প্রতিদিনের চিঠি – আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সেসবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন ‘প্রতিদিনের চিঠি’ বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন। আপনিও লিখতে পারেন আমাদেরকে এই ইমেইলে monerkhaboronline@gmail.com। সেজন্য ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
প্রশ্ন- উত্তর পর্বে দেয়া উত্তরগুলো কেবলমাত্র প্রাথমিক দিকনির্দেশনা। সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের সাথে সরাসরি দেখা করে চিকিৎসা নিতে হবে।
প্রশ্ন- ম্যাম, আমি ঘুমাতে পারি না। আগে রাতে দেরি করে ঘুমাতাম, তাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে পারি না। হাইপার অ্যাওয়ারনেস সমস্যাটা আছে। তবে রাত ১টার দিকে ঠিকই ঘুমিয়ে পড়তাম আর ৯-১০টার দিকে উঠতাম। তখন সমস্যা হত না। কিন্তু বর্তমানে ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি। একজন বলল এটা নাকি স্লিপ কন্ডিশনিং সমস্যা।সমস্যার মূল কারণ, এক খারাপ প্রতিবেশী। সে ঘরের পাশে মুরগির খামার বানিয়ে ভিন্ন জাতের বড় মোরগ পালন শুরু করেছে। সেই মোরগের ডাক শুনতে খুবই অসহনীয় লাগে, আওয়াজ অনেক বেশি — রাত ৩টা থেকে একটানা ১০টা পর্যন্ত ডাকতেই থাকে। প্রতিদিন ঘুমাতে পারতাম না। রাগ, ক্ষোভ আর ঘৃণা চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। একদিন বালিশে মাথা চেপে ঘুমিয়েছিলাম, তখন শব্দটা কিছুটা কম মনে হয়েছিল। সেই থেকেই শুরু হয়েছে ভয়াবহ ঘুমের সমস্যা। এখন আর মাথায় বালিশ না চেপে ঘুমাতে পারি না। কিন্তু বালিশ চেপে ঘুমানোর কারণে ঘুম আর গভীর বা পরিষ্কার হয় না। খুবই সমস্যায় আছি, ম্যাম, দয়া করে হেল্প করুন। আমার বয়স ২২। আমি শান্তপ্রিয় স্বভাবের। হাইপার অ্যাওয়ারনেস আছে।
পরামর্শ – আপনার হাইপার অ্যাওয়ারনেস সমস্যা বলতে কী বুঝিয়েছেন, সেটা স্পষ্ট করলে ভালো হতো।
আপনি দিনের বেলা ঘুমাবেন না। সন্ধ্যা বেলায় চা, কফি, কোল্ড ড্রিংকস খাবেন না। ধূমপায়ী হয়ে থাকলে সন্ধ্যার পর কোনোভাবেই ধূমপান করবেন না। রাতে ঘুমানোর আগে মুখ ও হাত হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। রাতের খাবার ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ২ ঘণ্টা আগে খেয়ে নেবেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হালকা গরম দুধ খেতে পারেন। বিভিন্ন রকম আরামদায়ক নয়েজ ক্যানসেলিং হেডফোন বা ইয়ারপ্লাগ পাওয়া যায় — কিছুদিন সেগুলোর ব্যবহার করতে পারেন। রাতে যত দেরিতেই ঘুমান না কেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় হবে ৭-৮টার মধ্যে। আর এগুলো ২-৩ সপ্তাহ অনুসরণ করার পরও যদি কাজ না হয়, তাহলে ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে — সে ক্ষেত্রে সরাসরি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাবেন।
পরামর্শ দিয়েছেন-
ডা. সৃজনী আহমেদ
সহযোগী অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ
ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ।
আরও দেখুন-