ্দিন কাউসার বিপ্লব প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. জিল্লুর রহমান রতন।
শরীর ও মন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। দীর্ঘমেয়াদী মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ-রক্তচাপসহ বিভিন্ন ধরণের শারীরিক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। আবার শারীরিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যেও বিষণ্নতা, উদ্বেগজনিত মানসিক রোগসহ বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগের প্রকোপ দেখা যায়। সে জন্য মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যান্য বিভাগ যেমন মেডিসিন, গাইনি, নিউরোলজী, হৃদরোগ, হরমোন বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে তাঁরা মনের যত্ন নেওয়ার বিষয়েও গুরুত্ব দিতে বলেন।
বৈঠকে বক্তা হিসেবে অভিনয় শিল্পী মেহের আফরোজ শাওন জানান, একসময় তিনি নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্বামী ঔপন্যাসিক, কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ তাঁর জন্মদিন মনে রাখেননি। তাই তিনি অভিমান করে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘুমের ওষুধ খান। এ বিষয়ে শাওন বলেন, ‘ওই সময়ে আমার মধ্যে হিতাহিত বোধ ছিল না। জেদের বসে আত্মহত্যার চেষ্টা করি। এটা ছিল আমার মানসিক সমস্যা। পরবর্তীতে চিকিৎসা নিয়ে আমি সুস্থ হওয়ার পর আমার ভুল বুঝতে পারি।’ অভিনেতা মুকিত জাকারিয়া মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি মন্ত্রণালয় করার প্রস্তাব দেন। মন্ত্রাণালয় করা হলে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে টেকসই সমাধান করা যাবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
বৈঠক ও ওয়ার্কশপ শেষে র্যাফেল ড্র এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।