প্লাইমাউথ শহরের দুজন মা শহরের কিশোর কিশোরী এবং যুবক যুবতীদের ভাল মানসিক স্বাস্থ্য সেবা বৃদ্ধির জন্য প্রচার বাহিনীতে যোগদান করেছেন। ডেবি রোচ এবং জেইন হাটন তাদের দুজনের ছেলেই জটিল রকমের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। তারা যেসব যুবক যুবতীরা মানসিক সমস্যায় ভুগছে তাদের সাহায্য করার জন্য এবং তাদের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে একটি সম্মেলন করার লক্ষ্যে বাহিনীতে যোগদান করেছেন।
উভয় মা শিশু এবং তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এবং দুজন মা’ই ভাবছেন তাঁদের এই সম্মেলন সকল স্তরের বাব মা, ডাক্তার, সেবিকা, পেশাজীবীদের একত্রিত করবে এবং এই সম্মেলনের মাধ্যমে সবাই জানতে পারবে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে কী কী হতে পারে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ফলাফল কী হতে পারে এবং বর্তমানে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে কী কী চিকিৎসা রয়েছে অথবা ভবিষ্যতে আরও ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য কী কী করা যেতে পারে তা জানতে পারবে।
ডেবি রোচের ছেলে অলি খুব সাহসিকতার সাথে এনোরেক্সিয়ার মোকাবিলা করেছেন। ছেলেটি তার ১৫ বছর বয়সে সাইক্রিয়াটিক ইউনিটে ভর্তি হয়, তার আগে প্রায় তিন বছর ডেবি রোচ তার ছেলে সেবা যত্ন করেন। এবং তিনি তার এই অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লিখেছেন। এখন ছেলেটির বয়স ২০ বছর এবং সে অনেকটা সুস্থ হওয়ার পথে।
ডেবি বর্তমানে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার প্রাথমিক চিকিৎসার একজন প্রশিক্ষক। তিনি বলেন, “আমাদের তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বিষয়ক প্রতিবেদন এবং পরিসংখ্যান খুব ঘন ঘন বের হচ্ছে। এবং উদ্বেগের ব্যাপার এই যে সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। ৫ বছর থেকে ১৬ বছর বয়সী পর্যন্ত প্রত্যেক ১০ জনের মধ্যে ১ জনের কোন না কোন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। হিসেব করে দেখা গেছে এমন সংখ্যা প্রায় ৮,৫০,০০০। এটি কোনভাবেই মানা যায় না। আমরা মানুষকে আহবান জানাচ্ছি তারা যেন আমাদের সাহায্য করে এবং আমরা যেন যেসব তরুণ তরুণীরা সংকটে আছে তাদের সাহায্য করতে পারি”।
তিনি আরও বলেন, “সৌভাগ্যবশত থার্ড সেক্টরের কিছু সংগঠন যেমন প্লাইমাউথ এর দ্যা জোন এবং কর্নওয়াল এর দ্যা ইনভিকটাস তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় যুগান্তকারী সহায়তা এবং সমর্থন প্রদান করছে। এই সংস্থা গুলো যে ধরণের কাজ করে তাদের সম্মানে এই সম্মেলনের মাধ্যমে যে অর্থ উত্তোলন হবে তা বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করে দেয়া হবে”।
হলিস্টিক ফাংশনাল পুষ্টিবিজ্ঞানী এবং শেফ জেন হাটন বলেন, “প্রত্যেকদিন তরুণ তরুণীরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, স্কুলের কাজ, কলেজের মূল্যায়ন পরীক্ষা এবং তাদের সহকর্মীদের কাছ থেকে ভীষণ রকমের চাপের সম্মুখীন হয়ে থাকে। বাবা মা এবং কেয়ার গিভাররা রা তাদের সন্তানদের উপর থেকে কীভাবে এ চাপ সরানো যায় কিংবা কীভাবে এই চাপ কমানো যায় তা নিয়ে ভাবেন না। হয়তবা কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা জানেনই না তাদের সন্তান কিসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে”।
এই সম্মেলনে বক্তা হিসেবে থাকবেন দ্যা ইনভিকটাস এর সহ প্রতিষ্ঠাতা শ্যারন চাওবার্ন এবং দ্যা জোন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইক জারম্যান। এবং এই সম্মেলনে বিভিন্ন পেশাদারদের দ্বারা কর্মশালার আয়োজন করা করা হবে। যেমন থাকবে যুবক ক্ষমতায়ণ কর্মী, লেখক-লেখিকা, মিগেল ডীন। এছাড়াও থাকবে গোল টেবিল বৈঠক।
সম্মেলনটির নাম-‘ইয়াং মাইন্ডস ইন ক্রাইসিস, এভিনিউস এন্ড অল্টারনেটিভসঃ হয়্যার ডু উই গো ফ্রম হেয়ার?’ এই সম্মেলনটি ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্লাইমাউথ স্কুল অব ক্রিয়েটিভ আর্টসে অনুষ্ঠিত হবে। এখানে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা থাকবে।
তথ্যসূত্র-
(http://www.plymouthherald.co.uk/we-want-better-outcomes-for-young-people-s-mental-health-say-plymouth-mums/story-30378926-detail/story.html)
কাজী কামরুন নাহার, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম