মানবতাই জীবনের ধর্ম হওয়া উচিৎ। কিন্তু জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিযোগিতামূলক ধাপ গুলি অনেক সময় আমাদের মনে অন্যের প্রতি হিংসা বিদ্বেষের জন্ম দেয় যা মানবিক গুণাবলীকে কলুষিত করে। তাই এই হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ন্ত্রণে আমাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে।
অন্যরা কি করছে, অন্যরা কি ভাবছে বা অন্যদের কি আছে, এসব নিয়ে যত বেশী আপনি তুলনা করবেন, ততোই আপনার মাঝে হিংসাত্মক মনোভাব বৃদ্ধি পাবে। এই নেতিবাচক অনুভব আমাদের সাফল্যকে যেমন বাঁধাগ্রস্ত করে তেমনি মানুষ হিসেবে আমাদের ধর্মকেও কলুষিত করে। সব সময় আমাদের মনে রাখা উচিৎ যে চাহিদার কোন শেষ নেই। তাই নিজের যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট না থাকলে এই অসীম চাহিদার মাঝে এবং অন্যদের প্রতি হিংসার মায়াজালেই আমাদের সব বিবেক বুদ্ধি লোপ পায়। তাই এই জীবন চলার পথে কিছু কৌশল অবলম্বন করে হিংসা বিদ্বেষকে আমাদের দূরে ঠেলে দিতে হবে। তাতেই প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারবো। নিচে এ ধরণের কিছু কৌশল উল্লেখ করা হল।
১) আপনার হিংসাত্মক মনোভাবকে বিশেষ ভাবে পর্যবেক্ষণ করুনঃ
অনেকের মাঝেই এ ধরণের মনোভাবের প্রতি একটা লজ্জা জনক অনুভূতি তৈরি হয়। তারা এটিকে তাদের চরিত্রের একটি বাজে দিক হিসেবে দেখেন। তারা এটিকে মনের মাঝে চেপে রাখার প্রয়াস করেন। কিন্তু এই ধরণের প্রচেষ্টা অধিকাংশ সময়ই সফল হয়না। বরং বেশ প্রবল মাত্রায় এর বহিঃপ্রকাশ হয়ে যায়। তাই চেপে রাখা কোন সমস্যার সমাধান নয়। বরং যখন আপনি এই অনুভূতির দ্বারা তাড়িত হন তখন সেটিকে পর্যবেক্ষণ করুন। এর অভিজ্ঞতা নিয়ে ভাবুন এবং নিজের মাঝে এর খারাপ দিক গুলো নিয়ে একটা সচেতনতা তৈরি করুন। দেখবেন ধীরে ধীরে এই প্রবণতা কমে আসবে।
২) যাদের নিয়ে আপনার মাঝে হীনমন্যতা তৈরি হয় তাদের সাফল্যকে ইতিবাচক ভাবে নিতে চেষ্টা করুনঃ
অন্যদের সফলতাকে প্রতিযোগিতার বিষয় হিসেবে না দেখে বরং সেটিকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নেবার প্রচেষ্টা করুন। তাদের সফলতা নিয়ে গবেষণা করুন, ভাবুন। তাদেরকে নিচে নামানোর প্রয়াস না করে বরং নিজেকে তাদের পর্যায়ে নিতে চেষ্টা করুন। এতে করে হিংসাত্মক অনুভূতি ধীরে ধীরে অনুপ্রেরণামূলক অনুভূতিতে রূপান্তরিত হবে।
৩) শ্রেষ্ঠ নয়, বরং উত্তম হবার প্রচেষ্টা করুনঃ
জীবনে সফলতা সবার কাম্য এবং সবাই ই সবার থেকে শ্রেষ্ঠ হতে চায়। কিন্তু আমরা এই সফল হওয়া এবং শ্রেষ্ঠত্বের দৌড়ে উত্তম হবার কথা ভুলেই যাই। জীবনকে যদি নিজেকে উত্তম করার একটি কর্ম যজ্ঞ হিসেবে দেখা যায় তাহলে অন্যদের সাফল্য কখনোই প্রতিযোগিতার বিষয় বা হিংসার কারণ হয়ে উঠবেনা।
সর্বত, সফলতা এবং সুখকে গুলিয়ে ফেলবেন না। আপনি সফল হয়েও হয়তো সুখের সন্ধান পেতে ব্যর্থ হতে পারেন। আবার সফল না হয়েও সুখী হতে পারেন। তাই সফলতাকে সুখের কারণ হিসেবে ধরে নিয়ে অন্যদের সাথে বৃথা প্রতিযোগিতায় জড়াবার মানেই হয়না।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে