সঙ্গীর কাছে শুধু নিজের ভালো দিকগুলো তুলে ধরার প্রবণতা স্বাভাবিক। কিন্তু এ ধরণের প্রবণতা সম্পর্ককে সীমাবদ্ধ করে দেয়। আপনার দোষ এবং গুণ, দুটো মিলিয়েই আপনি। আর এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে সেই সম্পর্কে অন্তরঙ্গতা এবং ভালোবাসা দুটোই বেশী থাকে।
আমরা স্বভাবতই সবার থেকে আমাদের দোষ লুকিয়ে রাখি এবং গুণগুলো তুলে ধরি। আর যাদেরকে আমরা পছন্দ করি এবং যাদের কাছে নিজেদের গুরুত্ব আরও বাড়াতে চাই, বিশেষত তাদের কাছে আমাদের ভুল বা দোষগুলো প্রকাশ পাক সেটি একেবারেই চাই না।
আমরা এটি করি কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে তারা যদি আমাদের ভুল ত্রুটি এবং দোষগুলো জেনে যায় তাহলে তারা আমাদের বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা করবে এবং হয়তো আমাদের থেকে দূরে চলে যাবে। তাই আমরা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করি যেখানে আমরা শুধু ভালো টুকুরই প্রতিনিধিত্ব করি।
কিন্তু বাস্তবতা হল, দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের এই প্রবণতা ভালো কিছু বয়ে আনার বদলে খারাপ কিছুই বয়ে আনে। কারণ এ ধরণের আচরণ আমাদের সম্পূর্ণ স্বত্বাকে সঙ্গীর প্রতি সমর্পণে বাঁধা সৃষ্টি করে। তাছাড়া সম্পর্কে একটি আবরণ বা দূরত্ব সৃষ্টি করে যা সময়ের সাথে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
কিন্তু যদি এমনটি হয় যে আপনি আপানার বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়ে নিজেকে না লুকিয়ে সঙ্গীর কাছে নিজের সবটুকু তুলে ধরেন, তাহলে অবশ্যই এই দূরত্ব মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। অর্থাৎ নিজেদের বাস্তবতা বর্জন করে কখনোই দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কে অন্তরঙ্গতা এবং গভীরতা ধরে রাখা যায় না।
মনস্তত্ত্ববিদগণ বলেন, যখন দুজন মানুষ বৈবাহিক বা অন্তরঙ্গ সম্পর্কে আবদ্ধ হয়, তখন দুজনার মধ্যেই দুজনার দোষ এবং গুণ দুটোকেই আপন করে নেওয়ার মতো মানসিকতা থাকা প্রয়োজন। আর এটি হলেই সম্পর্ক আরও ভালোবাসাপূর্ণ এবং অর্থবহ হয়।
তাছাড়া দুজনার মধ্যেই এই বিশ্বাস থাকা উচিৎ যে, উভয়ে উভয়ের সামনে তাদের সম্পূর্ণ স্বত্বাকেই তুলে ধরতে পারে। অর্থাৎ দোষ এবং গুণ উভয়ই স্বাভাবিক ভাবে প্রকাশ করতে পারে। আর এ ধরণের ইতিবাচক মানসিকতাই সম্পর্ককে পূর্ণতা প্রদান করে। নিচে কিছু সহজ কৌশল তুলে ধরা হল যেগুলো অনুসরণ করে আপনি এই কাজটি সম্পন্ন করতে পারেন।
এই লেখাটি দুজন মিলে পড়ুন
সম্পূর্ণ লেখাটি শুধু আপনি নয়, আপনার সঙ্গীকেও পড়তে দিন। তাহলে দুজনের মাঝেই এই মানসিকতা গড়ে উঠবে।
আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠুন
নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হন। সবার আগে আপনি নিজে নিজের সব কিছুকে মেনে নিন এবং গুরুত্ব দিন। আর তাহলেই নিজের দোষ এবং গুণ দুটিকেই স্বাভাবিকভাবে প্রকাশ করতে পারবেন এবং সঙ্গীর কাছে নিজেকে তুলে ধরতে কোন রকম দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ার ভয়ও আপনার থাকবে না।
মেনে নিন একই সাথে পরিবর্তনের চেষ্টা করুন
সঙ্গীর কাছে দোষ ত্রুটি তুলে ধরা সহজ হবে যদি আপনি নিজের ত্রুটিগুলোকে মেনে নিয়ে সেগুলোকে সংশোধনের প্রয়াসও করতে পারেন। তাহলে নিজের কাছেও আপনি দায়বদ্ধ থাকতে পারবেন।
যদি আপনি এই প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করতে পারেন, তাহলে ধীরে ধীরে অবশ্যই সঙ্গীর সাথে আপনার সম্পর্ক ততোটাই গভীর এবং অন্তরঙ্গ হবে যেখানে ব্যক্তিগত স্বার্থ বা দোষ ত্রুটির কোন স্থান নেই। এই অবস্থায় আপনি আপনার ভিতরের শক্তিকে পূর্ণরূপে অনুভব করতে পারবেন এবং সম্পর্ককে নতুন মাত্রা প্রদান করতে পারবেন।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে