‘ব্রে্ইন-ইটিং অ্যামিবা’ বা ‘মগজ/মস্তিষ্কো-খেকো অ্যামিবা’র শিকার হয়ে ২০১২ সালে পাকিস্তানের করাচিতে মারা গিয়েছিলেন অন্তত ১০ জন। সম্প্রতি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে মারা যান ২৯ বছর বয়সী এক যুবক। টেক্সাসের এ ঘটনার পরপরই আবারো আলোচনায় উঠে আসে এ ভাইরাসটি।
ফাবরিজিও স্ট্যাবল নামের ওই যুবক গত সেপ্টেম্বরে টেক্সাসের বিএসআর কেবল পার্ক ও সার্ফ রিসোর্টে ঘুরতে যান। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার কয়েকদিন পরই মাথাব্যথা অনুভব করেন তিনি। এক সময় ওই ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করে। শেষের দিকে তিনি বিছানা থেকে উঠতে ও কথা বলতেও পারছিলেন না।
অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসকরা তার স্পাইনাল ফ্লুইডে ‘মগজ-খেকো অ্যামিবা’র উপস্থিতির খুঁজে পান। পরবর্তীতে পার্কের পানি পরীক্ষা করলে সেখানেও এ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ২৯ বছর বয়সী ফাবরিজিও মারা যান। এরপর থেকেই পার্কটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
‘নাইজেলরিয়া ফ্লাওয়ারি’ নামের মস্তিষ্ক-খেকো এ অ্যামিবা দূষিত পানির মাধ্যমে ছড়ায়। পানির মাধ্যমে নাক দিয়ে এ ভাইরাস মস্তিষ্কে ঢুকে যায় এবং এক পর্যায়ে স্নায়ু ধ্বংস করে ফেলে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি, নদী, পুকুর, হ্রদ ও ঝরনার পানি যেখানে উষ্ণ, সেখানে এ ধরনের অ্যামিবার বসবাস। এছাড়া, শিল্পকারখানার উষ্ণ পানি পড়ে এমন মাটি ও সুইমিংপুলেও এদের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
ভাইরাসটিতে আক্রান্তের মৃত্যুর হার ৯৫ শতাংশ। কারণ, এ ভাইরাসে আক্রান্তরা প্রথমে কিছু বুঝতে পারে না। আক্রান্ত হওয়ার ৯ দিন পর তারা মাথায় ব্যথা অনুভব করেন। ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। সেই সেঙ্গে শরীরও দুর্বল হয়ে পড়ে। ভয়ঙ্কর এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার মাত্র ১৮ দিনের মাথায় আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যান। আর মরণঘাতী এ ভাইরাসের সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বা ওষুধ এখনো উদ্ভাবন হয়নি।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পরামর্শ, মগজ-খেকো অ্যামিবাযুক্ত পানি নিরাপদেই খাওয়া যাবে তবে নাক দিয়ে যেন পানি না ঢোকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
অনুবাদ করেছেন:আছিয়া নিশি
সূত্র: সিএনএন
https://edition.cnn.com/2018/10/12/health/tx-brain-eating-amoeba-confirmed-bn/index.html