সতেজ খাবার, সবল মানসিক স্বাস্থ্য

0
39
সুস্থ খাবার, সতেজ মন

সুস্থ শরীর পেতে চায় সতেজ খাবার। কিন্তু খাবার যে শুধু শরীরকেই ঠিক করে তা নয়। সুষম খাদ্যের উপাদানগুলি শরীরের পাশাপাশী মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও খুব দরকারী। ভালো খাবার খেলে মনও ভালো থাকে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক, মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কার্যকরী খাবারগুলো সম্পর্কে।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, চর্বিযুক্ত মাছ, আখরোট, ফ্লাক্সসিড, চিয়াসিডে এসব মানসিক কার্যকলাপ ভালো রাখতে পারে। ২০১৭ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন চাহিদামতো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড জাতীয় খাবার খেলে এটি মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। প্রকৃতিতে নানা তৈলাক্ত মাছ বিদ্যমান, যাতে প্রচুর পরিমাণে রেডিমেড ডিএইচএ ও ইপিএ আকারে থাকে। এ-জাতীয় খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে তার ব্যবহার শুরু হয়ে যায়। ডিপিএ মাত্রা কম থাকলে ডিমেনশিয়া ও মেমোরি লসের ঝুঁকি বাড়ে।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্টজাতীয়: ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই-এর অভাবে ডিমেনশিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, গেছে গ্লুটাথায়ন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অ্যালজাইমার রোগের ফলে হওয়া অক্সিডেটিভ চাপ কমাতে কার্যকর। ডার্ক চকলেটে কোকো নামের একধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে। ফ্ল্যাভোনয়েডগুলো মস্তিষ্কের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়। এই ফ্ল্যাভোনয়েড মস্তিষ্কের স্মরণশক্তি ও শেখার সঙ্গে জড়িত নিউরন এবং রক্তনালি বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে। এগুলো মস্তিষ্কে রক্ত​প্রবাহকেও উদ্দীপিত করতে পারে।

দানাশস্য: লাল চাল, লাল আটা বা এ থেকে তৈরি খাবার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। মস্তিষ্কের কোষগুলোর জন্য শরীরের অন্য কোষের চেয়ে বেশি শক্তি প্রয়োজন হয়। গ্লুকোজ একমাত্র জ্বালানি, যা সরাসরি মস্তিষ্কে ব্যবহৃত হয়। লো-জিআইসমৃদ্ধ খাবারগুলো রক্তে ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে, সারা দিন মানসিকভাবে সচেতন থাকতে সাহায্য করে আর মনোযোগী করে তোলে। এসব খাবারে ভিটামিন ই থাকে, যা স্মৃতিশক্তির অবক্ষয় কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

ভিটামিন ই: বিভিন্ন প্রকার বাদাম থেকে ভিটামিন ই মেলে সহজে। এ ছাড়া সবুজ শাকসবজি, জলপাই তেল, ডিম, লাল চাল থেকে ভিটামিন ই পাওয়া যায়। আমেরিকান একটি গবেষণার তথ্যমতে, প্রতিদিন পর্যাপ্ত ভিটামিন ই গ্রহণ বয়স্কদের স্মৃতিশক্তির অবক্ষয় কমাতে সাহায্য করে।

জামজাতীয় ফল: ‘শর্ট টার্ম মেমোরি লস’ কমাতে কালোজাম কার্যকর। এ ছাড়া গাঢ় লাল ও বেগুনি ফল আর সবজিতে এই কার্যক্ষমতা আছে।

ডিম: বিশেষভাবে বয়স্কদের ওপর পরিচালিত একটি নিরীক্ষা থেকে দেখা যায়, যাঁরা নিয়মিত ভিটামিন বি৬, বি১২ ও ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করেন, তাঁদের তুলনামূলক কম স্মৃতিশক্তির অবক্ষয় ঘটে। এ ছাড়া ভিটামিন বি১, বি৩ ও কোলিন মস্তিষ্কের প্রাত্যহিক কার্যক্রম চালাতে সাহায্য করে। মুরগির মাংস, মাছ, সবুজ শাকসবজি, বিভিন্ন বাদাম—এগুলোও ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভালো উৎস।

সবুজ শাকসবজি: পালংশাকসহ বিভিন্ন সবুজ শাক ও ব্রকলির মতো পাতাযুক্ত শাকসবজিতে ভিটামিন কে, লুটিন, ফোলেট এবং বিটা ক্যারোটিনের মতো মস্তিষ্কের জন্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টি উপাদান রয়েছে। গবেষণা পরামর্শ দেয় যে উদ্ভিদভিত্তিক এই খাবারগুলো স্মরণশক্তি হ্রাসের গতি ধীর করতে সাহায্য করতে পারে।

চা বা কফি: প্রতিদিন সামান্য কিছু ক্যাফেইন গ্রহণ করলে মানসিক ক্রিয়াকলাপ ভালো থাকে। ক্যাফেইন নতুন নতুন স্মৃতি শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

মেজাজ নিয়ন্ত্রণের হরমোন তৈরিতে খাবার

সেরোটোনিন একটি পদার্থ, যা রক্তের হরমোনের মতো আচরণ করে এবং মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে, যা মন ভালো রাখার হরমোন নামে পরিচিত। চর্বিযুক্ত মাছ, বিভিন্ন বাদাম, কলা, ডার্ক চকলেট, টক দই, ফ্লাক্সসিড, চিয়া সিড ইত্যাদি খাবার তালিকায় রাখলে সেগুলো মন ভালো রাখতে সাহায্য করবে।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন:করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪
Previous articleমাইন্ডস্পেস এর মানসিক স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক হটলাইন ‘ভেন্ট’
Next articleআত্মহত্যার কথা মনে আসে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here