খালু মারা যাওয়ার পর বাবা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন

0
365
ফেইল করার ভয়ে পরীক্ষা দেওয়া বন্ধ করে দিই

[vc_message message_box_style=”solid” style=”square” message_box_color=”black” css=”.vc_custom_1610180632280{border-radius: 35px !important;}”]আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা,দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সেসবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন ‘প্রতিদিনের চিঠি’ বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন। আমাদের আজকের প্রশ্ন পাঠিয়েছেন -নেছার আহমেদ (ছদ্মনাম)-[/vc_message]
[vc_message message_box_style=”solid” style=”square” message_box_color=”sky” icon_fontawesome=”fas fa-question” css=”.vc_custom_1610182540263{border-radius: 35px !important;}”]আমার বাবার বয়স ৭০ বছর। শারীরিকভাবে তিনি এখনও মোটামুটি সুস্থ। মাস দুয়েক আগে আমার খালু মারা যান। বাবার সাথে খালুর সম্পর্কটা খু্ব ভালো ছিল। উনারা দুজনে একসাথে দীর্ঘক্ষণ আড্ডা দিতেন। খালু মারা যাওয়ার পর থেকে বাবা কারো সাথে একদমই কথা বলছেন না। ডাক্তার দেখিয়েছি, ডাক্তাররা বলেছেন যে শারীরিক সমস্যা নেই। বাবা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। এমাতাবস্থায় কি করা যেতে পারে?[/vc_message][vc_message style=”square” message_box_color=”white” icon_fontawesome=”fas fa-envelope-open-text” css=”.vc_custom_1610180780858{border-radius: 35px !important;}”]

এটি একটি অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আপনার বাবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। বিশেষ করে এই বয়সের জন্য বিষয়টি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বাবার বর্তমান বয়স ৭০ বছর। এই বয়সে বন্ধু হারা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এই বয়সে নতুন করে বন্ধু বানানোর সুযোগ খুব কম থাকে। সেজন্য বন্ধু হারানোর বিষয়টি খুব কষ্ট বা দুঃখ নিয়ে আসে। শুধু বন্ধু নয় যে কাউকে হারানোই তাই খুব কঠিন হয়ে দাড়ায়। আপনার বাবার জন্য এখন আপনাদের সহযোগিতা, সহমর্মিতা, পাশে থাকা খুবই দরকার।

এমনিতে কাছের মানুষের মৃত্যুতে মন খারাপ হবে, কষ্ট পাবে এটা স্বাভাবিক। সাধারনত: দেখা যায়, কাছের মানুষের মৃত্যুর পর মন খারাপ হলেও ধীরে ধীরে একসময় সবকিছু ঠিক হয়ে আসে। আশা করি আপনার বাবার ক্ষেত্রেও তাই হবে।

স্বজন হারানোর এই বিষয়টিকে বিরিভমেন্ট বলে। স্বজন বিয়োগ বা বিরিভমেন্টের পর যে রিয়েকশন হয় সেটাকে গ্রিফ বলে। গ্রিফ একটা স্বাভাবিক ঘটনা। মন খারাপ হয়, চুপচাপ হয়ে যায়। অনেকে বিষয়গুলিকে সহজে মানতে পারেনা, ফলে কিছুদিন আরো কিছু সমস্যা হতে পারে। খাওয়া দাওয়া ঘুম সব কিছুতেই তার ছাপ পরে। কিন্তু যদি এই সমস্যা বা অসুবিধা গুলি বেশিদিন চলতে থাকে বা রিয়েকশন যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে তবে সেক্ষেত্রে প্রফেশনালদের সহায়তা নেওয়া জরুরি। তখন সেটা বিষণ্ণতায় রুপ নিতে পারে। তাই খেয়াল রাখতে হবে। যেহেতু দুই মাস হয়েছে, সুতরাং সম্ভব হলে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিতে পারেন। অন্য আর কোনো শারীরিক অসুবিধা না থাকলে সেটা অবশ্যই একটি ভালো দিক। কিছু বিষয় মনে রাখতে এবং করতে পারেন। যেমন-

  • আপনার খালুর জন্য আপনার বাবার মনে যে স্থান সেটাকে রাখতে দিন।
  • খালুর বিষয়গুলি নিয়ে উনার সাথে স্বাভাবিক মাত্রায় আলাপ করতে পারেন।
  • বাবা যদি খালু বিষয়ে কোনো কথা বলতে চান, তাহলে উনাকে থামিয়ে না দিয়ে মন দিয়ে কথাগুলি শোনার চেষ্টা করুন।
  • উনি সাধারনত যেভাবে সমস্যা বা দুঃখ কাটিয়ে উঠতে অভ্যস্ত ছিলেন সেসব বিষয়গুলিকে সামনে নিযে আসুন।
  • উনার দ্বারা যতটুকু কাজ করা সম্ভব সেসব বিষযে সহায়তা করুন।
  • স্বাভাবিক ঘুম, খাওয়া দাওয়া বা অন্যান্য দৈনন্দিন কাজের দিকে নজর রাখুন এবং করতে সহায়তা করুন।

এসব বিষয় যদি করতে না পারেন বা যদি দেখেন কোনোভাবেই স্বাভাবিক থাকছেন না তবে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন। আপাতাত ট্যাবলেট পেইস ০.৫ মিগ্রা সকালে অর্ধেক ও রাতে অর্ধেক খাওয়াতে পারেন্। সেই সাথে টেবলেট সেক্সিটাল ৫ মিগ্রা সকালে নাস্তার পর একটা করে দিতে পারেন। আশা করি দ্রুতই উনি স্বাভাবিক হয়ে আসবেন।[/vc_message]

ইতি,
প্রফেসর ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব

চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক – মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
সেকশন মেম্বার – মাস মিডিয়া এন্ড মেন্টাল হেলথ সেকশন অব ‘ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন’।
কোঅর্ডিনেটর – সাইকিয়াট্রিক সেক্স ক্লিনিক (পিএসসি), মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
সাবেক মেন্টাল স্কিল কনসাল্টেন্ট – বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রিকেট টিম।
সম্পাদক – মনের খবর। চেম্বার তথ্য – ক্লিক করুন

Previous articleসন্তানকে সত্য মিথ্যার তফাত শেখাতে পারেন যেভাবে
Next articleমনের খবর মাসিক ম্যাগাজিন ক্রয়ের বিশেষ অফার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here