আত্মবিশ্বাস শুধু একটি শব্দ নয়। এটি একটি শক্তি যা আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। শুধু ধৈর্য আর শ্রমের মাধ্যমে জীবনে অভিষ্ট্য লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয় না। আর তখনই প্রয়োজন হয় আত্মবিশ্বাসের।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ মানুষেরই আত্মবিশ্বাসের ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে। এটি প্রতিদিন কমবেশি হয়ে থাকে। এমনকি কারো কারো ঘণ্টায় ঘণ্টায়ও বদলে যায় আত্মবিশ্বাসের মাত্রা। তাই আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর কিছু সহজ উপায় আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা।
১. ইতিবাচক শপথ
মনের মাঝে বয়ে চলা সব নেতিবাচক চিন্তা দূর করে তার বদলে ইতিবাচক চিন্তা জাগিয়ে তুলুন। সর্বদা মনে রাখতে হবে, আপনি যা চিন্তা করছেন আপনি তাই। কিন্তু অনেকেই আবার বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন, যা মানুষকে আলসে করে দিতে পারে। এ কারণে মনের মাঝে সঠিকভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ‘আমি সফল হব’ এমন চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। তার বদলে ‘আমি সাফল্য না পাওয়া পর্যন্ত চেষ্টা করে যাব’ শপথই সবচেয়ে ভালো।
২. ভালো বিষয়গুলো জেনে রাখুন
আপনি হয়ত বিশ্বের সব বিষয় ভালোভাবে জানেন না। কিন্তু এমন কিছু বিষয় নিশ্চয়ই আছে, যা আপনার একেবারে নখদর্পণে। আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য সে বিষয়গুলোতেই জোর দিন। নিজের ওই গুণ কিভাবে আরও মানুষের মাঝে পৌঁছানো যায়, দায়িত্বশীল ও বড় ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া যায় সেজন্য চেষ্টা করুন।
৩. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমেই আপনার দিন শুরু করুন। খুব ছোটখাটো বিষয়েও আপনি আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারেন (যেমন এটা হতে পারে ছোট কোনো উপহার, কিংবা কারো প্রশংসা)। আপনি যদি দিনের শুরুতেই এসব বিষয় আপনার দৃষ্টিভঙ্গীতে প্রবেশ করাতে পারেন, তাহলে তা নিঃসন্দেহে আপনার সারা দিনের কার্যক্রমে ভালো প্রভাব ফেলবে। সেই সাথে আপনার মনে হবে, দিনটি আপনার ভালই যাবে। বাস্তবেও তাই ঘটে থাকে।
৪. উত্থান-পতনের জন্য প্রস্তুত থাকুন
কাজে ব্যর্থতাই আমাদের আত্নবিশ্বাস নষ্ট করার জন্য দায়ী। সেক্ষেত্রে হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। আবারও নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করুন। কারণ একটি কাজে যখন আমরা ব্যর্থ হয় তখন একটু চিন্তা করলেই আমরা আমাদের ব্যর্থতার কারণগুলো খুব ভালভাবে ধরতে পারি। আর ব্যর্থতাগুলো থেকেই আমরা আমাদের জীবনকে ভালভাবে বোঝার শিক্ষা নিতে পারি। জীবনে যত বেশি উত্থান-পতন ঘটবে, মনে রাখবেন, আপনার লক্ষ্য ততই নিকটে। আর এতে করে আপনার আত্মবিশ্বাস আবারও নতুন করে গড়ে উঠবে।
৫. অন্যের সামনে নিজের সমালোচনা নয়
নিজের দোষ অন্যের কাছে প্রকাশ করার কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। এতে এক পর্যায়ে অন্যরা আপনার প্রতি বিশ্বাস হারাতে পারে। নিজের প্রতি হতাশায় অনেকেই আত্মবিশ্বাস নষ্ট করেন। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, নিজের সমস্যা নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সেটি নিজেকে সংশোধনের জন্য। এটি যেন কোনোক্রমেই হতাশায় পর্যবসিত না হয়।
৬. সামান্য গড়মিল থাকলেও এগিয়ে চলুন
কোনো কাজ করতে গেলে সব যোগ্যতাই যে আপনার মাঝে থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বরং নিজের দক্ষতা আর আত্নবিশ্বাসের জোরেই যে কোনো কাজে সফলতা লাভ করা যায়। কাজেই আপনার কোনো যোগ্যতা কম থাকলেও আত্নবিশ্বাসের জোরেই এগিয়ে যান। দেখবেন, সফলতা আপনার হাতে এসে ধরা দিবেই।
৭. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও অনুশীলন করুন
পর্যাপ্ত ঘুম, অনুশীলন ও পর্যাপ্ত পুষ্টিসম্পন্ন খাবার আপনার মন ভালো করবে। একইসাথে আপনার কর্মক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাসকেও বাড়িয়ে তুলবে। আবার প্রতি সপ্তাহে তিনবার মাত্র ২০ মিনিটের শারীরিক অনুশীলন আপনাকে শুধু বিষণ্ণতা থেকেই মুক্তি দিবে না, বরং অ্যালঝেইমার্সের মতো রোগ থেকে দূরে রাখবে।
৮. নিজের মূল্য জানুন
আপনার নিজের যে গুণগুলো রয়েছে, সেগুলো ভুলে গেলে চলবে না। নিজেকে কোনোভাবেই মূল্যহীন মনে করবেন না। প্রয়োজনে আপনার নিজের মূল্য বিষয়ে একটি প্যারাগ্রাফ লিখুন এবং তা মাঝে মাঝে পড়ুন।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন