খ্যাতিমান শিক্ষক ও চিকিৎসক তিনি। মেডিসিনের ওপর তাঁর রচিত বই বিশ্বের ৫০টিরও অধিক দেশে বহুল পঠিত। পেয়েছেন একুশে পদকসহ দেশ বিদেশে অসংখ্য পুরষ্কার ও সম্মাননা। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ‘মেডিসিন অনুষদ’-এর সম্মানিত ডীন, প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। ১৯৫৪ সালে তিনি জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
মনের খবর পাঠকের মুখোমুখি হয়ে এবার তিনি জানাচ্ছেন তাঁর ইচ্ছের কথা, স্বপ্নের কথা, ভালোলাগা, ভালো থাকার কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মুহাম্মদ মামুন।
মনের খবর : কেমন আছেন স্যার?
এবিএম আব্দুল্লাহ : ভালো আছি।
মনের খবর : ভালো থাকতে কী করেন?
এবিএম আব্দুল্লাহ : যা করি সব তো ভালো থাকা বা নিজেকে ভালো রাখার জন্যই। রোগী দেখি, পড়াশুনা করি, লেখালেখি করি, এসবের মাঝেই ভালো থাকি। নতুনদের উদ্দেশ্যে বলবো ভালো মতো পড়াশুনা করতে, পেশাটাকে উপভোগ করতে এবং ডাক্তার রোগীর সম্পর্ক যাতে ভালো থাকে সেদিকটা খেয়াল রাখতে।
মনের খবর : মন খারাপ হয়?
এবিএম আব্দুল্লাহ : মানুষ মাত্রই মন খারাপ হয়। আমারো হয়। তবে খুব বেশি মন খারাপ আমার হয় না।
মনের খবর : কী কী কারণে বেশি মন খারাপ হয়?
এবিএম আব্দুল্লাহ : বিভিন্ন কারণেই মন খারাপ হয়। যেহেতু ডাক্তারি করি, রোগীর অনেক খারাপ কোনো অসুখ দেখলে মন খারাপ হয়।
মনের খবর : মন ভালো করার জন্য কী করেন?
এবিএম আব্দুল্লাহ : তেমন বিশেষ কিছু করি না। কোনো সমস্যার কারণে মন খারাপ হলে সেটা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করি। আবার সাময়িক মন খারাপ হলে একটু রেস্ট নেই বা অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত হয়ে যাই।
মনের খবর : স্বপ্ন দেখেন?
এবিএম আব্দুল্লাহ : সবাই স্বপ্ন দেখে, আমিও দেখি। মাঝে মাঝে স্বপ্নেও রোগী দেখি।
মনের খবর : ঘুমের স্বপ্নগুলো কেমন?
এবিএম আব্দুল্লাহ : এই দৈনন্দিন কাজগুলোই স্বপ্নে ঘুরে ফিরে আসে।
মনের খবর : জেগে দেখা স্বপ্নগুলো কেমন?
এবিএম আব্দুল্লাহ : নতুন করে এখন আর কোনো স্বপ্ন দেখি না। যা চাওয়ার যা পাওয়ার তার অনেক কিছু তো পেয়েই গেছি। তবে কিছু লেখালেখির অভ্যাস আছে কিছু বই বের করেছি, স্বপ্ন আছে মেডিসিনের উপর আরো কিছু বই লেখার।
মনের খবর : চিকিৎসক না হলে কী হতেন?
এবিএম আব্দুল্লাহ : এটা তো বলা মুশকিল। চিকিৎসক না হলে আমলা হওয়ার ইচ্ছা ছিল। ‘পাওয়ার’ বিষয়টা ভালোই লাগে। পাওয়ারতো শুধু খারাপভাবেই ব্যবহার করা যায় না! ভালো কাজেও ব্যবহার করা সম্ভব।
মনের খবর : ক্ষমতা কী উপভোগ্য?
এবিএম আব্দুল্লাহ : কে কিভাবে ক্ষমতা ব্যবহার করলো তার উপর নির্ভর করে। ক্ষমতার ভালো ব্যবহার মানুষের জন্য কাজ করার পথ তৈরি করে।
মনের খবর : আবার শিশুকালে ফিরে যেতে পারলে কী করতেন?
এবিএম আব্দুল্লাহ : আমাদের সময়ের পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশ তো এক না। আবার ফিরে গেলে সেই দিনও যদি ফিরে আসতো তাহলে ভালো লাগতো।
মনের খবর : ছোটবেলার কোন স্মৃতি বেশি মনে পড়ে?
এবিএম আব্দুল্লাহ : পড়াশুনা করতে ভালো লাগতো না। স্কুলে যেতে ইচ্ছে হতো না। খেলাধুলা করতে ভালো লাগতো। সুযোগ পেলেই ঘুমাতাম, এসবই মনে পড়ে।
মনের খবর : হিংসা আছে?
এবিএম আব্দুল্লাহ : আছে, তবে ক্ষতিকর কোনো হিংসা না। এই যেমন, সে ভালো করছে আমি করতে পারবো না কেন এমন আরকি!
মনের খবর : মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কখনও?
এবিএম আব্দুল্লাহ : না, মানসিক রোগে আক্রান্ত হইনি, তবে বয়স হয়ে গেছে বলেই হয়তো সিরিয়াস কোনো অসুখ দেখলে ভয় লাগে।
মনের খবর : রাগ হয়?
এবিএম আব্দুল্লাহ : হ্যাঁ হয়।
মনের খবর : রাগ নিয়ন্ত্রণ করেন কীভাবে?
এবিএম আব্দুল্লাহ : রাগ হলে চুপচাপ থাকার চেষ্টা করি, তবুও সবসময় নিয়ন্ত্রণ হতে চায় না, মাঝে মাঝে প্রকাশ করে ফেলি।
মনের খবর : দৈনন্দিন কাজের ব্যস্ততায় যে মানসিক চাপ সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে কী করেন?
এবিএম আব্দুল্লাহ : যখন অবসর পাই তখন দৈনিক পত্রিকা বা ম্যাগাজিন পড়ি, টিভিতে খবর দেখি।
মনের খবর : নতুন যারা ডাক্তারি পেশায় এসেছে বা আসতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন কি?
এবিএম আব্দুল্লাহ : নতুনদের উদ্দেশ্যে বলবো ভালো মতো পড়াশুনা করতে, পেশাটাকে উপভোগ করতে এবং ডাক্তার রোগীর সম্পর্ক যাতে ভালো থাকে সেদিকটা খেয়াল রাখতে।
মনের খবর : মনেরখবর পাঠকদের পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ আপনাকে স্যার।
এবিএম আব্দুল্লাহ : ধন্যবাদ মনেরখবর পাঠকদেরও।