স্যার, আসসালামু আলাইকুম। আমার বয়স ২২ বছর। আমি একজন ছেলে। আমার সমস্যা হচ্ছে আমি অপরিচিত কারো সাথে কথা বলতে গেলে অথবা আমার থেকে ওপরের লেভেলের কারো সাথে কথা বলতে গেলে বুক প্রচুর ধড়ফড় করে এবং তোতলামি শুরু হয়ে যায়। ক্লাসের প্রেজেন্ট দেয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় বুক ধড়ফড়ের ফলে তোতলামি হয়। কোনো ঘটনা আমার মনের বিরুদ্ধে গেলে আমার প্রচুর অস্বস্তি অনুভূত হয় এবং বুকের মধ্যে অদ্ভূত উত্তেজনা হয়। এর থেকে মুক্তির উপায় কি? সদুপদেশ কামনা করছি।
পরামর্শ দিয়েছেন
অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন
প্রাক্তর বিভাগীয় প্রধান
মানসিক রোগ বিভাগ, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ।
ধন্যবাদ প্রশ্ন করার জন্য। ভয় জন্মগত স্বভাব : ভয় না থাকলে যেমন ক্ষেত্রবিশেষে বিপদাপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে – ঠিক তেমনি অতিরিক্ত ভয় দৈনন্দিন স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করে। ভয় কম-বেশি সবারই আছে, এবং থাকতে হবে। তবে অতিরিক্ত ভয়- যেটা শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে এবং স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করে – সেটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় Phobia বা ভীতি জনিত অসুখ বলে আখ্যায়িত করা হয়। কাজেই বুঝতেই পারছেন আপনি Phobia নামক মানসিক অসুখে ভুগছেন।
চিকিৎসা পদ্ধতি দুইটি : (১) ঔষধ (২) বিহেভিয়ার থেরাপি বা আচরণগত চিকিৎসা। ঔষধ ব্যবহারের জন্য আপনার আরো কিছু বিষয়ে জানার প্রয়োজন ছিল। তারপরও আপনি আপাতত Tab. Escilex 5 mg 1–0–0,Tab. Sentix . 5 mg 0–0–1 & Tab. Indever 20 mg 1–0–1 খেয়ে দেখতে পারেন।
বিহেভিয়ার থেরাপি দুভাবে করতে পারেন : – ঘরে বসে কল্পনায় যে পরিস্থিতিতে ভীত হয়ে পড়েন সেটাকে মোকাবিলা করার প্রাকটিস করা। অর্থাৎ মানসপটে পরিস্থিতিটা কল্পনা করে বাস্তবে মোকাবিলার পদ্ধতি চর্চা করা।
বাস্তবে ভীতিকর পরিস্থিতিকে বেশি বেশি মোকাবিলা করা। সেক্ষেত্রে শারীরিক লক্ষ্মণগুলো অতিরিক্ত মাত্রায় দেখা দিতে পারে, তাই শারীরিক লক্ষ্মণগুলো মোকাবিলা করার জন্য রিলাক্সেশান পদ্ধতি শিখে নিতে হবে -যেমন : লম্বা লম্বা শ্বাস নেওয়া, মনে মনে কোরআন শরীফের কোনো সূরা পড়া, হাতের কাছে কাগজ – কলম থাকলে কিছু লেখালেখি করা বা ছবি আকা,মোবাইলের কোনো অপশনে গিয়ে চিন্তা ভাবনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড অনুসরণ করা।
ভীতিহীনতা যেমন বিপজ্জনক – ভীতিজনিত অসুখও তেমনি ক্ষতিকর। তাই স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য ভয়কে জয় করতে হবে। নিজস্ব পদ্ধতিতে মোকাবিলার চেষ্টা করতে হবে।
সঠিক চিকিৎসার জন্য নিকটস্থ কোনো হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে বা কোনো মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ধন্যবাদ।