শারীরিক পরিশ্রমে মানসিক উন্নতি

0
68
শারীরিক পরিশ্রমে মানসিক উন্নতি
গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রাত্যহিক ব্যায়ামের অভ্যাস বিষণ্ণতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা সহ সব রকমের মানসিক সমস্যা কমায় এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে।

করোনা মুক্ত থাকতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং ঘরে থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। স্বাভাবিক জীবন থেকে দূরে থাকায় সব মানুষই ভীষণ রকম মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা, অবসাদ ইত্যাদি নানা ধরণের মানসিক সমস্যায় ভুগছে যা অনেকের মানসিক স্বাস্থ্যের চরম ক্ষতি সাধন করছে। এমনকি এসব সমস্যা অনেকের মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতাও বাড়িয়ে দিচ্ছে। ঘরের বাইরে না যেতে পারার জন্য আমাদের শারীরিক পরিশ্রমের মাত্রাও কমে গেছে। এতে আমাদের ঘুম, সারা দিনের কাজ কর্ম, চিন্তাভাবনা সব কিছুর উপরই এর দুস্প্রভাব পড়ছে।

প্রতি দিনের শারীরিক কসরত বা শারীরিক ব্যায়াম আমাদের মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী থাকার একটি অন্যতম প্রধান উপায়। এই শারীরিক ব্যায়ামের মধ্যে আমাদের হাঁটা চলা, দৈনন্দিন কাজের জন্য আমাদের চিন্তা ভাবনা সহ অন্যান্য কাজ গুলোও পড়ে। প্রাত্যহিক এসব কাজ আমাদের শরীর ও মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমাদের আবেগ, চিন্তাশক্তি, মানসিক অবস্থা , শারীরিক সুস্থতা সব কিছুর মধ্যে সামাঞ্জস্য বিধান করে। কিন্তু এই সময়ে এগুলো চরম ভাবে ব্যহত হওয়ায় আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা চরম চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা কাজ করছিনা, সারা দিন খেয়ে এবং ঘুমিয়েই সময় কাটাচ্ছি। আমাদের চিন্তা শক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় করোনা আতঙ্ক সারাক্ষণ আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা বহু দিন ধরে এই একই জীবন ব্যবস্থায় যেন হাপিয়ে উঠেছি। মানসিক অবসাদ আমাদের ঘিরে ধরেছে। আর এসব কিছুর প্রধান কারণ আমাদের দৈনন্দিন এই কর্মশূন্য অবস্থা। এই অস্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারে প্রাত্যহিক শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম।

সব সময় শারীরিক কসরত করতে বাইরেই যেতে হবে এমন কোন কথা নেই। আমাদের অনেকের মাঝেই এই ভুল ধারণা আছে যে, লকডাউনে আমরা জিম যেতে পারছিনা, অতএব আমাদের ব্যায়াম করার ও কোন সুযোগ নেই। এটি অত্যন্ত ভুল একটি ধারণা। আমরা আমাদের প্রাত্যহিক কাজ কর্মের মধ্য দিয়েই প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করে নিতে পারি। যারা বাইরে হাঁটতে যেতেন তারা নিয়ম করে ঘরের মধ্য দিয়েই প্রতি দিন হাঁটতে পারেন। তাছাড়া বিভিন্ন শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন কাজ যেমন, বাসাবাড়ির কাজ, ঘর গোছানো, গাছ পালার যত্ন নেওয়া, পশু পালন ইত্যাদি করতে পারেন। এতেও শরীরে প্রয়োজনীয় পরিশ্রমের অভাব লাঘব হবে। জিমে গিয়ে বা ব্যায়ামাগারে গিয়ে আপনি যে সুবিধা পেতেন, বাড়িতে থেকে এই কাজগুলো করার মধ্য দিয়েও আপনি সেই একই সুবিধা পাবেন। আপনার শরীর ও মন সুস্থ থাকবে এবং আপনি থাকবেন ফিট।

এক যায়গায় সুয়ে বসে না থেকে এমন কাজ করুন যা আপনার শরীরকে সচল রাখবে। প্রতি দিন নিয়ম করে সেসব কাজ করুন। খেয়াল রাখুন যেন মহামারীর আতঙ্ক থেকে আপনার মনোযোগ দৈনন্দিন এসব আনন্দদায়ক এবং প্রয়োজনীয় কাজের দিকে থাকে। এতে করে আপনার দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, উদ্বিগ্নতা সহ অন্যান্য মানসিক সমস্যা গুলো হ্রাস পাবে এবং আপনার সামনে মানসিক ও শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার যে লক্ষ্য রয়েছে সেটি আপনি অবশ্যই পূরণ করতে পারবেন।

সূত্র: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/consciousness-matters/202009/move-your-body-boost-your-mood

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleতিনবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম
Next articleশিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের সহায়ক কৌশল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here