লকডাউনের পালা শেষ! শুরু হয়েছে আনলক, অর্থাৎ ধাপে ধাপে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পালা। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে খুলে গেছে অনেক কিছু, দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আরও অনেক কিছু খুলে যাবে। গত দু’ মাসে একটু একটু করে যে বন্দি জীবনটার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে বাধ্য হয়ে উঠছিলাম আমরা সকলেই, এবার তাতে ছেদ পড়তে চলেছে। প্রাথমিক আতঙ্ক কাটিয়ে উঠেছেন মানুষ, যতদিন ওষুধ বা ভ্যাকসিন পাওয়া না যাচ্ছে ততদিন করোনাকে সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে হবে, এমন একটা মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে ক্রমশই।
মাথায় রাখতে হবে, বড়োদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একরকম হলেও বাচ্চাদের বেলায় কিন্তু মোটেই সহজ নয়! একে তো দীর্ঘ দু’মাস ঘরে বন্দি থাকতে থাকতে হাঁফিয়ে উঠেছে বাচ্চারা, আপনার অফিস এ মাসে খুলে গেলেও ওদের স্কুল খুলতে এখনও দেরি! ফলে বাচ্চাদের সামলানো আরও মুশকিল হতে পারে! কীভাবে মোকাবিলা করবেন এই পরিস্থিতির?
প্রথমে নিজে একটা কথা বুঝে নিন। লকডাউন শিথিল হয়ে আনলক পর্যায় শুরু হলেও কোভিড কিন্তু এক্ষুনি বিদায় হবে না! মানে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ফলে বাচ্চাদের সাবধানে রাখতেই হবে। পার্কে বন্ধুদের সঙ্গে হুটোপাটি এখনই চলবে না! বাচ্চাদের এই কথাটা বোঝাতে হবে আপনাদেরই। বাচ্চার সঙ্গে কথা বলুন। ওকে বোঝান, কেন সবার ভালোর জন্য আরও কিছুদিন ঘরে থাকতেই হবে। আপনাকে কেন অফিসে যেতেই হচ্ছে সেটাও ওকে বোঝান। ঠিকমতো বোঝালে বাচ্চারা নিশ্চয়ই বুঝবে!
একদম ছোট বাচ্চাকে নিয়ে বেরোনোর উপরে এখনও কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাড়ির বাইরে বাচ্চাকে নিয়ে না বেরোনোই ভালো! বাচ্চা খুব বায়না করলে বাড়ির ছাদে নিয়ে ঘুরতে পারেন। যদি একান্ত কখনও বেরোতে হয়, তা হলে বাচ্চাকেও ভালো করে মাস্ক পরাবেন, গ্লাভস পরাতেও ভুলবেন না। সে ক্ষেত্রেও বাড়ির সামনাসামনি থাকাই ভালো!
বাইরের খাবার এখনও কিছুদিন চলবে না। বাড়িতে হালকা সুস্বাদু খাবার রান্না করে দিন। খুব মাঝেসাঝে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার আনাতে পারেন, তবে ভালো করে গরম করে নেবেন।
বাচ্চাকে সময় দিন যেমন এই দু’মাস দিয়েছেন। ওর সঙ্গে গল্প করুন, ছবির বই দেখুন, খেলা করুন। ছোটখাটো হাতের কাজ, ম্যাজিকের মতো জিনিস শেখাতে পারেন। তবে সবসময় কিছু একটা শেখানোর চেষ্টা করবেন না। বাচ্চাকে নিজের মতো থাকতে দিন, তবে নজর রাখুন যেন অনেকটা সময় টিভি বা মোবাইলে বুঁদ হয়ে না থাকে। রং পেনসিল, মেকানো সেট এ সব হাতের কাছে রাখুন।
বাচ্চাকে করোনা ভাইরাসের কথা তো নিশ্চয়ই বুঝিয়ে বলেছেন এর মধ্যে! যখন ওদের স্কুল শুরু হয়ে যাবে, তখনও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলতে হবে। সেই ট্রেনিংটা এখন থেকেই শুরু করে দিন। স্কুল শুরু হয়ে গেলে কেমন করে সাবধান থাকতে হবে সেটা ওদের ভালো করে শিখিয়ে দিন! বারবার হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা, বাইরে থেকে এসে পোশাক ছেড়ে স্নান করে নেওয়ার মতো নিয়মগুলো শিখিয়ে দিন। তা হলে বাচ্চাদের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার একটা আগ্রহ তৈরি হবে।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন