ঢাকাফেরত এক নারী হাসপাতালকর্মীকে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তালপাতা দিয়ে বানানো একটি ঝুপড়িঘরে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোরে এসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা।
ঢাকার ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসকের অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে চাকরি করা ওই নারীর (২১) বাড়ি কোটালীপাড়া উপজেলার লখণ্ডা গ্রামে।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পর ওই হাসপাতালের কয়েকটি বিভাগ বন্ধ রাখা হয়েছে। সে কারণে গত মঙ্গলবার বাড়ি ফেরেন ওই নারী।
তিনি বলেন, তার ফেরার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী জড়ো হয়। বাড়ির প্রায় ৪০০ মিটার দূরে পুকুরপাড়ে তালপাতা দিয়ে ঝুপড়িঘর তৈরি করে সেখানে তাকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বাধ্য করে তারা।
“আজ প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আমি এখানে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর জীবনযাপন করছি। খুব কষ্ট হচ্ছে। একজন হাসপাতালকর্মী হিসেবে আমি অনেক মানুষকে সেবা দিয়েছি। আর আজ এখানে থেকে আমার জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। মানুষ যে এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে তা আমার আগে জানা ছিল না।“
তার মা সাংবাদিকদের বলেন, “আমার স্বামী নেই। আমার মেয়েটাই একমাত্র উপার্জনক্ষম। তার আয়ে আমার সংসার চলে। এলাকার প্রশান্ত বাড়ৈ চাপ সৃষ্টি করে আমার মেয়েকে এভাবে ঝুপড়ি ঘরে রেখেছে। আমার মেয়ের যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে এর দায় কে নেবে?”
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রশান্ত বাড়ৈ ওই প্রতিবেদককে বলেন, “এলাকাবাসীর সিদ্ধান্তেই তাকে পুকুর পাড়ে ঝুপড়িঘরে কেয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আমি একা কোনো সিদ্ধান্ত দিইনি। এখন অপরাধ হলে সবার হবে। এখানে আমার একার কোনো দায় নেই।”
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মাহফুজুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক। এলাকাবাসী তাকে এভাবে না রেখে আমাদের জানালে আমরা তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখতে পারতাম।”
ওই নারীকে উদ্ধার করে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সূত্র: বিডি নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম।