কোভিড ১৯ বিশ্বব্যাপী তৈরি করেছে হতাশা,অস্থিরতা এবং উদ্বেগের। স্বজন হারানোর বেদনা এবং চাপা কান্নাকে সাথে নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যেতে হয়েছে চিকিৎসকদের। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান,বিএপি এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা.আর কে এস রয়েল (সহযোগী অধ্যাপক) বিশ্বমারীর প্রথম থেকেই ওয়ার্ড ম্যানেজমেন্ট,একাডেমিক কার্যক্রম এবং বিভাগের চিকিৎসকদের সুরক্ষার ব্যাপারে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন এবং দায়িত্ব বন্টন করে দেন।স্যারের সাথে ছিলেন আরও চার জন সম্মানিত সহকারী অধ্যাপক।
বর্তমানে সহকারী রেজিস্ট্রার এর পদে কেউ পদায়িত নাই।সাইকিয়াট্রি বহির্বিভাগে একজন মেডিকেল অফিসার পদায়িত আছেন।এমডি রেসিডেন্সি কোর্সের আওতায় আছেন মোট ১৪ জন।বর্তমানে দুই জন বেসরকারি রেসিডেনট মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন।১৪ জনের মধ্যে প্রেষনে অর্থাৎ সরকারি চাকুরীতে কর্মরত আছেন ৯ জন।সিওমেকহাতে করোনা ইয়েলো জোন শুরু হবার পর থেকেই সরকারি চাকুরীতে রত ৯ জনই ডিউটি করেছেন ইয়েলো জোনে এবং যা এখনও চলমান।তাদের মধ্যে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হোন।তারা হলেন ডা.মোহাম্মদ হাসান,ডা.শুভ্র তুষার সিংহ এবং ডা.আফরোজা আক্তার।এদের মধ্যে ডা.শুভ্র তুষার সিংহের পুরো পরিবার আক্রান্ত হয়।ডা.আফরোজা আক্তারের তিনবার পজিটিভ আসে এবং হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।ডা.জসিমউদদীন,ডা.রফিক এবং ডা.রেজোয়ানা হাবিবা বাসায় তাদের ছোট বাচ্চা রেখে ইয়েলো জোনে ডিউটি করেছেন।
মার্চের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর এর শেষ পর্যন্ত প্রায় ১০০০০ রোগী মনোরোগ বিদ্যা বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন।ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩১০ জন।এর মধ্যেই চলেছে একাডেমিক ক্লাস এবং অনলাইন প্রেজেন্টেশন।এছাড়া অনলাইনে চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং কাউন্সিলিং কার্যক্রম চালু ছিলো প্রথম থেকেই।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে আমাদের শিক্ষক,সাদা মনের মানুষ,সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা.গোপাল শংকর দে স্যার মারা যান।ভার্চুয়াল শোক সভা আয়োজন করা হয় বাপসিল এবং সিওমেক মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের পক্ষ থেকে।বর্তমানে করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন সহকারী অধ্যাপক ডা.মুবিনউদ্দিন স্যার।স্যারের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।
প্রথম দিকে সুরক্ষা সামগ্রীর সংকটের সময় আমাদের বিভাগীয় প্রধান এবং বাংলাদেশ এসোসিয়েশান অফ সাইকিয়াট্রিস্টস এর উদ্যোগে আমাদের সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়। এরকম একটা জাতীয় ক্রাইসিস মূহুর্তে এ জনপদের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে কাজ করার পাশাপাশি আমরা করোনা রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করে গর্বিত।
একদিন বিশ্বমারী কেটে গেলেও স্মৃতিগুলো থেকে যাবে মনে।চিকিৎসকরা জনগণের শ্রদ্ধা,ভালবাসা এবং আস্থায় থাকুক।মহামারী আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের চিত্রটি তুলে ধরেছে।অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে।ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি একজন বিভাগীয় প্রধান হিসেবে শ্রদ্ধেয় আর কে রয়েল স্যার কর্ম চাঞ্চল্যের এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আমাদের সামনে।মানুষ আশায় বাঁচে।সামনে ভালো দিন আসবে এই আশায় পার করছি কঠিন সময়।
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে