উপহার এমন একটি বিষয় যা দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ের মনেই পরম আনন্দের সৃষ্টি করে। উপহার দিলে বা পেলে সেটি উভয়ের জন্যই পরম মানসিক সন্তুষ্টির কারণ হয়ে থাকে। তাই মানসিক সন্তুষ্টি বিধানে উপহারের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
উপহার দেওয়া বা পাওয়ার প্রথা বেশ পুরনো আমল থেকেই চলে আসছে। উপহার যিনি পান তার থেকে উপহার যিনি দেন তার জন্য এই সম্পূর্ণ বিষয়টি অধিকতর এবং বিশেষ মাহাত্ম রাখে। উপহার দেবার এই প্রথায় কারও কাছে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখার মতো ভাবনা গুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কোন বিশেষ উপলক্ষে আমরা যখন কাউকে কিছু উপহার দেই তখন সেই উপহার যতবার সে ব্যবহার করবে ততবারই আমাদের কথা স্মরণ করবে। এক্ষেত্রে উপহার দাতার এই উপহার দেবার স্মৃতি এবং তার সাথে উপহার গ্রহীতার সম্পর্ক এবং উভয়ের মানসিক সন্তুষ্টি সব থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। উপহার গ্রহীতার মনেও সেই উপহার পরম আনন্দের অনুভূতি সৃষ্টি করে এবং উপহার দাতার প্রতি তার কৃতজ্ঞতার মনোভাব সৃষ্টি হয় যা এই উপহার প্রথার একটি বিশেষ দিক।
তাছাড়া আমাদের কাছের মানুষদের মন ভালো করতে উপহারের জুড়ি মেলা ভার। যেমন, অনেক সময় আরা অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাছের মানুষকে আমাদের বিভিন্ন আচরণের মাধ্যমে কষ্ট দিয়ে ফেলি এবং সর্বত ভাবে এটা প্রচেষ্টা করি তার মন ভালো করার। আর এই প্রচেষ্টার মাধ্যম হিসেবে তার পছন্দের কোন উপহার হয়ে ওঠে আমাদের সাধন সঙ্গী। আবার, হয়তো কোন কারণে আমাদের কাছের কেউ মন খারাপ করে আছে বা মানসিক চাপের মাঝে আছে। তখন তার মানসিক প্রশান্তি ফিরিয়ে আনতেও আমরা উপহার দিয়ে থাকি। উপহার এই বার্তা প্রদান করে যে, উপহার দাতা উপহার গ্রহীতার প্রতি সংবেদনশীল এবং সহানুভূতিশীল। উপহার এটাও সিদ্ধ করে যে উপহার গ্রহীতা উপহার দাতার নিকট গুরুত্বপূর্ণ এবং তার আবেগের মূল্য উপহার দাতার নিকট সর্বাধিক। এটি উভয়ের মানসিক স্থিতির বিশেষ উন্নতি ঘটায় এবং মানসিক চাপ নিরসন করে।
ব্যক্তি পর্যায় ছাড়াও উপহারের রয়েছে সামাজিক গুরুত্ব। সামাজিক জীবনে নিজেদের সামাজিক মান সম্মান রক্ষার ক্ষেত্রে আমরা উপহার আদান প্রদান করে থাকি। যে কারও শুভ অনুষ্ঠানে বা নিমন্ত্রণ রক্ষায় যে কোন অনুষ্ঠানে আমরা সামাজিকতা রক্ষায় উপহার প্রদান করি। এক্ষেত্রে উপহার আমাদের কৃতজ্ঞতা বোধ প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। আমাদের মনের সন্তুষ্টি প্রকাশে সহায়তা করে। এবং এর ফলে দাতা এবং গ্রহীতার মাঝে মনস্তাত্ত্বিক সেতু বন্ধন রচিত হয়।
উপহার শুধু একে অপরকে নয় অনেক সময় নিজেকেও নিজে উপহার দেওয়া যায়। এটিকে নিজের প্রতি যত্ন নেওয়া এবং নিজের মন ভালো রাখার একটি উপায় হিসেবে দেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে উপহার মন ভালো রাখার পাশাপাশি নতুন কাজে উৎসাহ যোগায়, অনুপ্রেরণা প্রদান করে। মনস্তত্ত্ববিদদের মতে, নিজেকে প্যাম্পার করার এই পদ্ধতি আমাদের মাঝে মানসিক সন্তুষ্টি বৃদ্ধি করে, সম্পূর্ণতার অনুভূতি সৃষ্টি করে।
তাই বলা যায়, উপহার আমাদের মানসিক অবস্থার উপর বিশেষ প্রভাব ফেলে। আর এই প্রভাব প্রায় সব ক্ষেত্রেই ইতিবাচক এবং মজার।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে