ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক রোগ। ডায়াবেটিসের কারণে মানুষের জীবনযাপনের পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। দীর্ঘমেয়াদে রোগের জটিলতার কারণে রোগীর শারীরিক ও মানসিক নানা স্বাস্থ্য জটিলতা তৈরি হয়। অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েন। কেউ আবার অসুস্থতার ভয়ে রোজা পালন করেন না।
এজন্য পবিত্র রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের শারীরিক মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে চিকিৎসা পরামর্শ ও নির্দেশনা প্রদানে ‘রজব’ মাসকে ডায়বেটিস ও রমজান সচেতনতা মাস হিসেবে ঘোষণা করেছে ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট অ্যান্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশ’ (এসেডবি)।
প্রতিবছর রমজান মাসে ইসলাম ধর্মবলম্বী মুসলিমগণ দিনের বেলা পানাহার বিরতির মাধ্যমে রোজা পালন করে থাকে। এসময় নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে বিভিন্ন অসুস্থায় রোগীরা কিছুটা জটিলতার মুখে পড়েন। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীর অনেক বেশি সমস্যায় পড়েন। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের সচেতনতার জন্য এই ঘোষণা দিয়েছে ডায়াবেটিস রোগ চিকিৎসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এই শীর্ষ সংগঠন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রমজান মাসে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের কারণে অনেকে জটিলতার মুখোমুখি হন। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সুশৃঙ্খল জীবনযাপন খুবই অপরিহার্য। অন্যদিকে রোজা মানুষকে সুশৃঙ্খল হতে সাহায্য করে। সেজন্যই এসেডবির এই উদ্যোগ।
সম্প্রতি রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এই ঘোষণা দেয় ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট অ্যান্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশ’ (এসেডবি)।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের সচিব ডা. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসেডবির সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম সিদ্দিকি ও এসেডবির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, ডায়াবেটিস রোগীদের কথা মাথায় রেখে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এসেডবি, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এসেডবির এই উদ্যোগকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি কর্মসূচি হাতে নেওয়ার কথা জানান তিনি।
অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে রোজার মাধ্যমে একজন মানুষের ইতিবাচক আচরণ ও শারীরিক পরিবর্তন ঘটে। এ ছাড়াও রোজার পাশাপাশি তারাবি পড়লে বাড়তি ব্যায়াম করার প্রয়োজন হয় না। এসেডবির এই ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি সবাইকে পাশে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এসেডবির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফরিদ উদ্দিন জানান, একটি গবেষণায় উঠে এসেছে ৮০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী রোজা রাখেন, এর মধ্যে ৫০ শতাংশেরও বেশি রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই রোজা রাখেন। ফলে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এইজন্য প্রয়োজন সচেতনতা।
/এসএস/মনেরখবর/