মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার ক্রিকেটারদের পেছনে ছুটোছুটি করা ব্যক্তিটি হলেন ফিল জন্সি। প্লেয়ার’রা অনুশীলনে ঘাম ঝরাচ্ছেন আর তাদের পেছনে খাতা-কলম নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছেন আরেকজন। যেন তাঁর ব্যস্ততার শেষ নেই। মাঠে কিংবা ড্রেসিং রুমে সাকিব আল হাসান’দের মানসিক সাহস বাড়ানোর জন্যই তাঁর প্রতি বিশ্বাস রেখেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এর আগে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলের সাথেও ফিল কাজ করেছিলেন। বড় টুর্নামেন্টের আগে ক্রীড়া মনোবিদ নিয়োগ বিশ্বে নতুন নয়। যে কোনও বড় ইভেন্টের আগে কী ভাবে মনের দুশ্চিন্তা বা ধোঁয়াশা দূর করে নিজের ভেতরে থাকা ক্ষমতাকে আরও ইতিবাচক করে তোলা যায়, তারই মাস্টারমশাই এই ফিল। বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জুনে মাইন্ড ট্রেনার অ্যালান ব্রাউনিকে নিয়োগ করেছিলেন চন্দ্রিকা হাথুরুসিংহে। সে কাজ করেছিলেন মাত্র ২ সপ্তাহ। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই সর্বোচ্চ সংস্থা কেন খেলোয়াড়দের জন্য স্থায়ী কোনো মনোবিদ নিয়োগ করছেন না এই বিষয়েও রয়েছে নানা ধোঁয়াশা।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট টিমের সাবেক মেন্টাল স্কিল কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব-এর কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন-
“এভাবে হঠাৎ করে দু-এক সপ্তাহের জন্য কেউ এসে খেলোয়াড়দের কতটুকু উপকার করতে পারবে কে জানে? উপকারের চেয়ে বরং কনফিউশন তৈরি করার আশঙ্কাই বেশী থাকে। কারণ এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। প্রতিটি প্লেয়ারের চিন্তা-ভাবনা এবং তাদের অবস্থা বুঝতেই অনেক সময় চলে যাবার কথা। কে কীভাবে ভাবছেন সেটা বুঝতেই যেকোনো মানুষের কিছুটা সময় লাগে। এভাবে সাধারণ কিছু স্কিল হয়তোবা আয়ত্ত করা সম্ভব। কিন্তু মানসিক প্রয়োগের জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করবে সে জন্য খেলোয়াড়দের ভিতরে পরিবর্তন আনা বা পরিবর্তনের তাগিদ অনুভব করাটা জরুরি। খেলোয়াড় হিসেবে আমি কীভাবে, কখন কেমন সাপোর্ট নিবো সেটাও জানা দরকার। এটা অভ্যস্ততার বিষয়। তা করতে না পারলে প্রয়োজনের সময় সেই দক্ষতা ব্যবহার করা কঠিন। বাংলাদেশ টিম ভালো করুক আমরা চাই। সবার জন্য শুভকামনা।”
২০২৩ বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার আশা বাংলাদেশ টিমের। এর জন্য দরকার ফেয়ারলেস ক্রিকেট। ড্রেসিং রুমে প্লেয়ারদের মানসিক পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন করাই হবে জন্সির মূল কাজ। অতীতে দুবার বাংলাদেশ দলের সঙ্গে কাজ করেছেন জন্সি। যদিও জন্সি পেশাদার মনোবিদ নন বরং পারফরম্যান্স সাইকোলজিস্ট বলে পরিচিত তিনি। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলের খুব বেশী প্রয়োজন তাঁকে। যেন যে কোনো সময় যে কোনো প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করতে পারে টাইগাররা।