বাংলাদেশ-ব্রিটেন মানসিক স্বাস্থ্য গবেষণা কার্যক্রমের উদ্বোধন

0
86
বাংলাদেশ-ব্রিটেন মানসিক স্বাস্থ্য গবেষণা নেটওয়ার্কের উদ্বোধন, প্রধান বক্তা সায়মা ওয়াজেদ

বাংলাদেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ যৌথভাবে নতুন একটি গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে। ব্রিটেনের থিংক ট্যাংক চাটাম হাউজ ও ইমপেরিয়েল লন্ডন কলেজের যৌথ আয়োজনে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রকল্পটি শুরু হয়। সেখানে মূল বক্তা ছিলেন অটিজম বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

‘মন প্রথম’ বা মাইন্ড ফার্স্ট রিসার্চ পার্টনারশিপ নামের এই দ্বিপাক্ষিক যৌথ প্রকল্প বেশ কয়েকটি গবেষণালব্ধ তথ্যকে ভিত্তি করে কাজ করবে। বাংলাদেশের সামগ্রিক চিকিৎসা বা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় কীভাবে আরও সমন্বিত ও কার্যকরভাবে ভূমিকা রাখা সম্ভব, সেটিই এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। প্রকল্পটির নেতৃত্ব দিচ্ছে ইমপেরিয়েল কলেজ।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও মানসিক স্বাস্থ্য খাত বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। ব্রিটেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে কীভাবে সমন্বিত উন্নয়ন সম্ভব; তা নিয়ে অনুষ্ঠানে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন বক্তারা।

ইমপেরিয়েল কলেজের স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক মালা রাও এ প্রকল্পের নেতৃত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, মন প্রথম বা মাইন্ড ফার্স্ট নামের এ দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পকে সফল করতে ব্রিটেন ও বাংলাদেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো একযোগে কাজ করবে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক।’

এ প্রকল্পটি বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের একটি অর্থবহ সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন অধ্যাপক মালা রাও। তিনি বলেন, কোভিড ১৯-এর কারণে এ বছর মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বিশ্বজুড়ে মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে সামনের বছরগুলোতে এ প্রকল্প বড় অবদান রাখবে। বাংলাদেশ এরইমধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে আশাব্যঞ্জক উন্নতি করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশের নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডার, অটিজম ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বর্তমান অবস্থা এবং এ খাতকে এগিয়ে নিতে তার পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি এখন আক্ষরিকভাবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে, যা উপেক্ষা করা যায় না। ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডার অংশ হিসেবে সব দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ইউএইচসি অর্জনের অঙ্গীকার করেছে। মানসিক স্বাস্থ্য ছাড়া কোনও স্বাস্থ্য হতে পারে না, আর স্বাস্থ্য না থাকলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হয় না।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যা ট্রন ডিক্সন বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বিশ্বজুড়ে অবহেলিত অথচ খুব জরুরি। করোনাকাল মানসিক স্বাস্থ্যের দিক থেকে মানুষের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ব্রিটেন-বাংলাদেশের যৌথ প্রকল্প বাংলাদেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় সমন্বিত ও প্রায়োগিক ভূমিকা রাখবে বলে আশার প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দিয়েছেন ইনোভেশন ফর ওয়েলবিয়িং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মনিরা রহমান, সামিনি জেনি, স্টিফেইন আর্মস্টং।

উল্লেখ্য, ইউকে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশনের (ইউকে আরআই) গ্লোবাল চ্যালেঞ্জেস রিসার্চ ফান্ড এ প্রকল্পের অর্থায়ন করছে। বাংলাদেশের আইসিসিডিআর,বি, ইনোভেশন ফর ওয়েলবিয়িং ফাউন্ডেশন, জেপিজিএসপিএইচ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ব্রিটেনের চাটাম হাউজ, ইস্ট লন্ডন এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট ও ইউনিভার্সিটি অফ লিংকন এই যৌথ প্রকল্পে কাজ করবে।

 

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

 

Previous articleবিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস আজ
Next articleবিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস: প্রাসঙ্গিক ভাবনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here