কোভিড ১৯ জয়ী টাইপ-১ ডায়াবেটিক নারীর সাক্ষাৎকার

0
47
কোভিড ১৯ জয়ী টাইপ-১ ডায়াবেটিক নারীর সাক্ষাৎকার
কোভিড ১৯ জয়ী টাইপ-১ ডায়াবেটিক নারীর সাক্ষাৎকার
কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের সকলকেই শঙ্কার মধ্যে রেখেছে বিশেষ করে যারা আগে থেকেই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন।এ কঠিন সময়েআমরা যখন জানতে পারি আমাদের সমাজও এর অন্তর্ভুক্ত তখন তা একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করে। অনেক মানুষ নিজের বা তার প্রিয়জনের এই ব্যাধির আক্রমণ নিয়ে বেশ চিন্তিত। আমরা একজন টাইপ-১ ডায়াবেটিক নারীর সাথে কথা বলেছি যিনি ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ থেকে আরোগ্য লাভ করেছেন।

আমাদের সাথে কথা বলে সময় দেওয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ এলিজাবেথ। আমি মনে করি যেহেতু তুমি কোভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে আরোগ্য লাভ করেছ তাই তোমার অভিজ্ঞতা শুনে অনেক ডায়াবেটিক ব্যক্তি উপকৃত হবেন। তুমি কতোদিন ধরে টাইপ-১ ডায়াবেটিক?
:এই নভেম্বরে ৩০ বছর পূর্ণ হবে! আমার ৫ বছর বয়সে সনাক্ত হয় এবং হাসপাতালে ভর্তি হলে তখন শহরের একমাত্র পেডিয়াট্রিক এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের জরুরি গলব্লাডার অপারেশন চলছিল এবং কিছুদিন আমার পরিবারের সাথে দেখা করা বা আমাকে সেবাদান তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। আমার মনে হয় তিনিও একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং তিনি সুস্থ হয়ে সরাসরি আমার কাছে চলে আসেন। তিনি রুমে এসে বলেন, “ বিছানা থেকে নামো খুকু; তুমি অসুস্থ না!“ কথাটি আমার প্রাণে গেঁথে আছে এবং আমার ডায়াবেটিস নিয়ে জল্পনা কল্পনাকে পরিবর্তন করে নতুন রূপ দান করেছে।
 :যখন তুমি জানতে পারলে কোভিড-১৯ ধেয়ে আসছে, তখন কি ভয় পেয়েছিল তোমার বা তোমার পরিবারের জন্য? তুমি এর জন্য ব্যক্তিগতভাবে কী প্রস্তুতি নিয়েছিল?
কোভিড-১৯ অবশ্যই আমার মাথায় ছিল এবং আমি এর বিস্তার পর্যবেক্ষণ করছিলাম। এটি আমেরিকা আক্রমণ করার সময় আমি সতর্ক ছিলাম কিন্তু প্রাথমিকভাবে নিজেকে নিয়ে চিন্তিত ছিলাম না। আমার বেশি চিন্তা ছিল আমার বাবা-মাকে নিয়ে কারণ তারা বয়স এবং স্বাস্থ্য জটিলতার কারনে বেশি ঝুঁকিতে ছিল।
আমি এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে চেয়েছি। আমি বারবার আমার হাত ধুয়েছি এবং মুখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যা আমার কাছে পালন করার থেকে বলাটাই বেশি সহজ মনে হয়েছে! আমি আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অতিরিক্ত কিছু পরিমাণ সংগ্রহে রেখেছি যাতে ডেলিভারি বা বণ্টনজনিতসমস্যায় পড়তে না হয়।
যখনই সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ ও যথাসম্ভব বাড়ির বাইরে না যাওয়ার ঘোষণা এলো সাথে সাথে আমি জরুরি বাজার করা ছাড়া ঘরে থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম।আমি ঘরে রান্না করাও শুরু করলাম যা সচরাচর করি না। এই অভিজ্ঞতা আমাকে কিছুটা ঘরকুনো করে তুলেছে।
 কখন তুমি বুঝতে পারলে তুমি কোভিড-১৯ আক্রান্ত? তুমি কি বুঝতে পেরেছ কীভাবে সংক্রামিত হয়েছিলে?
:প্রাথমিকভাবে আমাকে খুসখুসে কাশির (ব্রংকাইটিস) কথা বলা হল এবং এন্টিবায়োটিক ও ইনহেলার দেওয়া হল। আমি তিন দিন সেটি ব্যবহার করে কোন উন্নতি হল না। আমি মূলত আরও অসুস্থ্য হয়ে পড়ছিলাম। এসময় আমি জানতে পারলাম আমার পরিচিত একজন অসুস্থ্য কিন্তু এখনও পরীক্ষা করেনি এবং তার অবস্থা বা লক্ষণ সম্পর্কেও কিছু জানতে পারলাম না। আমি যথেষ্ট সতর্কতার সাথে আমার চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হলাম। তিনি আমাকে টেস্ট করার পরামর্শ দিলেন এবং একটি ভ্রাম্যমাণ টেস্টিং সেন্টারে এপয়েন্টমেন্ট করে দিলেন।
আমার টেস্ট করার সময় আমাকে কল করে লক্ষণ ও অন্য কিছু স্বাস্থ্য বিষয়ক জিজ্ঞাসা করল। আমাকে ডাক্তার নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যেন ঘর থেকে বের না হই। আমি একটি সাদা তাবুতে গেলাম যেখানে কয়েকজন ডাক্তার পূর্ণ পিপিই পরে আছেন। এটি অতিবাস্তব কোন সিনেমার দৃশ্য মনেহচ্ছিল। তারা আমার দুই নাকের গভীর থেকে নমুনা নিল এবং আমাকে কোভিড-১৯ এর বিস্তারিত তথ্যের একটি শিট দিল এবং আমাকে রেজাল্ট না আসা পর্যন্ত করোনা ভাইরাস আক্রান্তের মত ঘরে আইসোলেট থাকতে বলল।
আমাকে ১৮ই মার্চ টেস্ট করা হল এবং ২১শে মার্চ রিপোর্ট পেলাম। মাঝের দুই দিনে আমি আমার কোভিড-১৯ পজিটিভ বন্ধুদের কাছ থেকে তথ্য নিলাম। সেই শনিবার সকালেই ডাক্তার আমাকে ডেকে নিলেন। তিনি আমাকে রেজাল্ট, লক্ষণগুলোতে করনীয়, ডায়াবেটিস এবং জরুরি সেবার আওতায় যাওয়ার লক্ষণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বললেন। তিনি আমাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে, তরল খাবার খেতে, প্রয়োজন অনুযায়ী জ্বরের সময়  নিতে ওষুধ এবং অবশ্যই আমার ব্লাড সুগার মনিটর করতে বললেন।
আমার পজিটিভ রেজাল্ট নিশ্চিত হতে হতেই আমি উপসর্গের ১০ দিন পার করলাম, ক্রমেই অবস্থা খারাপ হতে থাকল এবং আমি আরও জানতে পারলাম এ সপ্তাহে সাক্ষাৎ হওয়া আরও তিনজনের টেস্টের রেজাল্ট পজিটিভ এসেছে। আমি খুব সম্ভবত স্টেটের বাইরে থেকে সম্প্রতি আসা কারও সংস্পর্শে গিয়েছিলাম। আমরা ৯ই মার্চ একটি ছোট গ্রুপ অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলাম। আমার মনে হয় সেখানে আমরা ১৫ জন ছিলাম এবং ২ ঘন্টার জন্য মিলিত হয়েছিলাম।
তুমি কতোদিন অসুস্থ ছিলে? তোমার উপসর্গগুলো কী কী ছিল? তুমি কি ঘরে থেকেই সেরে উঠতে সক্ষম হয়েছিলে?
:আমি একা থাকি। সুতরাং বাসায় আর কেউ ছিল না এবং সৌভাগ্যক্রমে কয়েকদিন আগে যখন আমি উপসর্গ দেখি তারপর আমার বাবা-মা বা পরিবারের কারও সাথে সাক্ষাৎ হয়নি। আমার ১২ই মার্চ থেকে উপসর্গ দেখা দেয় এবং তিন দিন পর প্রকাশ হয়। আমার বুকের ব্যাথার সাথে সামান্য কফ আসছিল। যেহেতু WHO এটিকে মহামারি ঘোষণা করেছে এবং ডালাসে গত সোমবার প্রথম রোগী সনাক্ত করেছে তাই আমি শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করলাম। আমার তাপমাত্রা ছিল ৯৯.২ ডিগ্রি। যেহেতু আমার সব উপসর্গ শুকনো কাশির ন্যায় ছিল তাই আমি সেরকম কিছু ভাবিনি।
পরদিন আমি কাজ শেষে খুব ক্লান্ত বোধ করলাম। আমি একটু বেশি কাশি দিচ্ছিলাম কিন্তু আর বিশেষ কিছু না। এদিন আমি আমার ক্ষুধা হারিয়ে ফেলছিলাম এবং জিভের স্বাদও হারাচ্ছিলাম। আমি বাসার নিকটে জরুরি সেবার একটি টেলিমেডিসিনের এপয়েন্টমেন্ট নিতে সিদ্ধান্ত নিলাম। তারা জিজ্ঞেস করলো সম্প্রতি আমি কোন বিদেশ ভ্রমণ করেছি কি না বা কোভিড-১৯ পজিটিভ কারও সংস্পর্শে এসেছি কি না। আমি না বললাম এবং আমার অসুস্থ্য বন্ধু সম্পর্কে বললাম।
পরের কয়েকদিন আমার ক্ষুধামন্দা বেড়ে গেল কিন্তু একই রকম বোধ করলাম। আমার ডায়েরিয়া শুরু হল, প্রথমে আমি ওষুধের কারনে ভাবালাম কিন্তু এন্টিবায়োটিক বন্ধ করে দিলেও চলতে থাকল। চতুর্থ দিন আমি বড় রকমের পরিবর্তন দেখলাম এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হল, প্রকৃত জ্বর শুরু হল, কাশি বেড়ে গেল ও কঠিন হল এবং ঘুম থেকে উঠলে মাথাব্যাথা বোধ করলাম। এ সময় আমার ক্ষুধা পুরোপুরি চলে গেল। পাঁচ সাত দিন কেবল ক্রাকারস, গেটোরেড ড্রিংক আর পানি খেয়ে কাটালাম।খাবারের চিন্তাও আমাকে বিচলিত করে তুলতো।
পঞ্চম থেকে দশম দি পর্যন্ত ছিল সবথেকে খারাপ সময়। প্রতিদিন আমি আগের দিনের থেকে খারাপ বোধ করতাম। আমার মনে হত বাতাস আমার ফুসফুসের গভীর পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না এবং কফ আমার গলা আটকে দিচ্ছে আর বাতাসের জন্য হাহাকার করছে। এটি একটি ভয়ংকর অভিজ্ঞতা যখন একা থাকবেন আর দেখবেন স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না। এসব সত্তেও আমি ঘরে থেকেই সুস্থ্য হতে সক্ষম হয়ে উঠলাম। যদিও আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল কিন্তু তবুও আমার মনে হয়নি আমি যথেষ্ট বাতাস গ্রহন করতে পারছি না বা আমি বিপদজনক অবস্থায় আছি ও আমার জরুরি সেবা দরকার। আমি টানা এক সপ্তাহ সারাদিন প্রচুর ঘুমালাম এবং ডাক্তারের পরামর্শমত তরল গ্রহণ করে সজীব থাকার চেষ্টা করলাম।
১১তম দিনে আমি একটু পরিবর্তন বোধ করলাম। আমি খুশি হলাম কারণ তার আগের দিনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যেহেতু উন্নতি হচ্ছে না তাই পরদিন হাসপাতালে যাব। আমি নিশ্চিতভাবে একটু ভালো বোধ করার আগেই সবচেয়ে খারাপ বোধ করেছিলাম। আমার সব উপসর্গগুলো ১৭ দিন স্থায়ী হয়েছিল। যখন থেকে আমি ভালো বোধ করতে শুরু করলাম উপসর্গগুলো প্রতিদিন একটু একটু করে কমে অনেকটা কমে গেল। পুরোপুরি যেতে আরও ৫ দিন লাগলো। আমার শক্তি আর ক্ষুধা ফিরে পেতে আরও এক সপ্তাহ লেগে গেল। আমি এখন মনে হয় ১০০% সেরে উঠেছি। আমার কয়েকবার বুকে ব্যাথা হয়ছিল কিন্তু আমার ফলোআপের সময় ডাক্তার বলেছেন যে তিনি মনে করেন এটি পুরোপুরি ঠিক হতে একটু সময় লাগবে।
ভাইরাস থাকাকালীন তোমার ব্লাড সুগার কেমন ছিল? আপনার কি তখন বিশেষভাবে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে বা কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়ছে?
:দৈবক্রমে সে সময় আমার ব্লাড সুগার তুলনামুলক স্থিতিশীল ছিল। আমি যখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ছিলাম তখন কয়েকটি রিডিং ২০০এমজি/ডিএল(১১.১১) এসেছে। এটি স্থিতিশীল থাকার কারণ হিসেবে মনে করি আমি খুব কম খেয়েছি। যদিও লম্বা সময় এরকম থাকার কারণে আমাকে ইন্সুলিন ডোজ পরিবর্তন করতে হয়েছে কারণ মাঝে মাঝে সুগার কমে যাচ্ছিল। এটি ব্যালেন্স করা একটু কষ্টকর হচ্ছিল কারণ আমার সুগার মাত্রা উপরে রাখা দরকার ছিল কিন্তু আমার মনে হত আমার খাওয়ার মত শক্তি নেই।
অন্য ডায়াবেটিক ব্যক্তিদের হাতের কাছে কোন জিনিসগুলো রাখতে পরামর্শ দিতে চাও?
:আমি হাতের কাছে গোটারেড( কোমল পানীয়), পানি, স্যুপ এবং ক্র্যাকারস রাখতে পরামর্শ দেই যাতে ক্ষুধামন্দা দেখা দিলে কাজে লাগে। আমি সুগার কমে যাওয়া ঠেকাতে জোর করে হলেও কিছু একটা খেয়েছি। আইসোলেশনে যাওয়ার আগে কমপক্ষে এক মাসের খাবার, ওষুধ ও জিনিসপত্র স্টকে রাখতে হবে। তারা প্রকাশ পাওয়ার পর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের কথা বলে কিন্তু সাথে আইসোলেশন যা নির্ভর করে কত দিনে উপসর্গগুলো পুরোপুরি যায় বা তুমি কতোটা দুর্বল তাঁর উপর। আমি ১৪ দিনে ভালো বোধ করিনি। সেকারণে আপনার যদি সাহায্য করার কেউ না থাকে তবে নিজেকেই প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহে রাখতে হবে। সৌভাগ্যক্রমে আমার বাবা-মা আমার নিকটেই থাকতেন এবং খাবার ও অন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমার সামনের দ্বারে এসে রেখে যেতেন।
তুমি কতোদিন অসুস্থ্য ছিলে আর কতোদিন কোয়ারেন্টাইনে ছিলে?
:এটি মোট ২৪ দিন সময় নিয়েছিল। ১৭ দিন উপসর্গ ছিল এবং পরে আমার শক্তি ও ক্ষুধা পুরোপুরি ফিরে পেতে আরও এক সপ্তাহ লেগেছিল। আমি ১১ দিন আইসোলেশনে ছিলাম কিন্তু আমার ডাক্তারের পরামর্শমত পুরোপুরি নিরাপত্তার জন্য আরও এক সপ্তাহ আমার চলাচল সীমিত রেখেছি। আমি ২ সপ্তাহ কাজ করতে পারিনি। ১৩ মার্চ থেকে আমার কাজ রিমোটে গিয়েছে তাই সৌভাগ্যবশত বাসায় থেকে কাজে ফিরতে পেরেছি এবং সহজে করতে পারছি। আমি এখনও বারবার হাত ধুচ্ছি, মাস্ক পরছি, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছি এবং বাইরে কম যাচ্ছি। এছাড়াও আমার ডাক্তার সাবধানে শারীরিক সংস্পর্শে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন।
তুমি এখন কোভিড-১৯ মুক্ত; তুমি কী আবার এন্টিবডি টেস্ট করতে চাও? তুমি কি মনে করো আবারও তুমি এ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পার?
:আমার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও তার রেসপন্স জানার জন্য আমি আবার এন্টিবডি টেস্ট করতে চাই। আমি জানি চিকিৎসা বিভাগ ১০০% নিশ্চিত নয় যে আমরা একবার আক্রান্ত হলে আমরা ঝুঁকিমুক্ত। কিন্তু আমার চিকিৎসক মনে করেন তাঁরা বিশ্বাসী যে একবার সুস্থ্য হয়ে গেলে আমরা নিরাপদ। এখানে ১০ লক্ষে একজনের ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে তাই আমি এবং আমার পরিবার এখনও আমার বিষয়ে সতর্ক আছি। আমি মনে করি এখনও নিরাপত্তা বজায় রাখা প্রয়োজন কারণ অসুস্থ্যতা ও রোগপ্রতিরোধের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস একটি বড় বিষয়। আমার মনে হয় প্রাথমিকভাবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া এবং বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়ার পেছনে ডায়াবেটিসের ভূমিকা রয়েছে।
:আমি মনে করি ঘরে বন্দি থাকা ও অসুস্থ্য হওয়া চাপ সৃষ্টিকারী, এসময় শেল্ফ-কেয়ার খুব গুরুত্বপূর্ণ। তুমি নিজের যত্ন নিশ্চিত করতে কী কী করছ?
আমি অধিক সংবাদ বিশেষকরে কোভিড-১৯ বিষয়ক সংবাদ ব্যবহার কমিয়ে দিতে চেষ্টা করেছি। আমি সুস্থ্য হয়ে যাওয়ার পরও তা করছি। আমি একে সহজভাবে নিয়েছি এবং প্রচুর বিশ্রাম নিয়েছি। আমি নিজেকে খুব কঠিন অনুশাসনে বেঁধে ফেলিনি। আমি অনেক মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেছি। অনেকের উৎসাহ ও সাপোর্ট আমার পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। যখনই আমি একটু সুস্থ্য বোধ করেছি তখন আমি আমার প্রিয় কাজগুলো করে সময় কাটানোর চেষ্টা করেছি যেমন- পছন্দের মুভি দেখা, বই ও ম্যাগাজিন পড়া, বন্ধুদের সাথে ভিডিও চ্যাটিং করেছি। কারও চেহারা সত্যিই আমাদেরকে তার কাছে নিয়ে যায়!
 মানুষ খুব ভয়ে আছে; একজন ডায়াবেটিক ব্যক্তি হয়েও তুমি কোভিড-১৯ থেকে সেরে উঠেছ; তুমি পাঠকদের উদ্দেশ্যে কী বলতে চাও? এরকম আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে অন্যদের সাহস দেওয়ার মত কিছু বলতে চাও?
:এটি খুব হতাশাজনক যে কোভিড-১৯ ও ডায়াবেটিস বিষয়ক সংবাদগুলো শুধু হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর উচ্চ হার প্রকাশ করে। আমার আশা আমার সুস্থ্য হয়ে ওঠার গল্প অন্যদের ভয় দূর করতে সহায়ক হবে। ডায়াবেটিস নিঃসন্দেহে পরিস্থিতিকে একটু কঠিন করে তুলে কিন্তু আমি স্বয়ং ঘরে থেকেই সুস্থ্য হয়ে উঠেছি। আমি আরও বলবো নিজের শরীরের প্রতি দৃষ্টি দিন। প্রয়োজন হলে জরুরি সেবা নিতে অবশ্যই সংকোচ করবেন না। যতটা সম্ভব সুস্থ্য থাকার চেষ্টা করুন এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখুন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এটি আমাকে সুস্থ্য হতে সহায়তা করেছে।
আমার সাথে কথা বলে সময় দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ! আমি খুবই আনন্দিত যে তুমি স্বাভাবিক আছ এবং সুস্থ বোধ করছেন!
সূত্র: (www.diabetesdaily.comহতে পরিমার্জিত ও সংক্ষেপিত) লিংক: https://www.diabetesdaily.com/blog/woman-with-type-1-diabetes-recovers-from-covid-19-after-17-days-650985/
অনুবাদ করেছেন- মোঃ তাজুল ইসলাম মুন্সী, টাইপ-১ ডায়াবেটিক, মেন্টর, ইয়াং লিডারস ইন ডায়াবেটিস প্রোগ্রাম(YLD), ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন(IDF), ইমেইলঃ tazulislam1993@gmail.com, মোবাইলঃ ০১৬৭৫৬৩৯৯৯১
মানিসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকন সর্তক থাকুন

Previous articleমা-সন্তানের সম্পর্কঃ বিজ্ঞান কী বলে?
Next articleকরোনা আতঙ্কে মন শান্ত রাখতে যা করতে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here