ছয় বছর বয়সী আল-হাশর। এ বয়সে সমবয়সীদের সাথে হেসে-খেলে স্কুলে যাওয়ার কথা। কিন্তু তাকে বন্দি থাকতে হচ্ছে বাঁশের তৈরি খাঁচায়। সারাদিন খাঁচার মধ্যেই তার জগৎ, খাওয়া দাওয়া ও খেলাধুলা। এভাবেই গত এক বছর ধরে বেড়ে উঠছে বগুড়ার সারিয়াকান্দির আল-হাশর।
আল-হাশরের বাবা-মা দুজনই গার্মেন্টস কর্মী। দাম্পত্য কলহের জেরে বিবাহ বিচ্ছেদ না হলেও দেড় বছর ধরে পৃথকভাবে বসবাস করেন ঢাকায়। শিশুটি জানে না তার কী অপরাধ। প্রতিবেশীরা জানান, জন্মের পর মাথাসহ শরীর সব সময় গরম থাকতো। শিশুটি বড় হওয়ার সাথে সাথে সমস্যা বাড়তে থাকে। একা ছেড়ে দেয়া হলেই শক্ত কোন বস্তুর সাথে মাথা আঘাত করে এবং অন্যদের মারধর করে।
একজন গ্রাম বাসী বলেন, ‘বাচ্চাটাকে দেখে আমাদের খুব কষ্ট হয়। সঠিক চিকিৎসা হলে বাচ্চাটা সুস্থ হয়ে যেতো।’
বাবা-মা রেখে যাওয়ার পর শিশুটিকে লালন পালনের দায়িত্ব পড়ে বৃদ্ধা দাদী আজিরন বেওয়া’র। ঢাকা ও বগুড়ায় শিশুটির অনেক চিকিৎসা করানোর পরও চিকিৎসকরা তার রোগ নির্ণয় করতে পারেননি। সমবয়সী ছেলেদের সাথে খেলতে গেলেও তাদেরকে মারধর করে। ইটের দেয়াল কিংবা বড় গাছ দেখলেই মাথা দিয়ে আঘাত করে সেখানে। ফলে খাঁচাবন্দি করে রাখতে হচ্ছে বলে জানান স্বজনরা।
শিশুটির দাদি বলেন, ‘বাবা মা রেখে গেছে। বাইরে বের হলে মারধর করে তাই খাঁচাবন্দি করে রেখেছি।’
শিশুটির চাচা বলেন, ‘ওর চিকিৎসা করানোর মত টাকা পয়সা আর আমাদের নাই।’
বিষয়টি জানতে পারে শিশুটির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রায়হানা ইসলাম।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সারিয়াকান্দির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এরইমধ্যে বলা হয়েছে তার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা’
৮ বছর আগে বিয়ে হয় সুজন মিয়া এবং ইতি বেগমের। বাবা মার একমাত্র সন্তান আল-হাশর।