অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার বাচ্চাদের একটি নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বা মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা।
প্রতি বছর ২ এপ্রিল পালিত হয় বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। সাধারণত ২-৩ বছর বয়সের মধ্যেই এই রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। সোশ্যাল কমিউনিকেশন এবং ইন্টারেকশন অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগের দক্ষতা বাধাপ্রাপ্ত হয়। সেই সঙ্গে একই ধরনের আচরণ, কাজ এবং একই ধরনের জিনিসের প্রতি আগ্রহ দেখা যায়।
এই রোগ পুরোপুরি নির্মূলের জন্য কোনো চিকিৎসা না থাকলেও নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু ব্যবস্থা নেয়া যায়। যদি চিকিৎসা অল্প বয়সে শুরু করা যায়, তাহলে ভালো ফলাফল আশা করা যায়। চিকিৎসার উদ্দেশ্য হচ্ছে রোগের লক্ষণগুলো কমিয়ে শিশুর কর্মক্ষমতা বাড়ানো এবং তার সামাজিক বিকাশে সাহায্য করা।
বাসায় চিকিৎসার পাশাপাশি স্কুলেও কিছু চিকিৎসা ব্যবস্থা নিতে হবে। বর্তমানে অটিজমের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের থেরাপি দেয়া হয়। যেমন- ডেভেলপমেন্টাল থেরাপি’, বিহেভিয়ার ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনিং, জয়েন্ট অ্যাটেনশান থেরাপি, সেন্সরি ইন্টিগ্রেশান থেরাপি, স্পিচ থেরাপি, ফিজিক্যাল থেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি এবং রিলেশনশিপ ডেভেলপমেন্ট ইন্টারভেনশান ইত্যাদি।
যদিও ওষুধের মাধ্যমে অটিজমের বাচ্চাদের মূল সমস্যাগুলো সমাধান করা যায় না, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ওষুধের মাধ্যমে রোগের লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অটিজমের সঙ্গে যদি অন্য কোনো বিকাশ জনিত, আচরণগত ও উদ্বিগ্নতা জনিত সমস্যা থাকে তখন অ্যান্টিসাইকোটিক এবং অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট জাতীয় ওষুধ দেয়া হয়ে থাকে।
সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে যে মেমান্টিন ওষুধটি ভাষা ও সামাজিক দক্ষতা বিকাশে সাহায্য করে এবং ডিসাইক্লোসেরিন ওষুধটি ব্যবহারের মাধ্যমে সামাজিক উদ্বিগ্নতা (সোশ্যাল অ্যাংজাইটি) কমে ও সামাজিক যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ে।
অটিজমের বাচ্চাদের অভিভাবকদের তাই আতঙ্কিত অথবা উদ্বিগ্ন না হয়ে বিশেষায়িত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা ও থেরাপি নিলে রোগের লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং শিশুর মানসিক বিকাশ ও সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
ডা. টুম্পা হালদার
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে