আত্মহত্যা কেন ভালো চিন্তা নয়?

মনোরোগের লক্ষণগুলো অনুভব করা খুবই ভয়ংকর। অনেকে প্রতিদিন এইসব লক্ষণ নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে, তারা প্রায়ই এতটাই হতাশা বোধ করে যে, তারা তাদের জীবনকে অবসান করতে চায়। আত্মহত্যা কখনোই ভাল চিন্তা নয়। কেন নয়?
১। মনোরোগের লক্ষণসমূহ ক্রমেই বাড়তে থাকে। আপনি যদি এসব লক্ষণকে পাত্তা না-ও দেন, তবু এগুলো বাড়তে থাকে। যার মাধ্যমে এসব লক্ষণ থেকে মুক্তি পেতে পারেন, এমন অনেক পথও রয়েছে । এই মুহূর্তে কিছুটা ভালো অনুভব করার জন্যে, নিম্নলিখিতগুলো চেষ্টা করুনঃ

  • আপনি যা অনুভব করছেন তা এমন কাউকে বলুন যাকে আপনি পছন্দ করেন এবং বিশ্বাস করেন। ভালো লাগা শুরু না হওয়া পর্যন্ত তাদের সাথে কথা বলুন। তারা তাদের জীবনে কী ঘটছে জানালে মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
  • এমন কিছু করুন যা আপনি উপভোগ করেন, যা আপনি করতে ভালবাসেন, যেমন: হাঁটা, ভালো কোন বই পড়া, পোষা প্রাণীর সাথে খেলাধুলা করা, ছবি আঁকা অথবা গান গাওয়া।
  • কিছু ব্যায়াম করুন – যেকোন ধরণের গতিবিধি আপনাকে আরও ভালো অনুভব করাবে। শ্রমসাধ্য হতে হবে তা কিন্তু নয়।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান। যেমন: সালাদ, ফলমূল, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি।
  • সুস্থ হওয়া ও সুস্থ থাকার জন্য একটি লক্ষণ পর্যবেক্ষণ ও প্রতিক্রিয়া কর্মসূচি (Wellness Recovery Action Plan) গড়ে তুলুন এবং ব্যবহার করুন।
  • যখন আপনি ভালো অনুভব করবেন, তখন আপনি অনেক চমৎকার অভিজ্ঞতা লাভ করবেন – উষ্ণ বসন্তের দিনগুলো, তুষারময় শীতের দিনগুলো, বন্ধুদের সাথে হাসি-ঠাট্টা, বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করা, ভালো চলচ্চিত্র, মজাদার খাবার, ভালো সঙ্গীত দেখা, শোনা, অনুভব করা। আপনি যদি বেঁচে না থাকেন, তাহলে আপনি এই সবকিছুকে হারাবেন।
  • আপনি যদি নিজের জীবনকে শেষ করে ফেলেন, আপনার পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়বে। তারা কখনোই এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারবে না। তারা এই ব্যাপারে চিন্তা করবে এবং সারাজীবনের মতো আপনাকে প্রতিদিন মনে করবে। যদি আপনার কাছে বাক্স ভর্তি পরিবারের ছবি থাকে, তাহলে যাদেরকে আপনি ভালোবাসেন তাদের কিছু ছবি বাছাই করুন এবং আপনার বাসার মধ্যে প্রদর্শন করুন, তা আপনাকে যেন মনে করিয়ে দেয় যে, আপনি তাদেরকে কখনোই কষ্ট দিতে চান না।

২। যখন মনোরোগের লক্ষণসমূহ আরো তীব্র হয়, তখন নিজের পক্ষে ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া কষ্টকর হয়। কোনো ভুল সিদ্ধান্ত  না নিতে, যেমন নিজের জীবন ধ্বংস করা, কিছু প্রতিরোধক প্রক্রিয়া গ্রহণ করার মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

  • আপনার বাসায় থাকা পুরাতন ওষুধ এবং যেকোনো আগ্নেয়াস্ত্র থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
  • যখন আপনি খারাপ লক্ষণসমূহ অনুভব করা শুরু করবেন, আপনার গাড়ীর চাবি, ক্রেডিট কার্ড ও চেকবই অন্য কারোর কাছে হস্তান্তর করুন।

আশেপাশে অনেক ভালো মানুষ আছে, যারা জীবনের এ রকম কঠিন সময় থেকে আপনাকে বের হয়ে আসতে সাহায্য করবে। তারা আপনার পরিবারও হতে পারে কিংবা বন্ধু-বান্ধব। আপনি তাদের সাথে একটি পদ্ধতি গড়ে তুলুন, যখন আপনার লক্ষণসমূহ বিকট আকার ধারণ করে, যেন তারা আপনার সাথে সবসময় থাকতে পারে । যদি আপনার কোনো পরিবার বা বন্ধু-বান্ধব না থাকে যারা আপনাকে সাহায্য করতে পারে, তাহলে আপনি লোকাল মানসিক স্বাস্থ্য ইমারজেন্সি সার্ভিসের সাথে যোগাযোগ করুন এবং জেনে নিন আপনার কি করতে হবে।
তথ্যসূত্র: সাইকসেন্ট্রাল ডটকমে প্রকাশিত  Mary Ellen Copeland এর আর্টিকেল থেকে ভাষান্তর করেছেন সৈয়দা সারা।
লিংক: https://psychcentral.com/lib/suicide-not-a-good-idea/

Previous articleসিলেট পার্কভিউ মেডিকেল কলেজে যৌন সমস্যার সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা বিষয়ক বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্টিত
Next articleগান মনে শান্তি আনে বলেই চিকিৎসায় গান থেরাপি ব্যবহার করা হয়: রথীন্দ্রনাথ রায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here