ধুমপান ত্যাগে কমবে বিষণ্নতা

যে সমস্ত ধূমপায়ীরা বিষণ্ণতায় ভুগছেন, প্রকৃত অর্থে ধূমপান ত্যাগ করলে নিশ্চিতভাবেই তাদের মানসিক স্বাস্থে উন্নতি লক্ষ্য করবেন, এমন তথ্যই উঠে এসেছে অ্যানালস অব বিহেভারিয়াল মেডিসিনে প্রকাশিত ইউকে ক্যান্সার রিসার্চের অর্থায়নে এক গবেষনায়।
কিংস কলেজ লন্ডন ও প্রাগের চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক চেক প্রজাতন্ত্রে একটি স্টপ স্মোকিং ক্লিনিকে পর্যবেক্ষন করে পেয়েছেন যে ধূমপান ত্যাগকারীদের বিষন্নতার লক্ষ্যনীয় ভাবে উন্নতি হয়েছে।
এবং এক বছরের একটি ফলোআপে দেখা গেছে দুই তৃতীয়াংশ(৬৬.৩%) মধ্যম ও প্রকট বিষন্নতায় ভোগী ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রেও তেমন কোন উপসর্গ পাওয়া যায়নি।
গবেষকরা আরো খুঁজে পেয়েছেন যে, যারা নিয়মিত ভাবে ক্লিনিকে গেছেন এবং বিশেষজ্ঞদের ব্যবহার এবং ক্লিনিক প্রদত্ত ওষুধদের মাধ্যমে এক বছরে ধূমপান থেকে বিরত থাকতে পেরেছেন।
কিন্তু তারা আরো বলেন বিষন্নতায় ভোগীদের ক্ষেত্রে এ হার কিছুটা কম।  তাদের মতে এক ধরনের সাহায্য বিভিন্ন লোকদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে কাজ করতে পারে তাই তাদের মতে মানসিক সমস্যায় আছে এমন লোকদের বাড়তি সহযোগীতা দরকার ।
যাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আছে তাদের ধুমপান করার হার সাধারণ মানুষের সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ।  হিসেবে দেখা গেছে যুক্তরাজ্যের ৯.৬ মিলিয়ন প্রাপ্ত বয়স্ক ধূমপায়ীদের মধ্যে প্রায় তিন মিলিয়ন ধূমপায়ীদেরই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আছে।
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন এমন ধূমপায়ীদের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল হ্রাসে ধূমপানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারন বলে তারা দাবি করেছেন।  সাধারণ মানুষের তুলনায় তাদের ক্ষেত্রে এই হার ১০ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত কম হতে পারে।
লন্ডনের কিংস কলেজের ক্যান্সার রিসার্চ ফেলো এবং প্রকাশনার সিনিয়র লেখক ডাঃ লিউনি ব্রূস বলেন, ‘ আমাদের গবেষনা বলছে যে ধূমপান ত্যাগ সেবা (স্টপ স্মোকিং সার্ভিস) বিষণ্ণতায় ভোগীদের সাহায্যে খুবই কার্যকর এবং ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা গ্রহনের মাধ্যমে ধূমপান ত্যাগের চেষ্টাও সফল হয়’।
‘গবেষনা আরো বলছে, ধুমপান ত্যাগে বিষণ্ণতার উপসর্গগুলো অনেকটা কমে যায় এবং মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায়’।
‘ যেখানে বিগত দশক গুলোতে ধূমপায়ীদের হার অনেকটাই কমে গেছে সেখানে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আছে এমন ধূমপায়ী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সেই হার অনেকটাই কম’।
‘আমরা আশা করি আমাদের এই গবেষনা যুক্তরাজ্যে প্রয়োজনীয় সমর্থন এবং ওষুধ প্রদানের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এনং (স্টপ স্মোকিং সার্ভিস) ধূমপান বন্ধে প্রদত্ত সেবা বৃদ্ধিতে  কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে’।
এই নতুন গবেষনাই বলে দিচ্ছে স্টপ স্মোকিং সার্ভিস কতটা গুরুত্বপূর্ন।  যুক্তরাজ্যে এই ধরনের সেবা গ্রাহকরা প্রায় তিন গুন দ্রুত ধূমপান ছাড়তে পারছেন সাধারণ মানুষদের তুলনায়।
তথ্যসূত্র- সায়েন্স ডেইলি
(https://www.sciencedaily.com/releases/2017/01/170120085906.htm)
রুবাইয়াত মুরসালিন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম

Previous articleনিজের ক্ষতি করার প্রবণতা একটি মানসিক রোগের উপসর্গ
Next articleমানসিক স্বাস্থের ব্যাপারে সোচ্চার হচ্ছে চীন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here