মানব জীবনে ঘুম বিধাতার এক অপূর্ব দান। আর ঘুমের সাথে সাথে স্বপ্নকে আমরা বোনাস হিসাবে পেয়েছি। যারা ঘুমান তারা সবাই স্বপ্ন দেখি; কারো মনে থাকে, কারো থাকে না। চাইলেই আমরা আমাদের সব স্বপ্ন মনে রাখতে পারি না। অনেকে আমরা অনেক সময় দিনের বেলা দিবা স্বপ্ন দেখি আবার অনেকে নিজের মনের আকাঙ্ক্ষাকে স্বপ্ন হিসাবে বাঁচিয়ে রাখি এবং সেটাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচি, বেঁচে থাকার চেষ্টা করি। স্বপ্ন নিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। এটাকে ছিন্ন বিছিন্ন করে বের করার চেষ্টা করা হয়েছে স্বপ্নের আদ্যোপান্ত। আজকে আমরা মানুষ কীভাবে স্বপ্ন দেখে সেটা নিয়ে পূর্বের কিছু গবেষণা প্রাপ্ত তথ্য আলোচনা করব।
অনেক ভাবে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করেছেন আসলে মানুষ কীভাবে স্বপ্ন দেখে এবং সেটা নিয়ে নানা মতামত প্রচলিত আছে। সর্বাধিক পুরান মতবাদ হিসাবে প্রচলিত আছে সিগমুণ্ড ফ্রয়েড এর মতবাদ। তিনি বলেন, মানুষ সেইগুলোই স্বপ্নে দেখে যেগুলো তার অবচেতন মনে থাকে এবং এতে বাস্তবে প্রকাশ করা যায় না বা প্রকাশ করলে পারিপার্শ্বিকতার সাথে মিলে না। কাজেই স্বপ্নের মধ্যে সেই অংশটুকু বাস্তবের সাথে মেলানোর চেষ্টা করা হয়। এই মতবাদের অনেক বৈজ্ঞানিক সমালোচনা বিদ্যমান।
আরেকদল বিজ্ঞানীর মতবাদ পাওয়া যায় যে, মানুষ তার মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপের ফলশ্রুতিতে স্বপ্ন দেখে। মানুষ তার ঘুমের যে অংশে স্বপ্ন দেখে ওই অংশে মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বেশ বেড়ে যায়। এই বেড়ে যাওয়া কার্জকালাপের জন্য মানুষ স্বপ্ন দেখে। এই মতবাদেরও বৈজ্ঞানিক সমালোচনা বিদ্যমান। আরও অনেকে এই মতবাদের ওপর কাজ করার চেষ্টা করেছেন।
আমাদের অনেকেই হয়তো মনে মনে ভাবতে পারেন যে আমি দিনে যা ভাবি তাইতো স্বপ্ন দেখি। এটা তাহলে কীভাবে সম্ভব? আরেকদল বৈজ্ঞানিক মনে করেন মানুষের টিকে থাকার জন্য যে জিনিসগুলো প্রয়োজন বা ভবিষ্যতে প্রয়োজন হতে পারে সেগুলোই স্বপ্নে দেখে। এটা হয়তো অনেকে মিলেয়ে নিবেন নিজেদের ভাবনার সাথে। এর বিপরীতে অনেকে বলতে পারেন যে, অনেকের প্রয়োজন তো অনেকে নিজেই জানে না আবার ভবিষ্যতের প্রয়োজন এখন জানবো কীভাবে? আপনি আমি সহ আরও অনেকের মনে স্বপ্ন নিয়ে আরও অনেক স্বপ্ন, আরও অনেক প্রশ্ন ঘুরছে, যার সমাধান হিসাবে আরও অনেক মতবাদ, আরও অনেক গবেষণা ফলাফল আমরা পাবো সেই প্রত্যাশায় রইলাম।