জীবনসঙ্গী খুঁজে নেওয়ার কাজটি সহজ নয় কখনই। তা সে যেভাবেই করুন না। তবে সেকাজে সফল হওয়ার লক্ষ্যে সবার জন্যই কিছু না কিছু পরামর্শ আছে নতুন এক গবেষণার নথিতে। ‘প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সাইন্স’য়ে প্রকাশিত হয়েছে সেই গবেষণা।
গবেষণার প্রধান, কানাডার ওন্টারিও’তে অবস্থিত ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ইন লন্ডন’য়ের সহকারী অধ্যাপক সামান্থা জোয়েল আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন’কে এক বিবৃতিতে জানান, “একটি সফল ও সুখী দাম্পত্য জীবনের উপকরণগুলো কী তা বহু বছর ধরে বিশেষজ্ঞরা জানার চেষ্টা করছেন। তবে তাদের বেশিরভাগ গবেষণাই একসঙ্গে মাত্র কয়েকটি নির্ভরশীল বিষয় নিয়েই কাজ করেছে।”
জোয়েল ও তার সহকর্মীরা এই গবেষণার জন্য পর্যালোচনায় এনেছেন ১১ হাজারেরও বেশি দম্পতির তথ্য। এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে প্রতিটি দম্পতিকে গড়ে এক বছর ধরে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে।
উদ্দেশ্য ছিল নারী ও পুরুষ তাদের মধ্যকার সম্পর্কের মান সম্পর্কে কতটুকু জ্ঞান রাখে সেটা জানা এবং কোন মাপকাঠিতে সম্পর্কের মান যাচাই করা যায় তা শনাক্ত করা।
তারা জানতে পারেন, সম্পর্ক নিয়ে নিজের বিবেচনা অর্থাৎ একজন মানুষ তার সম্পর্ক নিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট বা সঙ্গীর প্রতি তার আন্তরিকতা কতটুকু, এই বিষয়গুলোর ওপরেই সম্পর্কের মান অনেকটা নির্ভরশীল।
জোয়েল সিএনএন’কে বলেন, “সম্পর্কের সন্তুষ্টির ক্ষেত্রে সঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নিচ্ছেন তার চাইতেও জরুরি বিষয় হল দুজনের মধ্যকার জুটিটা কেমন। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, সঙ্গী হিসেবে যাকে বেছে নিচ্ছেন, যে আপনার ‘টাইপ’ কি-না বা সে আপনি যেমনটা চান তেমন কি-না সেদিকে বেশি নজর দেওয়া জরুরি নয়। বরং জরুরি হল পরস্পরের সঙ্গে আপনারা কীভাবে মেলামেশা করেন এবং সেই মেলামেলা আপনাকে সন্তুষ্ট করে কি-না সেটা যাচাই করা।”
কিছু বিষয় সম্পর্কের মান পরিমাপ করতে বিশেষ কার্যকর। গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের সম্পর্কে মান যাচাই করেছেন তাদের বয়স, লিঙ্গ, উপার্জনের মাত্রা, ব্যক্তিত্ব, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং তাদের মধ্যকার সম্পর্কের বৈশিষ্ট্য যেমন- পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ, কলহ, সহর্মিতা ইত্যাদি মানদণ্ডের ভিত্তিতে।
সম্পর্কের যে বৈশিষ্ট্যগুলো সন্তুটির মাত্রা যাচাই করতে সবচাইতে কার্যকর ছিল সেগুলো হল- সঙ্গীর প্রতিশ্রতিবদ্ধতার প্রতি ভরসা, আকর্ষণ, যৌন সন্তুষ্টি, সঙ্গীর সন্তুষ্টির মাত্রার ধারণা এবং মত-বিরোধ।
অপরদিকে একজন মানুষের ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যের ওপর সম্পর্কের সন্তুষ্টি গবেষণার শুরুতে নির্ভরশীল ছিল ২১ শতাংশ। গবেষণার শেষদিকে তা গিয়ে পৌঁছায় ১২ শতাংশে।
সম্পর্কের সন্তুষ্টির ওপর সবচাইতে প্রভাবশালী ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যগুলো হল প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় সন্তুষ্টি, নেতিবাচকতার মাত্রা, হতাশা, পারস্পারিক মেলামেশা নিয়ে অস্বস্তি, মেলামেশায় অনিহা ইত্যাদি।
জোয়েল বলেন, “মজার ব্যাপার হল, সঙ্গীর ব্যক্তিত্ব এবং সম্পর্ক নিয়ে মনোভাব খুব কম গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা গেছে। তবে সময়ের সঙ্গে সম্পর্কে সন্তুষ্টির মাত্রা কীভাবে পরিবর্তীত হয় সেটা গবেষকরা শনাক্ত করতে পারেননি।
প্রেমের ক্ষেত্রে
সম্পর্কের গতিবিধি পরিবর্তনে দিকে নজর রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সম্পর্ক শুধুই দুটি মানুষের চাওয়া পাওয়া সমষ্টি নয় বরং এর নিয়ত পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারাও সম্পর্কে সন্তষ্টি বজায় রাখার জন্য সমান জরুরি। আর ধারাবাহিকতাও এখানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
আজ যে বিষয়গুলো আপনার সম্পর্ককে প্রভাবিক করছে ভবিষ্যতেও তার প্রভাব বিদ্যমান থাকবে। আপনার আজকের অনুভূতিই বলে দেবে ভবিষ্যতে সম্পর্কের প্রতি আপনার অনুভূতি কেমন হবে।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন