অন্যান্য সমস্যার সাথে সাথে অভিভাবকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অনগ্রসরতা। করোনা আমাদের স্বাভাবিক জীবনের অন্যান্য কাজে যেমন বাঁধা বিপত্তি সৃষ্টি করেছে তেমনি শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় সৃষ্টি করেছে এক বড় অনিশ্চয়তা। কিভাবে শিশুদের এই স্বাভাবিক শিক্ষা গ্রহণ সঠিক নিয়মে চালিয়ে নেওয়া যায় সেটি এখন অভিভাবকদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
করোনা মোকাবেলায় আমাদের হাতে এখনো কোন কার্যকরী প্রতিষেধক এসে পৌঁছায়নি। সামাজিক দূরত্ব এড়িয়ে চলা ছাড়া করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকার এখন পর্যন্ত কোন উপায় আমাদের জানা নেই। স্বাভাবিক সকল কাজ থেকে বিরত হয়ে এ কারণে দীর্ঘদিন পৃথিবী ব্যাপী সবাই গৃহবন্দী জীবনযাপন করছে। শিশুরাও বহু দিন ধরে প্রাতিষ্ঠানিক সকল শিক্ষা গ্রহণ থেকে দূরে রয়েছে। শিশুদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিশ্বব্যাপী সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। আর ঠিক কবে নাগাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে, বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও সেখানে শিশুদের পাঠানো কতোটা নিরাপদ হবে এসব নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। সবাই চায় তাদের স্বাভাবিক শিক্ষা জীবন যেন ব্যহত না হয় এবং এটি যেন স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই চলে। কিন্তু কিভাবে সেটি চলতে পারে, কিভাবে শিশুরা আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরতে পারে এটি নিয়ে যেমন অভিভাবকেরা চিন্তিত তেমনি চিন্তিত সরকার।
প্রতিটি পরিবারে যেখানে বিদ্যালয় পড়ুয়া শিশুরা রয়েছে সবাইই অত্যন্ত চিন্তিত সময় পার করছে। পরিস্থিতির উপর যেমন আমাদের কারও নিয়ন্ত্রণ নেই তেমনি আমরা জানিনা ভবিষ্যতে ঠিক কি হবে। এমন অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এবং শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় অনগ্রসরতা নিয়ে তাই সবার এমন দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা, হতাশা এবং মনের মাঝে অনিশ্চয়তা থাকাই স্বাভাবিক। শিক্ষার জন্য কোন অভিভাবকই তাদের সন্তানদের জীবন সংশয়ে ফেলতে রাজি নন। আবার করোনা যদি তাদের স্বাভাবিক শিক্ষা জীবন চরম ভাবে ব্যহত করে সেটিও হবে তাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। স্বাভাবিকভাবেই তাই সকল অভিভাবক এখন উভয় শঙ্কটে দিনানিপাত করছেন।
আমাদেরকে সকল কিছুর ঊর্ধে উঠে মনে রাখতে হবে যে আমাদের এই দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগ যেমন স্বাভাবিক তেমনি এটাও মনে রাখা প্রয়োজন এর মাধ্যমে আমরা এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কোন সমধানও খুঁজে পাবনা। আমরা যা ই করবো সেটি পর্যাপ্ত নয়। শিশুদের শিক্ষা গ্রহণ অবশ্যই প্রয়োজন কিন্তু সেটি কখনোই জীবন সংশয় করে নয়। তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বদলে যদি ঘরে রেখে নিজেদের মত করে, নিজেদের প্রচেষ্টায় শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হয় সেটি হবে এই মুহূর্তে সব থেকে নিরাপদ ব্যবস্থা। কারণ প্রতিটি পরিবারের যেমন সামর্থ্য সমান নয় তেমনি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা কঠিন। তাই শিশুদের নিয়ে অধিক দুশ্চিন্তা না করে তাদেরকে পারিবারিক ভাবে শিক্ষা দিয়ে তাদের মানসিক ও শারীরিক উন্নয়নে সহায়তা করুন। করোনা কালে অভিভাবকেরাও অধিক সময় পাচ্ছেন তাদের সন্তানদের সাথে সময় কাটানোর। এই সুযোগটি কাজে লাগান। এতে করে যেমন আপনাদের দুশ্চিন্তা কমবে তেমনি শিশুদের শিক্ষাও সম্পূর্ণ রূপে বাঁধাগ্রস্ত হবেনা।
শিশুদের নিয়ে ভালো সময় কাটান। দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন, সুরক্ষিত থাকুন। সুন্দর ভবিষ্যৎ অবশ্যই আসবে।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন