করোনা সংক্রমনের এই দিনগুলোতে আমরা সবাই কম বেশি করোনার বিস্তার সম্পর্কে জানি। একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষের মধ্যে ছড়ানো এ ভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যেই দীর্ঘদিন লকডাউন থাকার পর অনেক অফিস খুলে দেয়া হয়েছে।
শুরু থেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, দেশীয় সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করোনা থেকে বাঁচার বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে আসছেন। এই সংকটকালীন সময়ে জীবিকার তাগিদে যেহেতু অফিসে যেতেই হচ্ছে সেক্ষেত্রে নিজেকে যথাসাধ্য সুরক্ষা যাতে রাখা যায় সেই পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করা উচিত।
অফিসে যেতে এবং অফিস থেকে বাসায় ফিরে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে নিজের সাথে পরিবারকে ও সুরক্ষা রাখা যাবে।
গণপরিবহণে চড়তে মেনে চলতে হবে যেসব বিষয়:
- খুব ভিড় বাসে উঠবেন না। এ ক্ষেত্রে হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে বেরতে হবে। নির্দিষ্ট দূরত্বে লাইন দিয়ে বাসে উঠবেন। চেষ্টা করবেন, জানলার কাছে থাকতে যাতে বাইরের বাতাসে শ্বাস নেওয়া যায়।
- তিন স্তরীয় মাস্ক পরার চেষ্টা করুন। হাতে বানানো কাপড়ের মাস্ক হলে তা যেন তিন স্তরবিশিষ্ট হয়। ভিড় জায়গায় সাধারণ মাস্ক কার্যকর নয়। সার্জিকাল মাস্কও পরা খুব ভাল। এতে ড্রপলেট থেকে সহজে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।
- বাস বা ট্রেনে যাওয়ার সময় ফেস শিল্ড ব্যবহার করতে পারলে ভাল হয়।
- যতই অসুবিধে হোক কোনও অবস্থাতেই নাকে, মুখে বা চোখে হাত দেবেন না। একান্ত দিতেই হলে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে তার পর হাত দিন। কাজ মিটলে ফের সাবান দিন হাতে।
- ব্যাগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান নিতে ভুলবেন না।
- কোনও অবস্থাতেই রাস্তার পানি বা খাবার খাবেন না।
- অল্প দূরত্ব হলে সেটুকু হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
- ট্যাক্সি বা অ্যাপ নির্ভর গাড়িতে গেলে চালকের পাশে বসবেন না, পিছনে বসুন।
- আপাতত অটোয় পিছনে দুজন যাত্রীর যাবার কথা। বাড়তি যাত্রী থাকলে অটোয় না যাওয়াই ভাল।
- বাস, ট্রাম বা ট্রেন থেকে নেমে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে টুপি, গ্লাভস, মাস্ক ও ফেস শিল্ড খুলে হাত মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে কাজে বসুন
- গণপরিবহনে উঠে মোবাইল ফোন প্রয়োজন ছাড়া ব্যবহার করবেন না। মোবাইল থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে।
- সঙ্গে আদার টুকরো নিয়ে যাবেন। মুখে রাখলে গলার সংক্রমণ কিছুটা আটকানো যায়।
- খুব অসুবিধা না হলে ফেরার পথে কিছুটা গণপরিবহনে গিয়ে বাকি পথ হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। এক দিকে এক্সারসাইজ হবে, অন্যদিকে কোভিড-১৯-এর ছোঁয়াচ বাঁচাতে পারবেন।
- খাবার খাওয়ার আগে লবন পানিতে গার্গল করে নিতে পারলে ভাল হয়।
বাসায় ফিরে যা যা করনীয়-
- প্রতিটি কাজেই যেহেতু আমাদের হাতের ব্যবহার আছে তাই সবার প্রথমে বাসায় ঢোকার আগেই ভালোমত হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা।
- বাইরে ব্যবহারের জিনিসপত্র যেমন – মোবাইল, ঘড়ি, চশমা, চাবি ইত্যাদি আলাদা একটি পাত্রে রেখে জীবানু নাশক দিয়ে পরিষ্কার করা যেতে পারে।
- বাসার বাহিরে ব্যবহারের জুতা অবশ্যই বাহিরে রেখে জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে।
- বাসার ভিতরে প্রবেশ করে অন্য কোন কক্ষে প্রবেশ না করে সরাসরি গোসলখানায় গিয়ে ভালোমতো সাবান পানি দিয়ে গোসল করে ফেলা।
- বাইরে পরিধানের কাপড় কমপক্ষে আধাঘন্টা ডিটারজেন্ট দিয়ে ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলা। বাইরে পরিধানের কাপড় প্রতিদিনেরটা প্রতিদিনই ধুয়ে ফেলা উত্তম।
- বাইরে থেকে এসে সম্পূর্ণভাবে নিজে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না হওয়া পর্যন্ত কোন জিনিস স্পর্শ না করাই ভালো। আর কোন জিনিস স্পর্শ করলে ও সেটা জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ফেলতে হবে।
- প্রতিদিনই যাদের বাইরে যেতে হবে অফিসের জন্য তারা খাবার দাবারের প্রতি বাড়তি সচেতন হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আমাদের দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানান, ভিটামিন সি সমৃদ্ধযুক্ত খাবার বেশি বেশি করে খাওয়া, নিয়ম করে গরম পানি, চা খওয়া, শাক সবজি ইত্যাদিতে ভিটামিন প্রচুর আছে এমন খাবার বেশি করে খাওয়া যেতে পারে।
অফিসের জন্য যাদের বাইরে যেতেই হচ্ছে তাদের অবশ্যই বাড়তি সচেতনতার মাধ্যমে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে।তাহলে তার সাথে তার পরিবার ও সুরক্ষা থাকবে। নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার সাথে মনোবল কে ধরে রাখতে হবে, তাহলে এই ভাইরাসের সাথে মোকাবেলা করা যেতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন