কোভিড-১৯ ও আমাদের সচেতনতা

0
94
কোভিড-১৯ ও আমাদের সচেতনতা
কোভিড-১৯ ও আমাদের সচেতনতা

ইতিমধ্যে আমরা ছোট বড় সবাই কোভিড-১৯ সম্পর্কে অনেক জেনেছি। এর থেকে বাঁচার জন্য আমাদের সাবধানতা অবলম্বনের বিষয়গুলো আজ আর কারও অজানা নয়। যেমন: ২০/৩০ সেকেন্ড খার যুক্ত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা,সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করা,হাঁচি কাশির সময় কনুই/রুমাল/টিস্যু বাবহার করা, শরীর চর্চা করা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ইত্যাদি। এগুলোর পাশাপাশি কোভিড-19 মানে কোয়ারেনটাইন,সেলফ আইসোলেশন,লকডাউন এই শব্দ গুলোর সাথে আমরা সামাজিক,সাংস্কৃতিক, পারিবারিক ভাবে কখনো পরিচিত ছিলাম না।
বর্তমানে এই পরিস্থিতি আমাদের সর্ব স্তরের মানুষের মধ্যে,জেনারেশনের মধ্যে, নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবার মনের মধ্যে হতাশা, চাপ,আতঙ্ক,সংশয়,ভয়,দুঃশ্চিন্তার ঝড় তুলেছে। মানুষ আজ তার নিজের প্রয়োজনে ঘরমুখো। ঘরবন্দি মানুষ ঘরে থাকার ফলে একদিকে যেমন পারিবারিক বন্ধন গুলো আরো মজবুত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে অন্যদিকে Self Reflection (নিজের ভাবনা) এর সময় বেড়ে যাওয়ায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষের মৃত্যু ভীতি,মোবাইল এডিকশন,শুচিবাই,স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মতের অমিল,দ্বন্দ্ব ইত্যাদি বেড়ে গেছে এসবের প্রভাব থেকে বাদ পড়ছে না পরিবারের শিশুরাও ।
এগুলোর পাশাপাশি অর্থ উপার্জন,কাজের অভাব,খাবারের অভাব সাধারণ মানুষের ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মানুষ নতুন কিছু ভাবনা ভাবার আগেই তার মনে জায়গা করে নিচ্ছে আগে দেখি কোভিড-১৯ কি রুপে রুপান্তরিত হয় ততোদিন বাঁচি কি না , বেঁচে থাকলে তখন হবে /করবো/পারবো ইত্যাদি।
মানুষের মনে বাসা বেঁধেছে কোভিড-১৯। কোভিড -১৯ মানে,নিজে বাঁচলে বাপের নাম! আর তাই তো,সন্তান বাবা মায়ের লাশ নিতে আসে না! লাশ ঘরে পরে থাকে গোসল, জানাজার লোক নাই! কোভিড-১৯ আমাদের আরও বেশি স্বার্থপর করে দিয়েছে তা না হলে এর থেকে বাঁচার কোনো উপায় নাই। এতে করে মানুষের মানসিক কষ্ট,যন্ত্রণা বেড়ে যাচ্ছে। মানুষ না পারছে সইতে না পারছে কিছু করতে ।
এই পরিস্থিতিতে আমাদের প্রত্যেককে মানসিক ও শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। Tolerance Power বাড়াতে হবে এর জন্য আমরা Mindfulness Practice করতে পারি । আমরা প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে শরীর চর্চা বা হাটতে পারি যা আমাদের শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থতার জন্য অধিক কার্যকর। Breathing Exercise (শ্বাস – প্রশ্বাস এর ব্য়ায়াম) করতে পারি,পাশাপাশি মহান আল্লাহর (সৃষ্টিকরতার) কাছে আমাদের প্রার্থনা করতে হবে তিনি যেন কোভিড-১৯ এর ভয়াবহতা থেকে আমাদের প্রত্যেককে হেফাজত করেন ।
আমরা মনোবিজ্ঞানিরা অনেকভাবে সর্ব স্তরের মানুষের জন্য মানসিক সেবামূলক কাজ করে যেতে পারি যেখানে থাকবে না নিজের স্বার্থ। আমি সেবা দিচ্ছি বা সেবামূলক কাজ করবো একান্ত মানবিক দিক থেকে। নিজেকে পরিচিত করার জন্য নয় ।
হতাশা,চাপ,দুঃশ্চিন্তা এগুলো বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের মধ্যে আসবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে,দুঃশ্চিন্তা কে আমরা মেহমানদারী করবো না। চিন্তাকে যতই মেহমানদারী করবো চিন্তা ততই আমাদের ঘিরে ধরবে এবং একটা পর্যায়ে আমাদের কে বিষণ্ণতার (Depression ) দিকে নিয়ে যাবে ।
লেখক: আয়শা আখতার বানু ফেনসী, সাইকোলজিসট, মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগ,রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,রংপুর।

Previous articleঅনলাইনে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য বিউটিফুল মাইন্ড এর ক্লাশ
Next articleমানসিক স্বাস্থ্যের উপর স্বেচ্ছাসেবার প্রভাব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here