ওডিনোফোবিয়া: ব্যথাজনিত ভয়

0
70
ওডিনোফোবিয়া: ব্যথাজনিত ভয়
ওডিনোফোবিয়া গ্রিক শব্দ। ওডেন অর্থ ব্যথা ও ফোবিয়া অর্থ ভয়। ওডিনোফোবিয়া হলো ব্যথার ভয় বা তীব্র ব্যথা হওয়ার ভয়। এটি পেইন ফোবিয়া নামেও পরিচিত।

শারীরিক ব্যথা স্বাভাবিকভাবেই একটি কষ্টকর ব্যাপার। কখনও কখনও এ অনুভূতি সহ্যের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। তবে ওডিনোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা অন্যান্যদের তুলনায় বেশি স্পর্শকাতর হয়ে থাকেন। ফলে অসুস্থতা, আঘাত ও মানসিক কারণে অনুভূত ব্যথার ক্ষেত্রে তারা খুব বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

অনেক সময় খুব সাধারণ ব্যথা যার ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও চলে, সেখানে ওডিনোফোবিয়ায় আক্রান্তরা খুব বেশি ভয় পেয়ে যান।

কারণ
অতীতের কোনো ভয়াবহ অভিজ্ঞতার উপলব্ধি থেকে ওডিনোফোবিয়ার জন্ম। বলা হয়ে থাকে, যারা খুব বেশি অনুভূতিপ্রবণ তাদের মধ্যে এ ফোবিয়া বেশি দেখা দেয়। অনেক সময় কেউ যদি তার আপনজনদের দীর্ঘ সময় ধরে কোনো দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে দেখেন বা ব্যথায় কাতর হতে দেখেন, তাহলে তাদের মধ্যে সেই ভয় কাজ করে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যারা তীব্র পেটে ব্যথায় কষ্ট পান তারা সামান্য পেটে ব্যথা হলে আগে থেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ব্যথা বেড়ে যেতে পারে বা বাড়লে কতটা কষ্ট হবে তা ভেবে অনেকে আগে থেকেই ওষুধ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।

লক্ষ্মণ
পেইন ফোবিয়া বা ব্যথার ভয় অনেক সময় বিষণ্ণতা, ইনসমনিয়া, সিজোফ্রেনিয়ার কারণ হতে পারে। শরীরের ব্যথার তুলনায় অনেক সময় মনের এ ভয়টাই স্বাস্থ্যহানির মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ওডিনোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কিছু লক্ষ্মণ দেখা দেয়।

ব্যথা অনুভূত হলে কাঁপুনি, ঘেমে যাওয়া, চিৎকার করে কাঁদা, বারবার ঢোক গেলা, শরীর অনড় অবস্থায় রাখা ও নড়াচড়া না করা। অনেক ক্ষেত্রে রোগীর মনে হয়, একটু নড়লে ব্যথা আরও বাড়বে। এছাড়াও চোখে ঝাপসা দেখা, ও শরীর জ্বালাপোড়াও করতে পারে। এক্ষেত্রে সাধারণত রোগী নতুন কোনো ওষুধ বা ব্যথা নিরাময়ক পদক্ষেপ নিতে ভয় পান। আবার একই সঙ্গে অনেকে অনেক রকম পদ্ধতি অবলম্বন করেন। যেমন- বিভিন্ন ওষুধ, পথ্য, মলম ইত্যাদি।

সমাধান
ওডিনোফোবিয়ার চিকিৎসা হিসেবে ওষুধ ও আচরণগত থেরাপি, উভয়ই রয়েছে। তবে ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী, ভয় বা দুশ্চিন্তা দূরীকরণের জন্য ওষুধ সেবন প্রাথমিকভাবে সমস্যা সমাধান করলেও, তা পরবর্তীতে আর কাজ করে না বরং কিছুদিন পর এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে বিভিন্ন থেরাপি দেওয়া যেতে পারে। এসব থেরাপিতে রোগীদের ব্যথার বিভিন্ন লেভেল বোঝানো হয়, যার ফলে তারা সহ্যক্ষমতা ও তীব্র ব্যথার পর্যায়গুলো সম্পর্কে অবগত হন।

হিপনোথেরাপি ওডিনোফোবিয়া এর ক্ষেত্রে বিশেষ কাজ করে। হিপনোথেরাপি হলো এক ধরনের মানসিক প্রশিক্ষণ, যেখানে কোনো বিষয় সম্পর্কে ব্যক্তিকে সঠিক ধারণা দেওয়া হয়। এর ফলে সেসব বিষয় সম্পর্কে রোগীর মনে জন্মানো অযৌক্তিক ধ্যান-ধারণা দূর হয়।

মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিন ক্রয়ের বিশেষ অফার

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleঅনলাইনে পর্নোগ্রাফি ক্ষতি করছে যৌন স্বাস্থ্যের
Next articleসাহায্য চাওয়া দুর্বলতার লক্ষণ নয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here