আশাবাদী মানসিকতা জীবনে আসা বিপদ নয় বরং ইতিবাচক দিক গুলির দিকে মনোযোগী হবার মনোবল প্রদান করে। তাই সফলতা আসে এবং জীবনের লক্ষ্য পূরণ হয়।
মনস্তাত্ত্বিকদের মতে, আশাবাদী মনোভাব হল মনের সেই প্রত্যাশা যা একজন ব্যক্তিকে সব সময় ভালো কিছুর জন্য প্রস্তুত করে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতেও নেতিবাচক দিকে মনোযোগী না হয়ে ইতিবাচক দিকে দৃষ্টি স্থির রাখে।
অর্থাৎ, কোন পরিস্থিতি যদি তার অনুকূলে নাও থাকে তবুও সে সেই পরিস্থিতিতে ভালো কিছু করার মতো মানসিকতা ধারণ করতে পারে। আশাবাদের সাথে জীবনে ভালো কিছু হবার আকাঙ্ক্ষা বা আত্মবিশ্বাসও জড়িয়ে থাকে। তাই বলা যায়, জীবনে লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সফলতা প্রাপ্তিতে আশাবাদী মনোভাবের গুরুত্ব অপরিসীম।
আমাদের সামাজিক, মানসিক ও শারীরিকভাবে ভালো থাকা ত্বরান্বিত করতে আশাবাদী মনোভাবের গুরুত্ব যে অনেক সেটি বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে বিস্তৃতভাবে প্রতিষ্ঠিত। এটি ইতিবাচকভাবে উচ্চ আত্মতৃপ্তির মানসিকতার সাথে যুক্ত হয়ে জীবনের বিভিন্ন সময়ে সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন নেতিবাচক এবং মানসিক উদ্বেগ সৃষ্টিকারী পরিস্থিতির বিপরীতে কাজ করে। এছাড়াও আশাবাদী মনোভাবের রয়েছে আরও অনেক রকমের গুণ, ঠিক যেন একের মধ্যে অনেক।
২০১০ সালে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যাদের মাঝে আশাবাদী মনোভাব অনেক দৃঢ় থাকে তারা খেলাধুলায়, প্রাতিষ্ঠানিক কাজে, পেশাগত দক্ষতায় এবং শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্যের দিক থেকে অনেক বেশি সফল হয়। এর কারণ হল এ ধরণের মানুষ তাদের স্বপ্ন এবং লক্ষ্য অর্জনে অনেক বেশি গুরুত্ব প্রদান করে এবং নেতিবাচক সব কিছু এড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার মানসিক দৃঢ়তা তাদের থাকে।
অন্যভাবে বলতে গেলে আশাবাদী ব্যক্তিরা অন্যদের তুলনায় বেশি সফলতা পায় এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয় কারণ তারা তাদের পেশাগত, অর্থনৈতিক, শারীরিক এবং মানসিক উন্নতির বিষয়ে অনেক বেশি আত্মনির্ভরশীল হয়।
এছাড়াও, একজন আশাবাদী ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক অনেক জটিল রোগ নিরাময় ও অন্যান্যদের তুলনায় সহজ হয় কারণ তারা কোন রোগের কাছে হার মেনে নেয়না। তারা তাদের সুস্থতার বিষয়ে অনেক বেশি আশাবাদী থাকে এবং ভয় মুক্ত হয়ে রোগ মুক্তির সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করতে পারে।
অর্থাৎ, আশাবাদী মনোভাব সব ধরণের নেতিবাচক অভিজ্ঞতায় ঘুরে দাঁড়াতে সাহস যোগায় এবং সব কিছু মেনে নিয়েই নতুন উদ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যায়।
একজন মানুষ একটু চেষ্টা করলেই জীবনের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে আশাবাদী মনোভাব ধারণ ও লালন করতে পারে। এজন্য জীবনের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে নিতে হবে এবং সেটি অর্জনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনাও গ্রহণ করতে হবে। জীবনে যত বাধা বিপত্তিই আসুক, এই পরিকল্পিত পথে এগিয়ে যাবার জন্য থাকতে হবে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। মনোবল হারালে চলবে না। সব সময় ভালো কিছুর প্রত্যাশায় জীবনকে পরিচালিত করতে হবে। তাহলেই আশাবাদী হয়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবে।
জীবনে যত সমস্যাই আসুক, আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্যের দিকে দৃষ্টি স্থির রাখতে হবে। সামনে এগিয়ে যেতে হবে দৃঢ় মনোবলের সাথে এবং নিজের স্বপ্ন গুলির প্রতি হতে হবে আরও বেশি স্থির চিত্ত। তাহলেই আশাবাদী মনোভাবকে পুঁজি করে সফলতা অর্জন সম্ভব হবে।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে