আত্মহত্যা প্রতিরোধই প্রধান চিকিৎসা

0
37

ডা. সাদিয়া আফরিনঃ বর্তমান বিশ্বে কিশোর এবং তরুণদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধাণ কারণ হলো আত্মহত্যা, যা দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। আত্মহত্যার পরিকল্পনা বা চেষ্টার প্রবণতা অনেক বেশি এখনকার তরুণ সমাজে এবং এই আত্মহত্যার কারণে মৃত্যুহার কমানোর একমাত্র উপায় হলো একে প্রতিরোধ করা। আত্মহত্যার চিন্তা বা আচরণ (আত্মহত্যার চেষ্টা বা নিজেকে আঘাত/আহত করা) অনেক বেশি দেখা যায় এবং এগুলো আত্মহত্যার ভবিষত নির্দেশক। এমনকি গবেষণা করে দেখা গেছে যে, প্রথমবার কেউ এরকম আচরণ করলে তারাই পরবের্তীতে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকেন। হাসপাতালগুলোতে সেলফ হার্ম বা নিজেকেই নিজে মেরে ফেলার জন্য আঘাত বা আহত রোগীদের সংখ্যা দেখলেই বোঝা যায় আত্মহত্যার প্রবণতা কতখানি বেড়েছে। এর পাশাপাশি যারা ভর্তি থাকেন মনোরোগবিদ্যা বিভাগে তারা হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পরপরই আত্মহত্যা করার ঝুঁকিতে থাকেন সবচেয়ে বেশি। সুতরাং এই দুই বিশেষ গ্রুপের জন্য আত্মহত্যা প্রতিরোধের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া সবচেয়ে বেশি জরুরি। বেশিরভাগ উন্নত বিশ্বেই জাতীয় আত্মহত্যা প্রতিরোধ নীতিমালা আছে এবং বেশিরভাগ নীতিমালাতেই সুপারিশ করা হয়েছে কয়েকটি ধাপে এই প্রতিরোধ নিশ্চিত করা।

যেমন-
১.সমগ্র জনগণের জন্য সার্বজনীন একটা ব্যবস্থা
২.বিশেষ বা সিলেক্টিভ প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকবে তাদের জন্য যারা সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছেন
৩.ইন্ডিকেটেড অ্যাপ্রোচ তাদের জন্য যারা সুনির্দিষ্টভাবে আত্মহত্যা করতে চায়। পরীক্ষিত ইন্টারভেনশন ব্যবস্থা নিতে হবে যা প্রকৃত অর্থেই আত্মহত্যা থেকে তাদের দূরে রাখবে। এই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা বিভিন্ন পর্যায় নিতে হবে যেমন- হাসপাতালে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, কর্মক্ষেত্রে এবং সামগ্রিকভাবে সামাজিক পর্যায়ে। বর্তমানে ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমেও একটা বড়ো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

বিভিন্ন গবেষণা বিশ্লেষণ করে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, ক্লিনিকাল মনোরোগবিদ্যা বিভাগে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের সঠিক চিকিৎসা এবং সাইকো-এডুকেশন প্রদান, স্ক্রিনিং করার মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ দুটির সমন্বয়ে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেকাংশে কমিয়ে ফেলা সম্ভব।

সূত্র: https://www.thelancet.com/journals/eclinm/ article/PIIS2589-5370(18)30041- 5/fulltext?fbclid=IwAR38P_KsDwI- EacUTXIVFqSnplW03uerMJGfOcmbf9z- QUUG_x_92mFleec

লেখাটি মনের খবরের মাসিক প্রিন্ট ম্যাগাজিনের বর্ষ ২, ৫তম সংখ্যা, মে ২০১৯ সালে প্রকাশ হয়েছিল। লেখকের অনুমতিতে পুনঃপ্রকাশ হল। এবং লেখার ভাবনা একান্তই লেখকের নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতিমালার সাথে এর কোন বিরোধ নেই।  

Previous articleমানসিক রোগ চিকিৎসায় কার কী ভূমিকা?
Next articleমনে হয় হার্টের সমস্যা কিন্তু রিপোর্ট ভালো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here