সম্পর্কে যেমন সঙ্গীর কাছে আমাদের বিভিন্ন চাহিদা থাকে তেমনি আমাদের সঙ্গীরও আমাদের কাছে কিছু চাহিদা থাকে। একে অপরের অনুভূতি এবং চাওয়াপাওয়ার এই সমীকরণের প্রতি সহানুভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে পারলেই সম্পর্কে পূর্ণতা আসে।
দুজন মানুষ যখন দাম্পত্য সম্পর্কে আবদ্ধ হয় তখন একে অপরের ভালো মন্দ, মিল অমিল সব কিছু আপন করে নিয়েই দুজন দুজনার সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবন শুরু করে। একজনের সুসময়ে যেমন অপর জন পাশে থাকে, তেমনি দুঃসময়েও একই ভাবে মানসিক সাপোর্ট প্রদান করে, একে অপরের অনুভূতির মূল্যায়ন করে এবং মত অমতকে সম্মান করে। আর সম্পর্ক ঠিক এমন হলেই পূর্ণতা পায়। ধরুন যদি আপনার কথা বলি, আপনি কি করেন যখন আপনার সঙ্গী একটি খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যায় বা কোন সমস্যায় পড়ে? তার সুবিধা অসুবিধা, সমস্যাকে নিজের সুখ সুবিধার উপরে আসা আঘাত মনে করে বিরক্ত হয়ে পড়েন নাকি তার সমস্যাকে নিজের সমস্যা মনে করে তাকে সেটি কাটিয়ে ওঠার জন্য সহায়তা করেন? যদি আপনার মাঝে সহানুভূতি সৃষ্টি হয় এবং তার মানসিক চাপ ও বিষণ্ণতা আপনাকেও বিচলিত করে তাহলে মনে রাখবেন এই অনুভূতি আপনার এবং আপনার সঙ্গীর সম্পর্ককে সার্থক এবং সফল করতে সহায়তা করবে।
সম্পর্কে একে অপরকে আপন করে নেবার প্রথম সোপান হল একে অপরের অনুভূতিকে আপন করে নেওয়া। সঙ্গীর অনুভূতিকে নিজের করে অনুভব করা। অপর জনের মনকে বোঝার সব থেকে ভালো উপায় হল তার সুখ বা কষ্টের অনুভবকে নিজের মনে করে অনুভব করার প্রচেষ্টা করা। এতে সঙ্গীর প্রতি আমাদের কর্তব্য বোধ এবং সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গি সুসংহত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গীর কোন খারাপ অভিজ্ঞতায় তাকে সান্ত্বনা দেবার থেকে তার সমস্যা বা অনুভূতিকে নিজের মনে করে সেটি অনুভব করার প্রচেষ্টা করা সম্পর্ককে অধিক অর্থপূর্ণ করে। এতে তার মানসিক অবস্থা আরও ভালোভাবে বোঝা যায় এবং তাদের পাশে থেকে সব সমস্যা এক সাথে মোকাবেলা করার প্রয়াস করাও সহজ হয়। আর যে কোন সমস্যা বা পরিস্থিতি যখন একজন ব্যক্তি নিজের হিসেবে বিবেচনা করে তখন সেটি সমাধানে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়াও সহজ হয়। এতে দুজন ব্যক্তির মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। এতে একে অপরের প্রতি বোঝাপড়া আরও ভালো হয় এবং চাহিদা অনুসারে অপর জনের মন মত আচরণ করার সুযোগও সৃষ্টি হয়।
অপর জনের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং সমমনা সম্পন্ন মনোভাব রাখার সব থেকে বড় সুবিধা হল এটি সম্পর্কের মাঝে অযাচিত সমস্যা উৎপন্ন হওয়াকে হ্রাস করে। দুজন মানুষের মধ্যে দূরত্ব তৈরিতে সব থেকে বড় ভূমিকা রাখে পরস্পরের প্রতি ভুল বোঝাবুঝির মতো ঘটনা গুলো যা একে অপরের প্রতি ভুল ধারণা এবং ইচ্ছা অনিচ্ছাকে মূল্য না দেওয়া। আর এর থেকে মুক্তি পাবার এবং দুজনার মাঝে মনস্তাত্ত্বিক বোঝাপড়া বাড়ানোর অন্যতম উপায় সহানুভূতিশীল আচরণ। একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে বরং একে অপরকে অনুকরণ, অনুসরণ এবং একে অপরের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। আর এভাবেই সময়ের সাথে সাথে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং পূর্ণতা পাবে।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে