মস্তিষ্ক চাঙা রাখতে যে বিশেষ কিছু খাবার প্রয়োজন, তা অনেকেরই অজানা। গ্রীষ্মের তীব্র গরম আমাদের মস্তিষ্ককে দুর্বল আর নিস্তেজ করে দেয়। তাই মস্তিষ্ককে চাপমুক্ত ও সতেজ রাখতে দরকার প্রশান্তিদায়ক পানীয়।
কয়েকটি বিশেষ পানীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। যা আপনার মস্তিষ্ককে সতেজ ও চাপমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
লেবুপানি
লেবুপানি আমাদের কাছে স্বাভাবিকভাবেই বেশ পরিচিত। লেবু সহজেই পাওয়া যায় বলে যেকোনো সময়েই এই পানীয় আমরা তৈরিও করে নিতে পারি। লেবুতে আছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আর পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ উপাদান। এক গ্লাস লেবুপানিতে মস্তিষ্ক তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায়।
এছাড়া মস্তিষ্ককে সতেজ করে সারাদিন সক্রিয় রাখতেও কার্যকর ভূমিকা রাখে। শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। তাই যথেষ্ট পানির প্রয়োজন হয়। এর সঙ্গে সামান্য লেবুর রসের সংযোজন নানাভাবে সহায়ক। বিশেষ করে মুড ফেরাতেও কাজ করে লেবুর রস।
হলুদের চা
হলুদ বললেই আমরা মসলার কথা ভাবি; যা আমাদের রান্নার অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু হলুদ দিয়ে পানীয়ও তৈরি সম্ভব, যাকে বলা হয় হলুদ চা। হলুদের আদি জন্ম দক্ষিণ ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায়। হাজার বছর ধরে খাবারে ও ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই হলুদ।
হলুদ চায়ের উপকারিতা অনেক। তবে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের জন্য হলুদের চায়ের জুড়ি নেই। হতাশার মতো সমস্যা কমাতে ও স্মরণশক্তি বাড়াতে হলুদ দারুণ কাজ করে। এছাড়া অ্যালঝাইমারের মতো মস্তিষ্কের অসুখ সারাতেও সাহায্য করে।
গ্রিন টি
সবুজ চাকে মস্তিষ্কের জন্য উপকারী পানীয় বলা হয়। শুনতে অবাক লাগলেও হাজার বছর আগেও কিন্তু মানুষের কাছে পানীয় হিসেবে জনপ্রিয় ছিল গ্রিন টি। প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় গ্রিন টিকে প্রাকৃতিক পানীয়ও বলা যায়।
যেহেতু এটি চা, তাই এতেও ক্যাফেইন রয়েছে কিন্তু কফির বা দুধ চায়ে যতটা থাকে, ততটা নয়। অল্প পরিমাণে থাকায় গ্রিন টি থেকে ক্যাফেইনেরও উপকারিতা পাওয়া যায়।
মস্তিষ্কের সতেজ থাকা বা নিস্তেজ হওয়া নির্ভর করে অ্যাডেনোসিনের ওপর। গ্রিন টিতে থাকা ক্যাফেইন অ্যাডেনোসিনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এতে আমাদের মস্তিষ্ক থাকে সজাগ আর তীক্ষ্ণ। ক্যাফেইন ছাড়াও গ্রিন টিতে পাওয়া যায় এল-থ্যানাইন নামের অ্যামিনো অ্যাসিড, যা মস্তিষ্কের চাপ কমায়, স্মরণশক্তি বাড়ায় আর মস্তিষ্ককে রাখে চাঙা।
গরম চকলেট
পছন্দের তালিকায় চকলেট নেই, এমন মানুষ মনে হয় পাওয়া মুশকিল। তবে চকলেটের মধ্যেই কিন্তু আছে নানা রকম। সাধারণত দুই ধরনের চকলেট বেশি পরিচিত। এক ধরনের চকলেটের সঙ্গে দুধ, চিনি ও অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে নতুনভাবে তৈরি করা হয়। আর কিছু হলো চকলেটের স্বাভাবিক স্বাদ, যাকে বলা হয় ডার্ক চকলেট। এই চকলেটে চিনি বা দুধ কিছুই মেশানো হয় না।
একটি গবেষণায় দেখা যায়, গরম গরম ডার্ক চকলেট মস্তিষ্ককে সক্রিয় ও এর স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়া মস্তিষ্ক ভিটামিন, মিনারেল ও অক্সিজেন পায়। আসলে কোকোয়াতে আছে প্রাকৃতিক ফ্ল্যাভেনল, যা মনোযোগ বাড়াতে ও স্মৃতিশক্তিকে প্রখর করতে সহায়তা করে।
বিটরুট জুস
গাঢ় লাল রঙের এ সবজির নাম অনেকেই জানেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিটরুট বেশ উপকারী। মস্তিষ্কের জন্য অসাধারণ কার্যকর এক গ্লাস বিটরুট জুস। একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে বিটরুট। ব্যায়াম করার আগে বিটরুট জুস খেলে মস্তিষ্ক সচল থাকে। এছাড়া বলা হয়, মস্তিষ্ককে স্মার্ট করতে সাহায্য করে বিটরুট জুস।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে