বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে শুধু আনন্দ-বিনোদনের জন্য কেউ খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে না, বরং প্রতিটি খেলোয়াড়ই চায় জয় এবং সফলতা। আর এই সফলতা শুধু একজন খেলোয়াড়ের শারীরিক যোগ্যতার উপরই নির্ভর করে না, এর সাথে দরকার কিছু মানসিক দক্ষতার। যার মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দক্ষতা হলো মানসিক দৃঢ়তা।
মাইকেল শিয়ার্ড তাঁর, The Achievement Mindset: Understanding Mental Toughness” বই-এ কিছু চিন্তা উদ্রেককারী প্রশ্ন তুলে ধরেছেন। যেগুলো হলো-
১. বড় মঞ্চের কোনো সফল খেলোয়াড়কে চাপে ভেঙ্গে পড়া খেলোয়াড় থেকে কোন জিনিষটা পার্থক্য করে দেয়?
২. কিছু কিছু খেলোয়াড় বিভিন্ন বাঁধা-বিপত্তিকে পেরিয়ে কীভাবে সফলতা অর্জন করে?
৩. ব্যক্তিগত পরাজয় আর ব্যর্থতার পরও কীভাবে একজন খেলোয়াড় জয়ের ধারায় ফিরে আসে?
অনেকেই মনে করেন যে, এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তরেই মূল ভূমিকা পালন করে একজন খেলোয়াড়ের মানসিক দৃঢ়তা।
মানসিক দৃঢ়তার ধারণা এখন আর নতুন কিছু নয় এবং বর্তমানে এ বিষয়ে অনেক বেশি গবেষণা ও লেখালেখি হচ্ছে। ফলে স্পোর্টস সাইকোলজিস্ট, কোচ এবং খেলোয়াড়গণ এখন সবাই এটা অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছেন যে শুধু শারীরিক যোগ্যতা আর মেধা সফলতার গ্যারান্টি দিতে পারে না।
প্রত্যেক প্রতিযোগিতাই আসলে শরীর ও মনের সংযোগ নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষা। তবুও অনেক খেলোয়াড় কোনো রকম মানসিক প্রস্তুতি না নিয়ে কেবল দিনের পর দিন শারীরিকভাবে প্রস্তুতি নিতে থাকে। অথচ যেসব খেলোয়াড় শারীরিক প্রশিক্ষণ নেয়ার পাশাপাশি মানসিক ভাবেও প্রস্তুতি নেয়, তারা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি এগিয়ে যায়।
Gucciardi, Gordox এবং Dimmock ২০০৯ সালে খেলোয়াড়দের মানসিক দৃঢ়তার উপর গবেষণা চালিয়ে দেখেন যে, শারীরিক যোগ্যতা আর মেধা যখন সমান হয়, তখন এই মানসিক দৃঢ়তাই বড় খেলোয়াড়দের অন্যদের থেকে আলাদা করে ফেলে। শুধু মেধা দিয়ে সফলতা অর্জন করা যায় না এবং এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে যেখানে মেধাবী ও দক্ষ খেলোয়াড়দের মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ার কারণে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়েছেন আর কম দক্ষ খেলোয়াড়রা সফল হয়েছেন তাদের মানসিক দৃঢ়তার কারণে।
তাই যদি খেলোয়াড় এবং কোচগণ সম্মিলিতভাবে শারীরিক ও মানসিক প্রশিক্ষণের সমন্বয় ঘটাতে পারেন, তাহলে সব ধরনের প্রতিযোগিতাতেই ধারাবাহিক ভাবে ভালো পারফরম্যান্স বজায় রাখা সম্ভব বলে আশা করা যায়।
প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।