মানসিক চাপ সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো বিষয় নয়। প্রয়োজনীয়ও বটে। কোনো একটি কাজ থেকে কাঙ্ক্ষিত ফল বের করে নিয়ে আসার জন্য কিছুটা চাপের প্রয়োজন। তবে চাপের পরিমাণ কম বা বেশি না হয়ে, সেটা হতে হবে নিজের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে।
নিয়ন্ত্রিত চাপ প্রতিদিনের জীবনকে আনন্দময়, শঙ্কামুক্ত, বিপদমুক্ত ও অর্থবহ করে তুলতে অনেকভাবে সহায়তা করে। শারীরিক স্বাচ্ছন্দ ও সুস্থ্যতা থেকে শুরু করে, আহার-নিদ্রা, অবসর-বিনোদন, ক্রীড়া-শিক্ষা, পেশা-লক্ষ্য সবকিছুকেই পরিপূর্ণ ও পরিতৃপ্তভাবে উপভোগ করতে মানসিক চাপের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকাটা, প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অপরপক্ষে, অনিয়ন্ত্রিত মানসিক চাপ ব্যক্তিজীবনে ঠিক উল্টো ফল বয়ে নিয়ে আসবে এটা প্রায় জোড় দিয়েই বলা যায়। শুধু চাপ সংক্রান্ত তারতম্য ও কাজের ক্ষেত্রে এর প্রভাবকে ঠিক মতো বুঝতে না পারার কারণেও ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, পেশাগত জীবন থেকে শুরু করে একজন মানুষের শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন দিকে হাজার রকমের জটিলতা তৈরি হতে পারে। সেই সাথে ভেস্তে যেতে পারে যেকোনো ধরনের পরিকল্পনা। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে জড়িয়ে পরতে পারেন হাজার রকমের অস্বস্তিকর অবস্থার মাঝে।
মানসিক চাপকে নিজের আয়ত্বে রাখার জন্য (অর্থাৎ অতিরিক্ত অনুভূত চাপকে কমানো কিংবা চাপহীনতাকে বাড়ানোর ব্যাপারে) যে বিষয়গুলো মনে রাখা জরুরি, সেসব হলো-
– মানসিক চাপ বিষয়টি আসলে কী?
– নিজের উপর এর প্রভাব কতটুকু?
– অতিরিক্ত চাপে আমার শারীরিক প্রতিক্রিয়া কী হয়?
– মানসিক প্রতিক্রিয়াই কী হয়?
– কর্মক্ষেত্রে কী ধরনের প্রভাব পরে?
– ব্যক্তিগত জীবনে কী কী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়?
– কোনো ধরনের পরিস্থিতিতে আমি বেশি চাপ অনুভব করি?
– কেন আমি কোনো ধরনের চাপ অনুভবই করি না বা করছি না?
– কোনো একটি কাজের ক্ষেত্রে নিজের ক্ষমতা বা দক্ষতা কতটুকু?
– নিজের চাহিদা, সীমাবদ্ধতা ও প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?
এসব বিষয় মনে রেখে জীবনকে সাজাতে পারলে অনেক অপ্রয়োজনীয় ভয়, শঙ্কা বা প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেব মিলানো সহজ। সহজ হতে পারে জীবনের প্রকৃত অর্থ স্বাদ গন্ধ খোঁজে পেতে। আনন্দ ফুর্তি থেকে শুরু করে, সব কিছুতেই আলাদা আলাদা তৃপ্তি পাওয়া সম্ভব। মনের মধ্যে কোনো একটি বিষয় সেঁটে থাকলে এবং তা থেকে তৈরি চাপ সামনের যেকোনো আনন্দকে মাটি করতে যথেষ্ট।