করোনা মহামারীর সময়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্ত রোগী ও অন্যদের ক্ষেত্রে সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড চালু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞগণ।
শনিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরামের নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন অনলাইন আলাপচারিতায় অংশ বিশেষজ্ঞরা করোনা পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড এর বিষয়টিকে তুলে ধরেন।
বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. জিয়াউদ্দিন হায়দার এর সঞ্চলনায় আলোচনায় অতিথি হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্য বিভাগের অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন নাহার, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ ও জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির মেন্টাল হেলথ বিভাগের প্রকল্প পরিচালক ডা. এম তাসদিক হাসান।
“আমরা এখন স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের মধ্যে আছি, ছয় মাস পার হয়ে গেলে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের মধ্যে অনেকে চলে আসবে। এখন থেকেই সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড চালু করতে পারলে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার কমানো সম্ভব হবে” বলেন অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন নাহার।
স্বজন হারানো,চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আমরা অসন্তুষ্টি ও অনিশ্চয়তার কারণে হতাশা-উদ্বিগ্নতা বাড়ছে, দারিদ্র্যতা বৃদ্ধি আমাদের মানসিক অবস্থার ওপর প্রভাব ফেলছে। এছাড়া স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিশুরা বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে পারছে না। যারা একটু বড়, আবেগ কাজ করে, তারা প্রিয়জনদের সঙ্গে মিশতে পারছে না। এসব কারণে তাদের হতাশা-উদ্বেগ বাড়ছে। স্লিপ-সাইকেল চেঞ্জ হয়ে যেতে পারে। বাবা-মা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকলে বাচ্চারা সেপারেশন অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারে ভুগতে পারে, বলেও মনে করেন অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন নাহার।
সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড এর গুরুত্ব তুলে ধরে ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘করোনাকালে শিশু-কিশোরদের মানসিক চাপ বেশি। কারণ বাবা-মায়ের মানসিক চাপ তাদের ভেতরে সংক্রমিত হচ্ছে। যারা সরাসরি সেবা দিচ্ছেন, তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর ঘাটতি আছে। কষ্টকর পোশাক পরে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টার কাজ করছেন। তারপরও সামাজিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, স্বীকৃতির অভাব রয়েছে। পরিবারের কেউ সংক্রমিত হলে তারা নিজেদের দায়ী করছেন। তাদের মেন্টাল হেলথ ঠিক রাখার দায়িত্ব টিম লিডারদের। মনে রাখতে হবে, কোভিড-১৯ মোটেই হানড্রেড মিটার রেস না, এটা ম্যারথন। আমি নিজে সরাসরি আইসিইউতে গিয়ে কথা বলেছি, চিকিৎসকদের মনোবলে ঘাটতি নেই। তবে প্রশাসনের কিছু সিদ্ধান্তের কারণে মানসিক কষ্ট তৈরি হয়েছে। সেই জায়গায় যেন প্রশাসন সচেতন হয়।’
ডা. তাসদিক বলেন, “যারা মানসিক সমস্যায় আছেন, তারা যদি হাসপাতালে যেতে না পারেন তাদের চিকিৎসা পদ্ধতি কী হবে? সব ধরনের ডিসঅ্যাবিলিটি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। অনেক তথ্য যা এখনও বিজ্ঞানসম্মত না, সেগুলো আমরা বিশ্বাস করছি। যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাবে ফেলছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নারী চিকিৎসকদের স্ট্রেস অনেক বেশি। এটার পেছনে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয় কাজ করে। তাদের সামজিক সুরক্ষাও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। স্যোশাল স্টিগমাগুলো দেখা যাচ্ছে, ডাক্তারদের বাসা থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। সেখানেও প্রশ্ন আছে, রাষ্ট্র কেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে না?”
সম্পূর্ণ আলোচনাটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন:
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন