করোনা মহামারী আমাদেরকে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। তবে মহামারী পরবর্তী সামাজিক জীবনে ফিরে সবার সাথে মিশে স্বাভাবিক জীবন শুরু করাটাও সত্যিই মানসিক, ব্যবহারিক, সামাজিক ও স্নায়বিক দিক থেকে বেশ কঠিন।
করোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে আমরা আমাদের দৈনন্দিন ও সামাজিক জীবন, কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষা ব্যবস্থা সব কিছুই নিজের ঘরের মাঝে গুটিয়ে নিয়েছি। করোনার এই নিউ নরমালের সাথে মানিয়ে নিতে আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেদের প্রস্তুত করতে হয়েছে। একটু একটু করে আমরা নিজেদের মাঝে এই মনোভাব তৈরি করেছি যে মহামারীর সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে গেলে আমাদেরকে নিজেদের জীবনে ও মননে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। মহামারীর এই সুদীর্ঘ সময়ে আমরা এভাবেই নতুন পরিবর্তিত অবস্থার সাথে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছি। কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা যতই আমাদের করোনা পূর্ববর্তী জীবনে ফিরে যাবার সুযোগ পাচ্ছি ততোটাই অনুভব করতে পারছি যে এই কাজটিও সহজ নয়। তবে প্রক্রিয়াটি আমাদের শুরু করতে হবে ধীরে ধীরে। নিচে কিছু কিছু কৌশল উল্লেখ করা হল যেগুলো আমাদের এই গোটা প্রক্রিয়াটিতে সহায়তা করবে।
১) আগের এবং বর্তমানের সাথে একটি মেল বন্ধন তৈরি করুন
এমনটা ভেবে নেওয়া উচিত হবেনা যে, আমরা চোখের নিমিষে সব কিছুর সাথে মানিয়ে নিতে পারবো, আমাদের কোন সমস্যা হবেনা। আমাদেরকে বর্তমান অবস্থার সাথে পূর্বের অবস্থার একটি মেল বন্ধন তৈরি করতে হবে। হয়তো এখন আমরা স্বাভাবিক ভাবে বাইরে যেতে পারছিনা, কিন্তু মহামারী পরিস্থিতির উন্নতি হলে পারবো। কিন্তু তখনও আমাদেরকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। কিছুটা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আমাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আনন্দ যেমন থাকবে, তেমনি কিছুটা সুরক্ষা বিধি বজায় রেখেও চলতে হবে। দুয়ের মধ্যে মেল বন্ধন করে মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
২) চর্চা
এটা কখনোই আশা করা উচিৎ নয় যে আমরা যেভাবে ধীরে ধীরে কোভিড যুগে প্রবেশ করেছিলাম সেরকম টা না করে আমরা আবার চট করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবো। এই অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে যেমন আমাদের সময় এবং চর্চা উভয়ই লেগেছে, তেমনি করোনা পরবর্তী সময়ে নিজেদের স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে যাবার জন্যেও সময় এবং চর্চা উভয়ই প্রয়োজন। আর এ জন্য নিজেদের মাঝে মানসিক চাপ সৃষ্টির কোন প্রয়োজন নেই। বরং ধীর স্থিরভাবে পরিস্থিতিটা সামলে নিতে হবে।
৩) সুস্থতাকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করুন
করোনা মহামারী দুর্বল হয়ে গেলেও আমাদের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে কম গুরুত্ব দিলে চলবে না। বাইরে যাবার সময়কে একটি নিয়মে আবদ্ধ করে ধীরে ধীরে সামাজিক মেলামেশা শুরু করতে হবে। পুনরায় বাইরের জীবনে প্রবেশ করার এই সময়ে মন,মস্তিস্ক এবং শরীরকে খাপ খাইয়ে নিতে কিছু কিছু করনীয় চিহ্নিত করতে হবে যেগুলো আমাদেরকে মানিয়ে নিতে সহায়তা করবে।
এই পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ে অন্যান্যদের সাথেও আলোচনা করতে পারেন। সবার মতামত এবং নিজের মতের মেল বন্ধনে একটি ধীর স্থির এবং সামাঞ্জস্যপূর্ণ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে মানসিক ও শারীরিকভাবে কোভিড পরবর্তী সময়ের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে তুলতে পারেন। এতে শারীরিক সুস্থতা এবং মানসিক স্থিতি উভয়ই বজায় থাকবে।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
সূত্র: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/nurturing-self-compassion/202105/languishing-in-the-time-covid
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে