নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা দেয়ার জন্য দেশি-বিদেশি এনজিও ও প্রতিষ্ঠানগুলো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ঐসব প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দু’বছর ধরে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা দেয়া ডাক্তার নাজিয়া মৌ (ছন্দনাম) কিছু অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
ডা. নাজিয়া জানান, শুরুর দিকে চিকিৎসা সেবা দিতে ভাষাগত কিছু সমস্যার সৃষ্টি হলেও তাদের কে সহযোগিতা করার জন্য সেরকম ব্যাবস্থা করা হয়েছে। এবং স্বাভাবিক ভাবেই তারা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্বে বয়ে চলা করোনা ভাইরাস অন্য সব পেশার মানুষের চিকিৎসকদের কাছে ও আতংকের বিষয়।
দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় সে আতংক আরো বেড়ে গেছে। তবে এরকম আতংকের বিষয়ের মধ্যেও রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ডা. নাজিয়া। কারণ, তার মতে একজন চিকিৎসকের ধর্মই সেবা দেয়া, আর সে সেবাই ধর্ম মেনে সর্তকতার সাথে সে তার চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
মানসিকভাবে কিছুটা চাপে থাকলেও তিনি তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তার এই মানসিক চাপটা তার নিজের চেয়েও পরিবারের জন্য বেশি হয়, কারণ তাকে দিনশেষে পরিবারের কাছেই যেতে হয় এবং কোনভাবে তার থেকে তার পরিবার আক্রান্ত যাতে না হয়ে যায়, সে ব্যাপারটা তাকে কিছুটা ভাবায়। যদিও চিকিৎসা সেবা দেয়ার সময় পিপিই, মাস্ক সব ধরনের সুরক্ষা ব্যাবস্থা নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।
তবে করোনা ভাইরাসের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোগীরা আগের তুলনায় কম সেবা নিতে যাচ্ছে, যেখানে এর আগে প্রতিদিন প্রায় ১২০ জনের মতো রোগী দেখা হতো, সেখানে বর্তমানে ৩০ থেকে ৫০ জনের মতো রোগী আসছে। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন আর চিকিৎসা সেবা নিতে রোগীরাও হাত ধুয়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান করছেন।
সব রকম সর্তকতা অবলম্বন করার ফলে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা সহজ হচ্ছে ডা. নাজিয়ার। তিন নিজেকে মানসিক ভাবে দুর্বল হতে দেন না। এবং তার প্রার্থনা খুব দ্রুতই করোনার এই পরিস্থিতি থেকে সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।
লিখেছেন: সৈয়দা মুমতাহিনাহ সোনিয়া