Close Menu
    What's Hot

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. হামিদা আক্তার বেগম আর নেই

    নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে মনোরোগবিদ্যা বিভাগের নতুন যাত্রা শুরু

    বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসিডেন্ট ডা. ইয়াকুব আলী সরদারের স্ত্রী ইন্তেকাল করেছেন

    অলসতা কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে

    ইনার হুইল ক্লাব অফ ঢাকা নাইটিংগেলে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

    Facebook X (Twitter) Instagram
    Tuesday, October 21
    Facebook X (Twitter) Instagram
    মনের খবরমনের খবর
    ENGLISH
    • মূল পাতা
    • কার্যক্রম
      1. জাতীয়
      2. আন্তর্জাতিক
      Featured
      কার্যক্রম October 21, 2025

      ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. হামিদা আক্তার বেগম আর নেই

      Recent

      ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. হামিদা আক্তার বেগম আর নেই

      নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে মনোরোগবিদ্যা বিভাগের নতুন যাত্রা শুরু

      বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসিডেন্ট ডা. ইয়াকুব আলী সরদারের স্ত্রী ইন্তেকাল করেছেন

    • প্রতিদিনের চিঠি
    • মানসিক স্বাস্থ্য
      1. মাদকাসক্তি
      2. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা তথ্য
      3. যৌন স্বাস্থ্য
      4. শিশু কিশোর
      Featured
      ফিচার October 7, 2024

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      Recent

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে শেখাবেন

      কর্মব্যস্ততা প্রভাব ফেলে যৌনজীবনে

    • ফিচার
    • প্রশ্ন-উত্তর
      1. বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
      2. মাদকাসক্তি
      3. মানসিক স্বাস্থ্য
      4. যৌন স্বাস্থ্য
      Featured
      প্রশ্ন-উত্তর August 7, 2025

      অতিরিক্ত চিন্তা আমার পড়ালেখার হ্যাম্পার করছে

      Recent

      অতিরিক্ত চিন্তা আমার পড়ালেখার হ্যাম্পার করছে

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      বর্তমানে খুব ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি, কী করবো বুঝতে পারছিনা

    • জীবনাচরণ
      1. অন্যান্য
      2. অপরাধ আচরণ
      3. কুসংস্কার
      4. মতামত
      5. মন ও ক্রীড়া
      6. মন প্রতিদিন
      7. মনোসামাজিক বিশ্লেষণ
      8. সাক্ষাৎকার
      Featured
      সাক্ষাৎকার October 13, 2025

      বর্তমানেও অনেকেই মানসিক রোগকে লজ্জার বিষয় মনে করেন — ডা. মো. শাহেদুল ইসলাম

      Recent

      বর্তমানেও অনেকেই মানসিক রোগকে লজ্জার বিষয় মনে করেন — ডা. মো. শাহেদুল ইসলাম

      পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি ও বিরক্ত কাজ করছে

      ভুল ধারণা ও কুসংস্কার মানসিক রোগ চিকিৎসায় বড় বাধা — ডা. মো. আব্দুল মতিন

    • মনস্তত্ত্ব.
      1. তারকার মন
      2. ব্যাক্তিত্ব
      3. মনস্তত্ত্ব
      Featured
      তারকার মন August 5, 2023

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      Recent

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      প্রসঙ্গ : সাইক্লোথাইমিক ব্যক্তিত্ব

      কার্ল সেগান : যিনি বিশ্বাস করতেন মহাবিশ্ব একটি মমতাপূর্ণ জায়গা

    • করোনায় মনের সুরক্ষা
      1. টিপস্
      2. বিশেষজ্ঞের মতামত
      3. বিশ্ব পরিস্থিতি
      4. সার্বক্ষনিক যোগাযোগ
      Featured
      টিপস্ September 28, 2024

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      Recent

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      প্রবাসীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় MK4C-তে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার পরামর্শ

      পরিবার যেভাবে শিশুকে গড়ে তুলবে

    মনের খবরমনের খবর
    You are at:Home » ওথেলো সিনড্রোম: মনোবিশ্লেষণ-চিকিৎসা
    মানসিক স্বাস্থ্য

    ওথেলো সিনড্রোম: মনোবিশ্লেষণ-চিকিৎসা

    অধ্যাপক ডা. মোহিত কামালBy অধ্যাপক ডা. মোহিত কামালFebruary 11, 2021No Comments8 Mins Read0 Views
    Facebook Twitter Pinterest Telegram LinkedIn Tumblr Email Reddit
    ওথেলো সিনড্রোম: মনোবিশ্লেষণ-চিকিৎসা
    ওথেলো সিনড্রোম: মনোবিশ্লেষণ-চিকিৎসা
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp Email

    বাসার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে রিকশাটি। রিকশা থেকে নেমে আসছে ববি। লাল শাড়ি পরেছে ও। কপালে লাল টিপ। হাতে একটি পলিব্যাগ। দারুণ লাগছে ওকে! গেটের ভেতর ঢোকার সময় ওর চোখ যায় বাড়ির ছাদের ওপর। সেখানে দাঁড়িয়ে আছে রাহুল, ওর স্বামী। শ্যেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে ববিকে। ওদের বাসাটি যেন নরকে পরিণত হয়েছে। পদে পদে ওকে সন্দেহ করা শুরু করেছে রাহুল। দিনে দিনে বাড়ছে সন্দেহের তীব্রতা। বিয়ে হয়েছে মাত্র দু-বছর। এখনো সন্তান হয়নি ওদের। ভালোবাসার বন্ধন গড়ে ওঠেনি রাহুলের মনে। অদৃশ্য আঁধার এগিয়ে আসছে। সে-আঁধার ঘিরে ফেলছে ববির জীবন। ববি এখনো হেরে যায়নি। চেষ্টা করছে রাহুলের অমূলক সন্দেহ দূর করতে। পারছে না। নিজের জীবনও সে গুটিয়ে নেয়নি। স্বাভাবিক থাকারই আপ্রাণ চেষ্টা করছে। বাইরে বাইরে শক্ত থাকলেও ভেতরটা যেন ধসে যাচ্ছে।

    প্রায়ই রেগে থাকে রাহুল। তার কথাবার্তায় বিরক্তি ঝরে পড়ে। মাঝে মাঝে আরোপিত অযাচিত কষ্ট তাকে চেপে ধরে, আতঙ্কগ্রস্ত থাকে, একেবারেই দিশেহারা হয়ে যায় সে। শোবার ঘরে এসে খাটের ওপর ব্যাগটি ছুঁড়ে দেয় ববি। ফ্যান অন করে। এ ঘরে রাখা রকিং চেয়ারে বসে দেহের সব ভার ছেড়ে দিয়ে দোল খেতে থাকে। রিলাক্স হওয়ার জন্য বড়ো করে প্রশ্বাস টেনে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মাথাটা এক পাশে এলিয়ে দেয়। এ সময় শোবার ঘরে ঢোকে রাহুল। ববিকে পর্যবেক্ষণ করে। খাটের ওপর পলিব্যাগটি দেখে। তার মাথায় প্রশ্ন জাগে, এত প্রশান্তি কেন ববির মনে? প্রিয় কারোর সঙ্গে কি তবে ডেটিং সেরে এসেছে? সে-ই কি কোনো গিফট দিয়েছে ববিকে? কী আছে ওতে? ঝড়ের মতোই একটার পর একটা সন্দেহজনক প্রশ্ন জেগে উঠছে রাহুলের মাথায়। এ ধরনের সন্দেহ নিয়ে সে আচ্ছন্ন থাকে প্রায়ই। এই নেতিবাচক আচ্ছন্নতার ঘোরেই ওর মনে হতে থাকে, নিশ্চয় ববি ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে রেখেছে চারদিকে। যেকোনো মুহূর্তে সেই জালে জড়িয়ে ফেলবে ওকেও। খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দিতে পারে- এমন ধারণাও আজকাল বদ্ধমূল হয়েছে ওর। ওকে মেরে ফেলতে পারলেই যেন ববি শান্তি পাবে। তখনই সে সুযোগ পাবে অজানা প্রেমিকের গলায় জড়িয়ে থাকতে। ধীরে ধীরে খাটের দিকে এগিয়ে গেল রাহুল। ব্যাগটি ঘেঁটে দেখে। নিত্যব্যবহার্য ঘরোয়া কাজের অতি দরকারি সামগ্রী ছাড়া কিছুই পেল না সে ব্যাগের ভেতর। তবু মন তার শান্ত হয়নি। সন্দেহের অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে মুখে। এসব নিশ্চয় কৌশল। গোপন কাজ ঢাকার জন্যই নিশ্চয় ববি কৌশলী হয়েছে। নিশ্চয় সে কোনো পুরুষবন্ধুর সঙ্গে এইমাত্র বিছানার কাজ সেরে এসেছে। অসুস্থ, প্যাথলজিক্যাল সন্দেহটি এভাবে ক্রমাগত ঘনীভূত হতে থাকে রাহুলের মাথায়।

    ‘এত দেরি করে ফিরলে কেন?’ গম্ভীর কণ্ঠে জানতে চায় রাহুল।
    ‘ঠিক সময়েই তো এলাম। দেরি হলো কোথায়?’ বিরক্তি নিয়েই জবাব দিল ববি।
    ‘কোথায় গিয়েছিলে?’
    ‘কেন, শপিংয়ে গিয়েছিলাম। তোমাকে তো বলেই গেলাম।’
    ‘সঙ্গে কে ছিল?’
    ‘কেউ না। একাই গিয়েছি।’ জোরালোই শোনাল ববির স্বর।
    ‘চোরের বড়ো গলা। নিশ্চয় কেউ ছিল তোমার সঙ্গে।’ রাহুল বলল।
    ‘মুখ সামলে কথা বলো!’ প্রায় চিৎকার করে উঠল ববি। তীক্ষ্ণ চোখে ববিকে দেখল রাহুল। একসময় ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। ওর বিশ্বাস হতে লাগল নিশ্চয় কারোর সঙ্গে দৈহিক মিলন সেরে এসেছে বউ। এজন্যই এত তেজ। নিশ্চয় সে রোগের জীবাণু নিয়ে এসেছে। নিশ্চয় ওর ভেতর রোগের সংক্রমণ ঘটিয়ে ছাড়বে এই মেয়ে। যেকোনোভাবে হোক, ববি নিশ্চয় প্ল্যান করেছে সব শেষ করে দেওয়ার। নিশ্চয় মেয়েটি তার সেক্সুয়াল ক্ষমতাও বিনাশ করে দেবে।

    মনঃবিশ্লেষণ
    রাহুল প্যাথলজিক্যাল জেলাসিতে আক্রান্ত। এর আরেক নাম ওথেলো সিনড্রোম। এটি এক ধরনের ডিল্যুশনাল ডিজঅর্ডার। এমন রোগে আক্রান্ত হলে দাম্পত্য সম্পর্ক ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়। বিষময় হয়ে ওঠে পারিবারিক আবহ। পুরুষেরা মেয়েদের তুলনায় বেশি ভুগে থাকে এ রোগে। মহিলা ও পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার আনুপাতিক হার (১ : ৩.৭৬)। রাহুলের সন্দেহটি ঘনীভূত বিশ্বাসে পরিণত হলেও এর পেছনে যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই, কোনো গ্রাউন্ডও নেই। যদি এমন আভাস পাওয়া যেত যে ববি সত্যি সত্যি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছে, তাহলে এ অবস্থাকে আর প্যাথলজিক্যাল জেলাসি বলা যাবে না। এ ক্ষেত্রে, মজার ব্যাপার হলো, রোগী জানেই না যে কে সেই কথিত প্রেমিক পুরুষ। দ্ব্যর্থহীনভাবে সেই পুরুষটিকে খুঁজে বের করার তাড়নাও তার মনে কাজ করে না। তবে রোগী সব সময় পার্টনারের পেছনে স্পাইগিরি করতে পারে, এমনকি বেতনভুক্ত কাউকে লাগিয়েও রাখতে পারে গতিবিধি জানার জন্য। রোগী মূলত অবৈধ সম্পর্কের প্রমাণ খুঁজে বেড়ায় অনবরত। সঙ্গীর/সঙ্গিনীর ডায়েরি ঘেঁটে দেখে গোপনে। চিঠিপত্র এলে কৌশলে পড়ে নেয়। বিছানাপত্র কিংবা অন্তর্বাসও অনেক সময় সূক্ষ্মভাবে অনুসন্ধান করে দেখে। কোনো রকম যৌন সম্পর্কের আলামত বের করাই এ ধরনের আচরণের মূল উদ্দেশ্য। এ ধরনের রোগীরা অনবরত পার্টনারকে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে জীবন বিষিয়ে তোলে। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়, মারাত্মক পরিস্থিতি এভাবেই হানা দেয়, দাম্পত্য সম্পর্ক বিপর্যস্ত হয়ে যায়। মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে অনেক সময় পার্টনারকে বাধ্য করা হয়। উত্তেজিত করে তোলা হয়। নিরন্তর প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হতে হতে পার্টনার অনেক সময় মিথ্যা স্বীকারোক্তি করে। নিষ্কৃতি পেতে চায়। এমনটি ঘটলে রোগীর জেলাসি কখনো কমবে না, বরং শাখাপ্রশাখা বিস্তার করে আরো বেশি জটিলতর হতে থাকে। সন্দেহের দাবানল আরো বেশি দাপিয়ে ওঠে রোগীর মন। কেবল এ ধরনের একটি ভ্রান্ত বিশ্বাসের শেকড় প্রোথিত হলে, অন্য কোনো মানসিক রোগের কারণে অমূলক বিশ্বাসটি না ঘটে থাকলে, ডিল্যুশনাল ডিজঅর্ডারই ডায়াগনোসিস করা হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্যাথলজিক্যাল জেলাসি কয়েকটি প্রাথমিক রোগের সঙ্গেও সংযুক্ত থাকতে পারে। এ ধরনের রোগীদের ১৭৪৪ শতাংশের সঙ্গে প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়া, ৩-১৬ শতাংশের সঙ্গে ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার, ৩৮-৫৭% এর সঙ্গে নিউরোসিস এবং পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার, ৫-৭ শতাংশের সঙ্গে অ্যালকোহলিজম ও অন্যান্য মাদক (বর্তমানে এ হার আরো ব্যাপক বলে মনে করা হয়) এবং ৬-২০ শতাংশ ক্ষেত্রে অর্গানিক ডিজঅর্ডার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

    ভায়োলেন্সের ঝুঁকি
    প্যাথলজিক্যাল জেলাসির কারণে ভয়াবহ সহিংসতা ঘটে যেতে পারে। ব্রিটেনে ব্রডমুর হাসপাতালে ভর্তিরত ঘাতক রোগীদের (Homicidal Patients) ওপর পরিচালিত এক গবেষণা রিপোর্টে ডা. মোয়াট দেখিয়েছেন, এদের মধ্যে ১২ শতাংশ মহিলা এবং ১৫ শতাংশ পুরুষ প্যাথলজিক্যাল জেলাসিতে আক্রান্ত ছিল। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, জেলাস রোগী কর্তৃক শারীরিক জখমের মাত্রাও উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। এমনও দেখা গেছে ক্রমাগত তীব্র সন্দেহের জ্বালা সইতে না পেরে অনেক নিরপরাধ পার্টনার আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে কিংবা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।

    রোগীর মূল্যায়ন
    আগাগোড়াই রোগীকে বিস্তারিতভাবে মূল্যায়ন করে দেখতে হবে। প্রথমে দেখতে হবে পার্টনারকে। পার্টনারের সাক্ষাৎকারের পরই রোগীকে মূল্যায়ন করতে হবে। সঙ্গীই জেলাস রোগীর অনুপুঙ্খ তথ্য জানাতে পারবে। আলাদাভাবে অনেক সময় প্রকৃত সত্য রোগীর ভেতর থেকে বের করে আনা কঠিন হয়ে পড়ে। কৌশলের সঙ্গে মূল্যায়ন করে দেখতে হবে কতটুকু অমূলক বিশ্বাস রোগী ধারণ করে। কী পরিমাণ ক্রোধ বা রাগ রোগী বহন করে বেড়াচ্ছে। হিংসাত্মক বা প্রতিশোধপরায়ণ মন রোগীর ভেতর ওত পেতে আছে কি না, খুঁটিয়ে জেনে নিতে হবে সতর্কতার সঙ্গে। কী কী কারণে রোগী উন্মত্ত উত্তেজনায় ফেটে পড়ে কিংবা সঙ্গীকে দায়ী করার মূল কারণ কোথায় গেড়ে আছে, কেন সে পালটাপালটি প্রশ্নবাণে সঙ্গীকে বিপর্যস্ত করে তোলে- সবকিছুই তলিয়ে দেখতে হবে। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে সঙ্গী কীভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, রোগী কীভাবে সেই প্রতিক্রিয়ার জবাব দেয়, বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে খুঁজে দেখতে হবে। ইতিমধ্যে কোনো সহিংসতা ঘটে থাকলে সেটির ভয়াবহতাও যাচাই করতে হবে। এ ধরনের তথ্যানুসন্ধানের পাশাপাশি বিবাহিত এবং সেক্সুয়াল জীবনযাপনের ইতিহাসও জেনে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

    চিকিৎসা
    প্যাথলজিক্যাল জেলাস রোগীদের চিকিৎসা করা বেশ কঠিন। কারণ রোগী মনেই করে না যে কোনো রোগ আছে তার। ফলে চিকিৎসার যেকোনো উদ্যোগই তার কাছে অনধিকারচর্চা ও অন্যায় আচরণ বলে মনে হতে থাকবে। এ কারণেই ঔষধ খেতে চাইবে না রোগী। চিকিৎসাসেবার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গগুলোও অবহেলা করবে সে। চিকিৎসার ব্যাপারে নিম্নলিখিত নীতিমালা অনুসরণ করা যেতে পারে : যদি উপসর্গের আড়ালে সিজোফ্রেনিয়া বা মুড ডিজঅর্ডার থাকে, সেটিই প্রথমে চিকিৎসা করতে হবে। যাদের আত্মবিশ্বাস কম কিংবা ব্যক্তিত্বের সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে ডিল্যুশনাল ডিজঅর্ডার বা প্যাথলজিক্যাল জেলাসিটি ‘ওভার ভেল্যুড আইডিয়ার’ সঙ্গে সম্পর্কিত কি না, যাচাই করে দেখতে হবে। যদি জেলাসিটি প্রকৃতই দৃঢ়ভাবে অমূলক বিশ্বাসের ওপর গড়ে ওঠে, তাহলে অ্যান্টিসাইকোটিক ঔষধ ব্যবহার করতে হবে (মুনরো ’৮৪)। ‘ওভার ভেল্যুড আইডিয়া’ই যদি জেলাসির মূল বিষয় হিসেবে শনাক্ত করা হয়, সেক্ষেত্রে সুনির্দিষ্টভাবে নিউরোট্রান্সমিটর সেরোটোনিন বাড়ানোর ঔষধ, যেমন- ফ্লুওক্সিটিন-জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে (ল্যান ’৯০)। যদি প্যাথলজিক্যাল জেলাসির সঙ্গে প্রাথমিকভাবে ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার সম্পর্কিত না থাকে, তাহলে রোগটি প্রায়ই জটিল থাকে। ক্রমান্বয়ে অবস্থার অবনতি হয়। এসব ক্ষেত্রে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ঔষধ দিয়ে রোগীকে সহযোগিতা করা যায়।

    সাইকোথেরাপি
    নিউরোটিক পারসোনালিটি ডিজঅর্ডারের ক্ষেত্রে রোগীকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। লক্ষ্য হলো, রোগী এবং সঙ্গী উভয়েরই টেনশন কমিয়ে আনা।

    কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি
    এটির মাধ্যমে রোগীকে ভ্রান্ত বিশ্বাসটির অতলে কী ধারণা রয়েছে তা শনাক্ত করার জন্য উৎসাহিত করা হয় এবং সেই জেলাস চিন্তাগুলো চ্যালেঞ্জ করা হয়। ফলে রোগীর ভেতর যে নেতিবাচক ধারণা জট পাকাতে থাকে সেটির গিঁট শিথিল হয়ে আসে, ইতিবাচক ধারণা জাগতে থাকে, অবস্থার উন্নতি হয় (বিসেহ ’৮৯)।

    আচরণগত চিকিৎসাসেবা
    এ ধরনের চিকিৎসার মাধ্যমে অবস্থার উন্নতি ঘটানো যায়। এ ক্ষেত্রে সঙ্গীকে এমন ধরনের আচরণের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয় যা রোগীর জেলাসির অগ্ন্যুৎপাতে পানি ঢেলে দিতে পারে, শীতল করতে পারে রোগীকে (কোব ও মার্কস ’৭৯)। এ ধরনের আচরণের মধ্যে আছে ক্ষেত্রবিশেষে ‘কাউন্টার অ্যাগ্রেশন’ দেখানো, বিতর্কে জড়িয়ে না পড়া বা বিতর্ক পরিহার করা ইত্যাদি। কখন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে যদি বহির্বিভাগের চিকিৎসায় রোগীর উন্নতি না হয়, যদি ভায়োলেন্সের সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে, তাহলেই রোগীকে ভর্তি করানো উচিত।

    সতর্কতা
    পার্টনারকে ভায়োলেন্সের বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে বুঝিয়ে দিতে হবে, সাবধান থাকার ব্যাপারে পরামর্শ দিতে যেন ভুল না হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেপারেশনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আবার দেখা গেছে, নতুন সম্পর্কে প্রবেশ করলেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।

    রোগের ফলাফল
    ল্যাংগফিল্ড নামক একজন গবেষক ২৭ জন রোগীকে ১৭ বছর ফলোআপ করেছেন। ফলাফলে দেখা গেছে, প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্থায়ী জেলাসি রয়ে গেছে কিংবা পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। ফলাফল খারাপ হলেও নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞান এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। মানসিক চিকিৎসাসেবার মান সব দিক থেকেই উন্নত হচ্ছে। মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার পথ সহজতর হচ্ছে বিশ্বজুড়ে।

    সূত্র: লেখাটি মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত।

    মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিন ক্রয়ের বিশেষ অফার

    স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
    করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
    মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে

    https://youtu.be/WEgGpIiV6V8

    ওথেলো সিনড্রোম চিকিৎসা
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Reddit WhatsApp Telegram Email
    Previous Articleআমার স্বামী অল্পতেই রেগে যায়
    Next Article সঙ্গীর মন বুঝতে বিয়ের আগেই কাউন্সেলিং!
    অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল

    প্রাক্তন পরিচালক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট।

    Related Posts

    যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

    October 7, 2024

    যেসব চিকিৎসায় খরচ কমছে

    June 7, 2024

    ওথেলো সিনড্রোম : সঙ্গীকে নিয়ে অহেতুক ভয় ও সন্দেহ করার একটি মানসিক রোগ

    May 20, 2024
    Leave A Reply Cancel Reply

    Top Posts

    অতিরিক্তি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়

    July 25, 2021316 Views

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    June 30, 2025300 Views

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025209 Views

    পর্নোগ্রাফি থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ দূরে রাখবেন যেভাবে

    March 13, 2022118 Views
    Don't Miss
    কার্যক্রম October 21, 2025

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. হামিদা আক্তার বেগম আর নেই

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. হামিদা আক্তার বেগম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া…

    নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে মনোরোগবিদ্যা বিভাগের নতুন যাত্রা শুরু

    বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসিডেন্ট ডা. ইয়াকুব আলী সরদারের স্ত্রী ইন্তেকাল করেছেন

    অলসতা কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে

    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    প্রকাশক ও সম্পাদক:
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
    মোবাইল : (+88) 018-65466594, (+88) 014-07497696
    ইমেইল : info@monerkhabor.com

    লিংক
    • মাসিক ম্যাগাজিন প্রাপ্তিস্থান
    • কনফারেন্স-সেমিনার-ওয়ার্কশপ
    • প্রেজেন্টেশন
    • জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
    রিসোর্স
    • পরিচালনা পর্ষদ
    • মানসিক বিষয়ে সংগঠন
    • বিশেষজ্ঞ লোকবল
    • নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
    সোশ্যাল মিডিয়া
    • Facebook
    • YouTube
    • LinkedIn
    • WhatsApp
    © 2025 মনেরখবর সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • গোপনীয়তা নীতি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Ad Blocker Enabled!
    Ad Blocker Enabled!
    Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please support us by disabling your Ad Blocker.