গুরুতর মানসিক রোগে আক্রান্ত প্রায় ৯৭ ভাগ রোগী মনে করেন তাদের কোনো রোগ নাই। অন্যেরা জোর করে তাদের চিকিৎসা করার চেষ্টা করছে। পরিবারের লোকজনের সাথে তাদের মতামত মিলছেনা বলে তার চিকিৎসা চলছে। পরিবারের লোকজন রোগের প্রাথমিক অবস্থায় রোগীর কথার ওপর গুরুত্ব দিতে থাকেন ও ডাক্তারের কাছে আনতে দেরি করে ফেলেন। আমরা অনেক রোগীর অভিভাবকদের বলতে শুনেছি সে তো বলে তার কোনো রোগ নাই, ডাক্তারের কাছে কেন যাব? আমরা হাসপাতালে রোগীদের কাছে জিজ্ঞাসা করার পর মনে হয় রোগ পরিবারের লোকদের আর ডাক্তারদের কারণ তারা জোর করে তাকে চিকিৎসা করাচ্ছেন।
মানসিক রোগের চিকিৎসায় নিজের রোগ বুঝতে পারার গুরুত্ব অনেক বেশি। রোগী ভাল হয়ে বাড়ি যাওয়ার পর নিজের চিকিৎসা নিজেকে চালিয়ে নিতে এর গুরুত্ব অনেক। নিজের রোগ বুঝতে না পারাটা রোগের জন্যেই হয়। মুশকিলটা হয় যারা পরিবারের ও সিদ্ধান্ত নেন তারা যখন রোগীর কথা অনুযায়ী চলার চেষ্টা করেন।
দুটি উদাহরণ বলি যেটা আশেপাশের মানুষের ভূমিকার প্রভাব আমরা বুঝতে পারব।
ঢাকা শহরের একটা জায়গায় আমরা একজন রোগীকে আনতে গিয়েছিলাম একটা বিশেষ সেবার অংশ হিসাবে যাকে তার স্বামী বাসায় রাখতে পারতেছিলেন না তার মানসিক রোগের জন্য। রোগী আগেও মানসিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সুতরাং হাসপাতালের বিশেষ লোক আর অ্যাম্বুলেন্স দেখে তিনি রাস্তায় শুয়ে পড়লেন এবং চিৎকার করে লোকদের বলতে থাকলেন উনার কোনো রোগ নাই, সবাই জোর করে তাকে নিয়ে যাচ্ছে শত্রুতা করে। আমরা সেদিন উনাকে আর আনতে পারিনি এবং খুব কৌশলে নিজেরা অল্পের জন্য মারপিটের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম কারণ আমরা কোনো ভাবেই আশেপাশের লোকদের বোঝাতে পারিনি যে মানসিক রোগের লোকদের এরকম হতে পারে।
আর একদিন ঢাকা শহরের একটি হাসপাতাল থেকে একজন ২০ বছর বয়স্ক মহিলা কোনো ক্রমে জোর করে বের হলেন এবং বলতে থাকলেন যে তার কোনো রোগ নাই। তাকে জোর করে এখানে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের লোকজন ও ডাক্তাররা আশেপাশের লোকজনদের বোঝাতে পারেনি যে তার মানসিক রোগ আছে।
প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।