আপনি দিবাস্বপ্নে আসক্ত?

স্বপ্ন কেবল রাতঘুমে নয়, জেগে জেগে দিনেও দেখা যায়! প্রতিটি মানুষই দিবাস্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। কিন্তু কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, যদি দিনে স্বপ্ন দেখার হার বেশি হয় এবং তা আপনার প্রাত্যহিক জীবন-যাপনকে বাধাগ্রস্ত করতে শুরু করে, তাহলে বুঝতে হবে, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করার সময় এসে গেছে।
মনোবিজ্ঞান এ বিষয়টিকে বলছে ‘ম্যালাডাপটিভ ডেড্রিমিং’।
কিভাবে বুঝবেন, আপনি দিবাস্বপ্নে আসক্ত এবং এর ঝুঁকি কি কি? বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, প্রথমেই একটি বিষয় আপনাকে গুরুত্বের সঙ্গে বুঝে ফেলতে হবে। তা হলো, ‘ডেড্রিমিং’ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। শুধু তাই নয়, বিষয়টি স্বাভাবিক এবং কখনও কখনও বরং স্বাস্থ্যকর।
সাইকোলজি টুডে’র মতে, ৯৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি তাদের প্রাত্যহিক স্বপ্ন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। যদিও বিষয়টি পরিষ্কার হয়নি, কেন আমরা স্বপ্ন দেখি। অনেক মনোবিজ্ঞানী কারণ হিসেবে বলছেন, আমাদের আচার-ব্যবহার মস্তিষ্ককে কাজ করতে সহায়তা করে। একইসঙ্গে যখন আমাদের বাইরে থেকে প্রেরণার প্রয়োজন হয়, তখন কাজের দিকে ধাবিত হতে মস্তিষ্ককে তৈরি করে। দিবাস্বপ্ন এর অংশ হতে পারে।
তবে ভিন্ন মত দিচ্ছেন ইসরায়েলের হাইফা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলী সোমার।
তিনি বলেছেন, অতিমাত্রায় দিবাস্বপ্ন দেখা মনস্তাত্ত্বিক অসঙ্গতি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এ নিয়ে সম্প্রতি দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে ‘সাইন অব ম্যালাডাপটিভ ডেড্রিমিং’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন তিনি।
তার গবেষণা অনুযায়ী, ডেড্রিমারস্‌রা দিনের অধিকাংশ সময় স্বপ্ন দেখেই কাটিয়ে দেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে সোমার বলেন, ৫৭ শতাংশ সময়ই তারা ব্যয় করে ফেলেন এভাবে। শুধু তাই নয়, তার‍া নানা ধরনের স্বপ্ন দেখেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের স্বপ্ন বড় হয় না। প্রেরণাদায়ক কিছু যে তারা দেখেন, এমনটিও নয়। কখনও কখনও তাদের স্বপ্নে হাজির হয় কল্প বা ঐতিহাসিক চরিত্র, সেলিব্রেটি এবং ব্যক্তি নিজেকে সফলতার যে চূড়ায় দেখতে চান- স্বপ্নে নিজেকে সেই চরিত্রে দেখতে পান।
ব্যক্তি ভেদে স্বপ্নের বিষয়বস্তুর পার্থক্য খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের স্বপ্নে মূলত বাস্তব জীবনকেন্দ্রিক অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ হয়। যেমন, তিনি লটারি জিতেছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল অনুযায়ী, ম্যালাডাপটিভ ডেড্রিম‍ারদের ক্ষেত্রে অ্যাটেনশান-ডেফিসিট এবং অবসেসিভ-কমপালসিভ সিম্পটমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। জ্যাকসনভাইলের ২৭ বছর বয়সী রাচেল বেনেট বলেন, ‘যদিও আমি দিনের অধিকাংশ সময় ঘরে থাকতাম, কিন্তু দিবাস্বপ্নে বাইরেই থাকতাম বেশি’।
সোমার আরও বলছেন, জীবনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে নিজেকে আড়াল করতে বা কঠিন কোনো বাস্তবতা থেকে পালানোর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ম্যালাডাপটিভ ডেড্রিমিং হতে পারে।
সূত্র: সাইকোলজি টুডে

Previous articleশিশুদের স্থূলতা ও বিষণ্ণতা হাতে হাত ধরে চলে, বলছে গবেষণা
Next articleবিয়ের কথা শুনলেও ভয় লাগে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here